সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কেনো আমি গান্ধীকে ঘৃণা করি ?



কেনো আমি গান্ধীকে ঘৃণা করি ?




মানুষ মূল্যায়িত হয় তার কথা ও কাজের গুনেই। তাই গান্ধী যা করে গেছে এবং বলে গেছে, সেই মতোই তাকে মূল্যায়ন করতে হবে। এই পোস্টে আমি তার সেই মূল্যায়ন করবো এবং এই পোস্ট পড়া শেষে আপনারাও নিশ্চয় বুঝতে পারবেন যে শুধু আমি নই, এখন কোটি কোটি মানুষ কেনো গান্ধীকে ঘৃণা করছে ?

শুরুতেই নজর দেওয়া যাক গান্ধীর শিক্ষা-দীক্ষায়। ছোটবেলা থেকেই শুনতাম গান্ধী ব্যারিস্টার, ভাবতাম নিশ্চয় অনেক শিক্ষিত, অনেক জ্ঞানী। কিন্তু পরে যা জেনেছি, তা জেনে শুধু আমিই অবাক হই নি, জানলে অবাক হবেন আপনারাও। গান্ধী তার সমগ্র জীবনে মাত্র একটি সার্টিফিকেট অর্জন করতে পেরেছিলো, আর তা হলো ম্যাট্রিক পাসের সার্টিফিকেট, ১৮৮৭ সালে গান্ধী টেনে টুনে কোনোভাবে থার্ড ডিভিশনে ম্যাট্রিক পাশ করে, তার প্রা্প্ত নম্বর ছিলো ২৪৭ আউট অফ ৬০০। এখন ব্যারিস্টারি রহস্যের কথা শুনুন, তখনকার দিনে ব্যারিস্টার হতে গেলে কোনো পরীক্ষা দিতে হতো না, কিছুদিন কোনো বয়স্ক বা অভিজ্ঞ ব্যারিস্টারের সহকারী হিসেবে কাজ করলেই ব্যারিস্টার হিসেবে বার এসোসিয়েসনের সদস্য হওয়া যেতো। কিন্তু এই সহকারী হওয়ার জন্যও গান্ধীর ভারতীয় সার্টিফিকেট এবং তার ফলাফল গ্রহনযোগ্য বলে বিবেচিত হয় নি, তাই গান্ধীকে আবারও লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাট্রিক পরীক্ষায় বসতে হয়। প্রথম বার ফেল করে দ্বিতীয় বার কোনোমতে গান্ধী সে পরীক্ষায় পাশ করে এবং ব্যারিস্টারের সহকারী হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে। আগের দিনের অনেক মানুষেরই প্রথাগত শিক্ষা খুব বেশি ছিলো না, যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর; কিন্তু তারা ছিলো স্বশিক্ষায় শিক্ষিত, কিন্তু গান্ধীর কথা ও আচরণে এটাও স্পষ্ট হয় যে তার মধ্যে সেই স্বশিক্ষাও ছিলো না। কারণ, গান্ধীর বেশির ভাগ কথা বার্তা ই ছিলো ননসেন্স। পুরো পোস্ট পড়ার পর, আপনারা আমার এই কথার মর্ম বুঝতে পারবেন।


গান্ধী, হিন্দুদের প্রাণের গ্রন্থ গীতা সম্পর্কে তার অনাশক্তি যোগগ্রন্থের ভূমিকায় লিখেছে, “গীতার বর্ণিত যুদ্ধ কোনো বাস্তব যুদ্ধ নয়, পরন্তু ভৌতিক যুদ্ধ বর্ণনের রূপকের মাধ্যমে প্রত্যেক মানুষের হৃদয়ে যে দ্বন্দ্বযুদ্ধ নিরন্তর চলিতেছে, ইহাতে তাহাই বর্ণিত হইয়াছে। রসস্থিত যুদ্ধকে রসপূর্ণ আকার দেওয়া হইয়াছে।এর সরল মানে হলো, মহভারতের যুদ্ধ কোনো বাস্তব ঘটনা নয়, মানুষের মনে শুভ অশুভ শক্তির মধ্যে যে অবিরাম যুদ্ধ চলছে এটা তার রূপক মাত্র।


গান্ধী, তার গীতাবোধগ্রন্থের প্রস্তাবনায় আরো বলেছে, “মহাভারতকে ঐতিহাসিক গ্রন্থ বলিয়া ধরা হয়, কিন্তু আমার কাছে মহাভারত ও রামায়ণ ঐতিহাসিক কোনো গ্রন্থ নয়। ইহারা ধর্মগ্রন্থ। আর যদি ইতিহাস বল, তবে উহারা আত্মার ইতিহাস। হাজার হাজার বৎসর পূর্বে কী হইয়াছিলো তাহার বর্ণনা উহাতে নাই, পরন্তু আজ প্রত্যেক মানুষের অন্তরে যাহা চলিতেছে, উহা তাহারই প্রতিচ্ছবি।


হিন্দু ধর্মের প্রাণপুরুষ শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে গান্ধী বলেছে, “গীতার কৃষ্ণ মূর্তিমস্ত শুদ্ধ পূর্ণজ্ঞান, কিন্তু কাল্পনিক। ইহাতে কৃষ্ণ নামক অবতার পুরুষকে অস্বীকার করা হইতেছে না। মাত্র বলা হইতেছে পূর্ণকৃষ্ণ কাল্পনিক। পূর্ণ অবতারের কল্পনা পরে আরোপিত হইয়াছে।


এই হলো হিন্দুধর্ম সম্পর্কে গান্ধীর জ্ঞান বা ধারণা, এখন আপনিই বলেন- এ শ্রদ্ধার যোগ্য, না ঘৃনার যোগ্য ?


গান্ধী বলতো, “একজন সত্যাগ্রহী সব সময় আক্রমনকারীর দ্বারা নিহত হবার কামনা করবে, কিন্তু কাউকে হত্যা করার কামনা করবে না।এটা কি কোনো মানুষের কথা হতে পারে ? পৃথিবীর একটি ছোট্ট বা ক্ষুদ্র প্রাণীও তো তার আত্মরক্ষার জন্য যুদ্ধ করে এবং টিকে থাকার চেষ্টা করে। গান্ধীর এই নীতির ফলে ভারত ভাগের আগে ও পরে, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে যে লক্ষ লক্ষ হিন্দু, হত্যার শিকার হয়েছে, তা রোধ করার জন্য গান্ধী তো কোনো পদক্ষেপ নেয় ই নি, উপরন্তু হিন্দুদেরকে মরতে সে উৎসাহিত করেছে; পুরো পোস্ট পড়তে পড়তে আপনারা এর বহু প্রমান পাবেন।


বসন্তের টিকা দেওয়াকে গান্ধী পাপ বলে মনে করতো। এর মূল কারণ হলো, গান্ধী ছিলো পাশ্চাত্য চিকিৎসার পদ্ধতির বিরোধী; কারণ, সে ইনজেকশন দেওয়া্ ও অপারেশন করাকে হিংসা বলে মনে করতো। ১৯৪৬ সালে গান্ধীর স্ত্রী কস্তরবার ম্যালেরিয়া হয় এবং ডাক্তার তাকে পেনিসিলিন ইনজেকশন দেবার কথা বলে। সেই মত বৃটিশ সরকার তার জন্য লন্ডন থেকে পেনিসিলিন ইনজেকশন নিয়ে আসে। কিন্তু গান্ধী হিংসার নাম করে তা প্রয়োগ করতে বাধা দেয়। ফলে গান্ধীর স্ত্রী মারা যায়। অথচ ১৯২২ সালে কারাবাসের সময় গান্ধীর খুব আমাশা হয় এবং ডাক্তার তাকে নিয়মিত ইনজেকশন করে সুস্থ করে তোলে এরপর গান্ধীর এ্যাপেনডিসাইটিস হয়, গান্ধী সেই অপারেশনও করায়।গান্ধী ছিলো এমনই ভণ্ড।


গান্ধী আরো মনে করতো, উচ্চ বর্ণের লোকেরা নিম্নবর্ণের লোকেদের ঘৃণা করে যে পাপ করে তার ফলে ভূমিকম্প হয়; এই অপদার্থটা ছিলো এমনই কুসংস্কারাচ্ছন্ন। নেতাজী বলেছেন, “বৃটিশের নির্দেশে গান্ধী যখনই কোনো আন্দোলন তুলে নিতেন, তখনই তিনি নিজের শয়তানিকে চাপা দেওয়ার জন্য বা দেশের মানুষের দৃষ্টিকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য অনশন শুরু করতেন।কারণ গান্ধীর সকল প্রকার অনশন ও কারাবাস ছিলো বৃটিশদের পরিকল্পনার অংশ।


ড. আম্বেদকরের মতে, গান্ধী ছিলো শক্তের ভক্ত নরমের যম। দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকাকালে একবার গান্ধী হিন্দু, খ্রিষ্টান ও ইসলামের মধ্যে তুলনা করে একটি বক্তৃতা দেয়, সেই বক্তব্যে মুসলমানরা ক্ষুব্ধ হয় এবং ১৯০৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি, কয়েকজন মুসলমান তার উপর হামলা করে এবং আচ্ছা মতো মার দেয়। এরপর থেকেই গান্ধী মুসলমানদের সর্বপ্রকার সমালোচনা করা বন্ধ করে দেয় এবং তারপর থেকে সে মুসলমানদের অত্যন্ত গর্হিত অপরাধকেও সে আর অপরাধ বলেই মনে করতো না।


১৯৩৯ সালের নভেম্বর মাসে সিন্ধু প্রদেশের মুসলমানরা হিন্দুদের উপর আক্রমন চালায়। গান্ধী আক্রান্ত হিন্দুদেরকে অহিংসা করতে বলে এবং আক্রমনকারী মুসলমানদের ব্যাপারে চুপ থাকে। একসময় গান্ধী, বঙ্কিমচন্দ্রের বন্দেমাতরম গানের খুব ভক্ত ছিলো এবং এর প্রশংসা করে সে লিখেছিলো, “এর আবেদন অনেক মহৎ এবং অন্যান্য দেশের জাতীয় সঙ্গীতের তুলনায় তা শুনতেও অনেক সুমধুর। অনেক দেশের জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যে অন্যান্য দেশকে কটাক্ষ করা হয় এবং নিন্দাসূচক বাক্য ব্যবহার কর হয়। কিন্তু বন্দেমাতরম এই সব দোষ থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত। এর একমাত্র উদ্দেশ্য আমাদের মধ্যে দেশাত্মবোধ জাগ্রত করা।কিন্তু পরবর্তীকালে গান্ধী যখন বুঝতে পারে যে, মুসলমানরা এই গান পছন্দ করে না, তখন সে বন্দেমাতরম গাওয়া ও আবৃত্তি করা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয় এবং তার আপত্তির কারণেই বন্দেমাতরমভারতের জাতীয় সঙ্গীত হতে পারে নি।


১৯৩১ সালে কংগ্রেস কমিটি ভারতের জাতীয় পতাকা গেরুয়া করার প্রস্তাব দেয়, কিন্তু গান্ধীর ইচ্ছায় তা হয় তিরঙ্গা । তারপরও গান্ধী পরে ভারতের এই জাতীয় পতাকাকেও সেভাবে সম্মান দেয় নি, কারণ গান্ধী বুঝতে পেরেছিলো যে, এই পতাকা মুসলমানরা পছন্দ করে না। এ ব্যাপারে একটি ঘটনা, নাথুরা গডসে, তার গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন এইভাবে, “১৯৪৬ সালে কলকতা ও নোয়াখালিতে হিন্দুদের গণহত্যার ঠিক পরে গান্ধী যখন নোয়াখালি ও ত্রিপুরা ভ্রমন করছিলো, তখন নোয়াখালিতে তার সাময়িক বাসগৃহের মাথায় স্থানীয় কংগ্রেস কর্মীরা তিরঙ্গা পতাকা লাগিয়ে দিয়েছিলো। কিন্ত যেই মাত্র একজন সামান্য পথচারী মুসলমান গান্ধীর সাথে দেখা করে ওই পতাকার ব্যাপারে আপত্তি জানায়, গান্ধী তৎক্ষণাৎ তা নামিয়ে ফেলার হুকুম দেয়। লক্ষ লক্ষ কংগ্রেস কর্মীর শ্রদ্ধার কেন্দ্র বিন্দু যে জাতীয় পতাকা, সেই পতাকাকে এক মিনিটের মধ্যে গান্ধী অপমানিত ও লাঞ্ছিত করে, কারণ একজন অশিক্ষিত গ্রাম্য মুসলমান তাতে খুশি হবে।


হিন্দুদের চাপে, নেহেরু, সরকার গঠনের পরেই সোমনাথ মন্দির পুননির্মানের সিদ্ধান্ত নেয় ; অথচ মন্ত্রীসভার সদস্য না হয়েও গান্ধী নেহেরুকে এই সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করে। নেহেরুর উপর গান্ধীর এই প্রভাব ছিলো, যেহেতু সর্দার প্যাটেল, অধিকাংশের সমর্থনে প্রথম প্রধা্ন মন্ত্রী নির্বাচিত হওয়া সত্ত্বেও, গান্ধী তার নিজের ক্ষমতা বলে নেহেরুকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলো। অন্যদিকে, একই সময়ে ১৩ই জানুয়ারী, ১৯৪৮ এ অনশন করে গান্ধী দিল্লীর মসজিদ পুননির্মান করে দিতে সরকারকে বাধ্য করে।


গান্ধী প্রথমে হিন্দি ভাষারও খুব ভক্ত ছিলো এবং সে বলতো যে, হিন্দি ভাষাই সর্বভারতীয় ভাষা হবার উপযুক্ত। কিন্তু পরে মুসলমানদের খুশি করার জন্য সে হিন্দুস্থানীনামের আড়ালে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবী করেছিলো।


ইংরেজদের বিরোধিতা করে সন্ত্রাসমূলক কাজ করার জন্য বৃটিশ সরকার- ভগত সিং, রাজগুরু ও শুকদেব এর মৃত্যুদণ্ড দেয়। কিন্তু সারা ভারতের লোকজন চেয়েছিল গান্ধী হস্তক্ষেপ করে এদের মৃত্যুদণ্ড রোধ করুক, কিন্তু গান্ধী তা না করার জন্য জেদ ধরে থাকে এবং বলে, “ওরা পথভ্রষ্ট, ওদের পথ হিংসার।শুধু তাই নয়, মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলো বলে- রাণা প্রতাপ, গুরু গোবিন্দ সিং, রাজা রণজিত সিংহ ও রাজা শিবাজীর নিন্দা করে গান্ধী বলেছিলো, “তারা ছিলেন লক্ষ্যভ্রষ্ট দেশপ্রেমিক।এই মন্তব্যের ফলে শিবাজীর ভক্ত মারাঠারা বেশ ক্ষেপে গিয়েছিলো পরে গান্ধীর হয়ে নেহেরু ক্ষমা চেয়ে তাদেরকে শান্ত করে।


স্বামী শ্রদ্ধানন্দ ছিলেন আর্য সমাজএর একজন প্রচারক এবং তিনি ধর্মান্তরিত ভারতীয় হিন্দুদেরকে পুনরায় হিন্দুধর্মে ফিরিয়ে আনার জন্য একটি শুদ্ধিযজ্ঞ চালু করেছিলেন। কিন্তু তার এই প্রচেষ্টার জন্য তিনি মুসলমানদের বিরাগভাজন হন। একটি ঘটনায়, এক মুসলিম মহিলা তার দুই সন্তানসহ স্বামী শ্রদ্ধানন্দের শরণাপন্ন হয় এবং তাদেরকে হিন্দুধর্মে ফিরিয়ে আনতে বলে। কিন্তু মহিলাটির স্বামী এই অভিযোগে আদালতে মামলা করে যে, শ্রদ্ধানন্দ তার স্ত্রী সন্তানকে অপহরণ করেছে। কিন্তু আদালত তার এই মামলা খারিজ করে শ্রদ্ধানন্দকে মুক্তি দেয়। এর ফলে মুসলিমরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং কয়েকদিনের মধ্যেই ঐ মহিলার স্বামী আবদুল রসিদ শ্রদ্ধানন্দকে হত্যা করে, এই হত্যাকাণ্ড ঘটে ১৯২৬ সালের ২৩ ডিসেম্বর।


এই হত্যাকাণ্ডের কয়েকদিন পরেই আসামের গৌহাটিতে জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশন শুরু হয়। শ্রদ্ধানন্দের মৃত্যুতে পরিবেশ খুবই শোকাহত ছিলো। কিন্তু গান্ধী বক্তৃতা করতে উঠেই সেই খুনীকে ভাই আব্দুল রসিদবলে সম্বোধন করে বক্তৃতা শুরু করে, উপস্থিত সবাই তো বিস্ময়ে হতবাক। কিন্তু সেসবের কোনো তোয়াক্কা না করে গান্ধী তার বক্তৃতা চালিয়ে যেতে থাকে এবং বলে, এখন হয়তো আপনারা বুঝতে পারছেন যে, কেনো আমি আব্দুল রসিদকে ভাই আব্দুল রসিদবলেছি এবং আমি বারবার ঐ কথাই বলবো। আমি একথাও বলবো না যে, আব্দুল রসিদ স্বামী শ্রদ্ধানন্দকে খুন করার অপরাধে অপরাধী। প্রকৃত অপরাধী হলো তারা, যারা মানুষের মনে ঘৃণা জাগিয়ে তোলে।এর মাধ্যমে গান্ধী বুঝিয়ে দেয় যে স্বামী শ্রদ্ধানন্দ নিজেই তার মৃত্যুর জন্য দায়ী। এরপর শ্রদ্ধানন্দের শোকবার্তায় গান্ধী লিখে, স্বামী শ্রদ্ধানন্দ সম্পর্কে আমি একটি কথা ই বলবো যে, তিনি বীরের জীবন যাপন করেছেন এবং বীরের মৃত্যু বরণ করেছেন।এর মাধ্যমে গান্ধী বোঝালো যে, কোনো মুসলমানের হাতে কোনো হিন্দু খুন হলে হিন্দুদের উচিত সেই মৃত্যুকে বীরের মত মৃত্যুবরণ বলে মনে করা।


গান্ধীর এই নীতি, পরবর্তীতে হিন্দুদের জীবন যে কিভাবে বিষময় করে তুলেছিলো সেটা বুঝতে পারবেন, দেশভাগের পূর্ব ও পরের আরো কয়েকটি ঘটনা জানলে,
দেশ ভাগের কয়েক মাস আগে থেকে যখন পশ্চিম পাঞ্জাবের হিন্দুরা উদ্বাস্তু হয়ে পূর্ব পাঞ্জাবে ও দিল্লিতে আসতে শুরু করে, তখন গান্ধী সেই সব বিপন্ন হিন্দুদের উদ্দেশ্যে ১৯৪৭ সালের ৬ এপ্রিল এক ভাষণে বলে, “মুসলমানরা যদি হিন্দুদের অস্তিত্বকেও বিপন্ন করে তোলে, তবুও হিন্দুদের কখনোই উচিত হবে না মুসলমানদের প্রতি ক্রোধ প্রকাশ করা। যদি তারা আমাদের সবাইকে তরোয়াল দিয়ে কেটে ফেলে, তবে আমাদের উচিত হবে বীরের মতো সেই মৃত্যুকে বরণ করা।আমাদের জন্ম মৃত্যু তো ভাগ্যের লিখন, তাই এ ব্যাপারে এত মন খারাপের কী আছে ?”


১৯৪৬ সালের ২৩ নভেম্বরের এক ভাষণে গন্ধী আরো বলে, “রাওয়াল পিণ্ডি থেকে যেসব লোকেরা পালিয়ে এসেছে, তাদের মধ্যে কিছু লোক আমার সাথে দেখা করে জিজ্ঞেস করলো, যে সমস্ত হিন্দু এখনও পাকিস্তানে পড়ে রয়েছে, তাদের কী হবে ? আমি তাদেরকে প্রশ্ন করলাম, তোমরা কেনো দিল্লিতে চলে এসেছো ? কেনো তোমরা সেখানে মরে গেলে না ? আমি এখনও বিশ্বাস করি যে, আমরা যেখানে বসবাস করছি, সে স্থান আমাদের কখনো ত্যাগ করা উচিত নয়। এমনকি সেখানকার লোকেদের কাছ থেকে নিষ্ঠুর ব্যবহার পেলে বা মৃত্যু নিশ্চিত হলেও না। যদি সেই লোকেরা আমাদেরকে হত্যা করে, তবে যাও, মুখে ভগবানের নাম নিতে নিতে তাদের হাতে বীরের মৃত্যু বরণ করো। যদি আমাদের লোকেদের হত্যা করা হয়, তবে কেনো আমরা অন্য কারো ওপর ক্রুদ্ধ হবো ? যদি তাদের হত্যা করা হয় তবে বুঝে নিতে হবে যে, তারা আকাঙ্ক্ষিত উত্তম গতিই লাভ করেছে।


গান্ধী এ ব্যাপারে আরো বলে- যা নাথুরাম গডসে তার গ্রন্থে উল্লেখ করেছে- যাদের হত্যা করা হয়েছে, তারা যদি সাহসের সাথে মৃত্যু বরণ করে থাকে, তবে তারা কিছুই হারায় নি, বরং কিছু অর্জন করেছে।মৃত্যুর জন্য তাদের ভীত হওয়া উচিত নয়। প্রকৃতপক্ষে যারা হত্যা করেছে, তারা তো আমাদেরই ভাই ছাড়া আর কেউ নয়, তারা আমাদেরই মুসলমান ভাই।


ফ্রিডম এ্যাট মিডনাইটগ্রন্থের ৩৮৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, পশ্চিম পাকিস্তান থেকে উদ্বাস্তু হয়ে আসা কয়েকজন হিন্দু গান্ধীর সাথে দেখা করলে গান্ধী তাদেরকে আবার পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরে যাবার পরামর্শ দেয়, যদিও তাদের ফিরে যাবার অর্থ ছিলো নিশ্চিত মৃত্যু। গান্ধী তাদেরকে বলে, “একটি মুসলমানকেও হত্যা না করে শেষ মানুষটি পর্যন্ত সমস্ত পাঞ্জাবী যদি হিন্দু যদি মৃত্যুবরণ করে, তবে পাঞ্জাব অমর হবে, তোমরা যাও এবং অহিংসার স্বার্থে স্বেচ্ছাকৃত বলি হও।এই সময় হিন্দু শরণার্থীরা পাকিস্তান থেকে বিতাড়িত হয়ে সাময়িক ভাবে দিল্লি কিছু মসজিদে আশ্রয় নেয়, কিন্তু ভারতের মুসলমানরা আপত্তি জানালে গান্ধী সমস্ত শরনার্থীদেরকে শিশু স্ত্রীলোক সহ রাস্তায় থাকতে বাধ্য করে। গান্ধী তার অহিংসা নীতিকে বোঝাবার জন্য ১৯২৬ সালের ৬ জুলাই নবজীবন পত্রিকায় গান্ধী লিখেছিলো যে, “কোনো মুসলমান যদি ঘরে ঢুকে আমার বোনকে ধর্ষণ করে আমি সেই ধর্ষনকারীর পায়ে চুমু খাবো।গান্ধী এই হিজড়া মনোভাবের ফলে কিভাবে হিন্দু মেয়েরা মুসলমানদের হাতে নির্যাতিত হয়েছে, তা বুঝতে পারবেন নিচের এই ঘটনাগুলোতে-


ফ্রিডম এ্যাট মিডনাইটগ্রন্থের ৪৭৯ পৃষ্ঠায় আরো উল্লেখ আছে, দেশভাগের প্রাক্কালে পাঞ্জাবের মেয়েরা যখন মুসলমানদের হাতে ধর্ষিতা হচ্ছিলো, তখন গান্ধী তাদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ দিয়েছিলো, “কোনো মুসলমান কোনো মহিলাকে ধর্ষণ করতে চাইলে, তারা কখনোই সেই মুসলমানকে বাধা দেবে না, বরং তার সাথে সহযোগিতা করবে। সেই মহিলার তখন উচিত হবে দুই দাঁতের মধ্যে জিভ কামড়ে মরার মতো শুয়ে থাকা।


১৯৪৬ সালে নোয়াখালিতে হিন্দু হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতনের সময় এ সম্পর্কে গান্ধী যেসব কথাবার্তা বলেছে, তা শুনলেও যে কোনো সুস্থ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের বমি আসবে। নিচে সেগুলোর কিছু বর্ণনা দিচ্ছি-


নোয়াখালির হিন্দুদেরকে, মুসলমানদের এই বর্বরতা থেকে রক্ষা করার জন্য ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ও অন্যান্য শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের পক্ষ থেকে গান্ধীর কাছে আবেদন জানানো হয়েছিলো, কিন্ত গান্ধী প্রথমে নোয়াখালি আসতেই রাজী হয় নি; কারণ, নোয়াখালি এসে তার কর্তব্য কর্ম কী হবে, সেই বিষয়ে ঈশ্বর নাকি তাকে কোনো নির্দেশ দেয় নি ! তাই মুসলমানদের আক্রমনে নিপীড়িত হিন্দুদের প্রতি সমবেদনা এবং দুঃখ জানিয়েই সে তার কর্তব্যকর্ম শেষ করে। দিল্লিতে বসে গান্ধী যে বিবৃতি দেয়, ১৭ অক্টোবর, কোলকাতা থেকে প্রকাশিত অমৃতবাজার পত্রিকা তা ছাপিয়েছিলো। বিবৃতির বক্তব্য একরম : "নোয়াখালির সংবাদ আমি শুনেছি, শুনেছি কলকাতার রক্তস্নানের কথাও; কিন্তু আমি খুঁজছি, এই মূহুর্তে আমার কর্তব্য কর্ম কী ? নিশ্চয় ঈশ্বর আমাকে পথ দেখাবে।"


শুধু তাই নয়, হিন্দুদের উপর এই আক্রমনের জন্য মুসলিম লীগ বা আক্রমনে মদত দেওয়ার জন্য সুরাবর্দীর সাম্প্রদায়িক প্রশাসন সম্পর্কেও গান্ধী কোনো মন্তব্য করতে রাজী হয় নি; এ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে গান্ধী বলেছিলো, "২৩ অক্টোবর দিল্লিতে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির যে সভা বসবে তার আগে আমি মুখ খুলবো না।" পাপাত্মা গান্ধী, নোয়াখালির হিন্দুদের, মুসলমানদের অত্যাচারের হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার এক অসাধারণ অহিংস পথের সন্ধান দিয়েছিলো। এই নপুংসক, মুসলমানদের সশস্ত্র আক্রমনে ক্ষত বিক্ষত ও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হিন্দুদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছিলো, "তারা (হিন্দুরা) যেন কখনোই অসহায়ভাবে মৃত্যু বরণ না করে। বরং তাদের উচিত একটিও শব্দ না করে হত্যাকারীদের তরবারির দিকে মাথা এগিয়ে দেওয়া, তাহলেই দাঙ্গা থেমে যাবে।"


শুধু এখানেই শেষ নয়, এই পাপাত্মা, ধর্ষিতা বা অপহৃতা নোয়াখালির মেয়েদের উদ্দেশ্যে বলেছিলো, "তারা যেন তাদের অত্যাচারীদের বাধা না দেয়; কারণ, মেয়েদের জানা উচিত কিভাবে মৃত্যু বরণ করতে হয়। সুতরাং খুব সাহসের সাথে মৃত্যুর মুখোমুখী দাঁড়াতে হবে এবং এর জন্য একটুও শোক করা উচিত নয়; কেবলমাত্র তাহলেই তাদের উপর এই অত্যাচার (ধর্ষণ ও অপহরণ) বন্ধ হবে।" আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে গান্ধীর প্রকৃত জন্মদাতা কে ? সে কোনো মানুষ , না অন্য কোনো জানোয়ার ? গান্ধীকে এখন আমার হিজড়া বলে গালি দিতেও খারাপ লাগে। কারণ, এতে প্রকৃতির খেয়ালে যারা হিজড়া হয়ে জন্ম নিয়েছে, আমার মনে হয়, তাদেরকে অপমান করা হয়।


২৪ অক্টোবর, ১৯৪৬ সালে, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির হিন্দু মহাসভার নেতৃত্বে এক বিরাট জনতা দিল্লিতে গান্ধীর হরিজন কলোনীর প্রার্থনা সভায় উপস্থিত হয়। তারা গান্ধীকে নোয়াখালির হিন্দু মেয়েদের সম্ভ্রম রক্ষা ও সাম্প্রদায়িক সুরাবর্দীর মন্ত্রীসভাকে বাতিল করার ব্যবস্থা নিতে বলেন। কিন্তু গান্ধী পুনরায় তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে নোয়াখালির সমস্ত হিন্দুকে মুসলমানদের তরবারির নিকট আত্মসমর্পন করার পরামর্শ দেয়; কেননা, তার মতে, মুসলমান আক্রমনকারীদের বাধা দেওয়ার মানেই হলো অযথা রক্তপাত। সেই সময় গান্ধী আবারও উপস্থিত লোকজনকে স্মরণ করিয়ে দেয় তার সেই বিখ্যাত দুর্গন্ধময় আবর্জনা, "নিহত হও, কিন্তু কাউকে হত্যা করো না।" গান্ধীর এসব মল মূত্র ভারত বাসীর জন্য প্রকাশ করেছিলো অমৃত বাজার পত্রিকা ২৫.১০. ১৯৪৬ তারিখে। ১৯৪৬ সালে যখন নোয়াখালিতে হিন্দু হত্যা হচ্ছিলো তখন গান্ধী সেখানে তো সাথে সাথে যায় ই নি, গিয়েছিলো হিন্দু হত্যা ও ধর্ষণের সব ঘটনা যখন শেষ হয়ে গেছে, তখন হত্যা নির্যাতন শুরুর ২৬ দিন পর, কিন্তু নোয়াখালির প্রতিক্রিয়ায় বিহারে যখন দাঙ্গা শুরু হয়, সেই দাঙ্গা থামাতে গান্ধী সেখানে গিয়েছিলো সাথে সাথে এবং দাঙ্গা বন্ধ করার ব্যবস্থাও করেছিলো; কারণ, বিহারে তার জাত ভাই মুসলমনারা বেশি সংখ্যায় মরছিলো। গান্ধীর এই মুসলিম প্রীতির জন্য অনেকে গান্ধীর জীবদ্দশাতেই তাকে মোহম্মদ গান্ধী বলতো।


বৃটিশ আমলে আজকের কেরালা রাজ্যের নাম ছিলো ত্রিবাঙ্কুর, মালাবার ছিলো এই ত্রিবাঙ্কুরের একটি জেলা। এই জেলায় বসবাসকারী মুসলমানদের বলা হতো মোপলা, মোপলা ছিলো মোল্লা শব্দের অপভ্রংশ। মোপলারা ছিলো খুবই দরিদ্র এবং তারা হিন্দুদের ক্ষেত খামারে কাজ করতো। কিন্তু এরা ছিলো খুবই হিংস্র এবং কারণে অকারণে জিহাদ ঘোষণা করে হিন্দুদরে উপর আক্রমন চালাতো। ১৭৫৭ থেকে ১৯২০ সালের মধ্যে এরা ৩৫ বার হিন্দুদের উপর আক্রমন চালায়। ১৯২১ সালের ২০ আগস্ট এই মোপলারা আবারও হিন্দুদের উপর আক্রমন চালায়। আ্ক্রমন থামাতে বৃটিশ সরকার সামরিক আইন জারি করে, কিন্তু তারপরও এটা ৫ মাস ধরে চলতে থাকে। খুন, ধর্ষণ, লুঠ, অগ্নিসংযোগ, জোরপূর্বক ধর্মান্তর সবই চলতে থাকে। সরকারি হিসেবে ২৩০০ হিন্দু মারা যায় এবং ১৬৫০ হিন্দু আহত হয়, যদিও বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা দ্বিগুন এবং ধর্মান্তর অগনিত। কিন্তু এই ঘটনা সম্পর্কে গান্ধী বলে,


মোপলারা হলো বীর আর হিন্দুরা কাপুরুষ। এই ঘটনার জন্য হিন্দুরাই দায়ী, তারাই মোপলাদেরকে ক্ষেপিয়ে তুলেছিলো। তাই তারা বাধ্য হয়ে হিন্দুদেরকে হত্যা করেছে।
শুধু তাই নয় মোপলাদের এই আক্রমনের সময় বৃটিশ সরকার যে ব্যবস্থা নিয়েছিলো তার জন্য গান্ধী তাদের নিন্দা করে এবং মোপলাদের এই বিদ্রোহকে তাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম বলে আখ্যায়িত করে। গান্ধী আরো বলে. মোপলারা হলো ভারতের অন্যতম এক সাহসী জাতি। তারা ঈশ্বরভীরু এবং তারা যে সাহসিকতা দেখিয়েছে সেজন্য তাদের সেনা পুরস্কার দেওয়া উচিত।


গান্ধী তার কথা বার্তা ও আচরণে সব সবসময় এটা বোঝাতো যে, মুসলমানরা হলো বীর আর হিন্দুরা হলো কাপুরুষ। সে মুসলমানদেরকে হিন্দুদের উপর আক্রমন করতে উৎসাহিত করতো আর অপরদিকে হিন্দুদেরকে অহিংস থাকতে বলতো, মুসলমানরা আক্রমন করলে তার প্রতিরোধ করতে নিষেধ করতো। গান্ধী বলতো, “হিন্দুরা যদি মরেও যায় তবু তারা কোনো মুসলমানকে প্রত্যাঘাত করবে না।দেশ ভাগের প্রাক্কালে মুসলমানরা যখন পাঞ্জাবে ব্যাপক দাঙ্গা হাঙ্গামা ও হিন্দুদের হত্যা করতে থাকে, তখন সর্দার প্যাটেল হিন্দুদেরকে নিজেই নিজেদের প্রাণ রক্ষার করার উপদেশ দেন এবং গান্ধী এজন্য প্যাটেলকে তিরস্কার করে।


গান্ধী চাইতো না, হিন্দু শরীরচর্চা করে মুসলমানদের চেয়ে শক্তিশালী হোক, তাই সে হিন্দুদেরকে শরীর চর্চা করতে নিষেধ করতো, একারণে সে গুজরাটের সমস্ত ব্যায়ামাগার বন্ধ করে দেয়।


১৯০৩ সালে, গান্ধীর বয়স যখন মাত্র ৩৪, তখন গান্ধী হঠাৎ ঘোষণা দেয় যে, সে ব্রহ্মচর্য পালন করবে। কিন্তু গান্ধী এতটাই কামুক ছিলো যে, তার বাপ যখন মৃত্যুশয্যায়, পরিবারের লোকেরা যখন তাকে ডাকছিলো, সে তখন বাপের সাথে শেষ কথা বলার জন্য যায় নি, কারণ, সে তখন তার স্ত্রীর সাথে যৌন ক্রিয়ায় ব্যস্ত ছিলো। এই কামুক গান্ধীর হঠাৎ ব্রহ্মচর্য পালনের ঘোষণার মূল কারণ ছিলো তার অশিক্ষিত স্ত্রীর প্রতি তার অরুচি ধরে গিয়েছিলো, তার বিছানা থেকে তার নিষ্কৃতি পাওয়া এবং একারণেই বোধ হয় চিকিৎসা না করিয়ে তার স্ত্রীকে মেরে ফেলেছিলো। ১৯৩৬ সালে গান্ধীর বয়স যখন ৬৭, তখন মুম্বাইতে ঘুমের মধ্যে গান্ধী তার বীর্যপাতের কথা স্বীকার করে, এই ঘটনাই প্রমান করে যে, গান্ধী কী পরিমান কামুক ছিলো। এছাড়াও গান্ধী নিজে স্বীকার করে গেছে যে, বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত এই যৌনতার আবর্ত থেকে সে নিজেকে মুক্ত করতে পারে নি।


১৯১৫ সালে গান্ধী সবরমতী আশ্রম প্রতিষ্ঠা করে এবং এরপর থেকেই সে খোলাখুলি নারীসঙ্গ শুরু করে। এ নিয়ে অন্যদের মধ্যে বেশ ক্ষোভের সঞ্চার হয়; কারণ, আশ্রমের অন্য বাসিন্দাদের জন্য নারীসঙ্গ কঠোরভাবে নিষেধ, অথচ গান্ধী যা খুশি তাই করে যাচ্ছে। এর জন্য নিজের পক্ষে গান্ধী সাফাই গেয়ে বলে, “সে কামগন্ধহীন, অর্ধনারীশ্বর, সব মেয়েই তার মা ও বোন মাত্র, তিনি তাদের সাথে যা করেন তা অন্তরাত্মার নির্দেশেই বা ঈশ্বরের আদেশেই করেন।


যা হোক, আশ্রমের অন্যদের আপত্তির ফলেই গান্ধী কিছুদিন তার অন্তরাত্মার নির্দেশকে বন্ধ রাখে। কিন্তু এরপরই শুরু করে তার নতুন ধান্ধা, ব্রহ্মচর্যের পরীক্ষা, বহু যুবতী নারীর সাথে এক ঘরে এক বিছানায় নগ্ন হয়ে রাত্রি যাপন। গান্ধী বলতো, “এভাবে এক বিছানায় শুলে রাত্রে শরীর গরম থাকে এবং শরীরের প্রাকৃতিক চিকিৎসা হয়।এইভাবে অনেক নগ্ননারীর সাথে এক বিছানায় শুয়ে নিজেকে সংযত রাখাকে গান্ধী সক্রিয় ব্রহ্মচর্য বলতো্। নিজের নাতি কানু গান্ধীর স্ত্রী, ১৬ বছরের আভা গান্ধীসহ আরো অনেক মহিলাকে সাথে নিয়ে গান্ধী তার এই ব্রহ্মচর্যের পরীক্ষা চালায়। এই সব পরীক্ষা নিরীক্ষার নামে গান্ধী যে তাদেরকে শুধু ব্যবহার করতো তা ই নয়, তাদের মতামত গ্রাহ্য না করে তাদের উপর যৌন নির্যাতনও চালাতো। গান্ধীর খ্যাতির প্রভাবে তাদেরকে এই সব অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় ছিলো না। গান্ধী সম্পর্কে এই সব কথা বলেছেন যশোধারা রায়চৌধুরী, আনন্দ বাজার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে ২৫/৬/২০০৬ তারিখে।


এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে গান্ধীর সর্বপ্রধান শিষ্য, ‘আচার্য বিনোবা ভাবেবলেছেন, “ব্রহ্মচর্য নিয়ে এই সব পরীক্ষা নিরীক্ষা করার গান্ধীর কোনো প্রয়োজন ছিলো বলে মনে হয় না। একজন খাঁটি ব্রহ্মচারী ব্যক্তি কখনো এইসব পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে যাবে না এবং কোনো ব্যক্তি, যিনি ব্রহ্মচর্যের শিক্ষা নিচ্ছেন, তিনিও নৈতিক কারণে এসব পরীক্ষা নিরীক্ষা বর্জন করবেন। কিন্ত গান্ধী বলতেন যে তার এই সব পরীক্ষা নিরীক্ষা খুবই সফল ও ফলপ্রসু হয়েছিলো।


এই সব পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য গান্ধীর শিকার হয়েছিলো তার এক নাতনী, জয়সুখলাল গান্ধীর মেয়ে, ১৯ বছর বয়সী মানু গান্ধী। মানুকে নিজের শয্যাসঙ্গিনী করে গান্ধী, জয়সুখকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলো, “মানুর ত্রুটিপূর্ণ শোয়াকে ঠিক করতে আমি ওকে আমার বিছানায় নিয়ে ঘুমাচ্ছি।১৯৪৬ সালের নভেম্বর মাসে গান্ধী যায় নোয়াখালি, সেখানেও তার শয্যাসঙ্গিনী হতো মানু গান্ধী। গান্ধী বলতো, নগ্ন হয়ে মানুর সাথে এক বিছানায় শোয়ার ফলে তিনি নানা ভাবে উপকৃত হয়েছিলেন, এর ফলেই তিনি নাকি দেশ ভাগ ও হিন্দু মুসলমানের সমস্যাগুলোকে সঠিকভাবে বিবেচনা করতে সমর্থ হন। ১৯৪৫ সালের মার্চ মাসে গান্ধী সাংবাদিকদের বলে, এই সব মহিলাদের সাথে নগ্ন হয়ে এক বিছানায় শোয়ার ফলে আমি ব্রহ্মচর্য রক্ষার ব্যাপারে প্রভূত সাফল্য লাভ করি। আগে আমি কস্তরবার সাথেও এই রকম পরীক্ষা চালিয়েছিলাম, কিন্তু তাতে অতটা সাফল্য পাই নি।


গান্ধীর এই সব লাম্পট্য দেখে তার স্টেনোগ্রাফার পি. আর. পরশুরাম একদিন তার কাজ ছেড়ে চলে যায়। এরপর নির্মল কুমার বসু- আপনি তো এইসব মেয়েদের সাথে শুয়ে ভালই লাম্পট্য সুখ উপভোগ করছেন, কিন্তু সর্বনাশ করছেন মেয়েগুলোর- বলে তার সাহচর্য ত্যাগ করেন। এইসব ঘটনায় জে.বি কৃপালনীও গান্ধীর কঠোর সমালোচক হয়ে উঠেন।


গান্ধী কাশ্মীরের রাজা হরি সিংকে উপদেশ দিয়েছিলো কাশ্মীরের অধিকার মুসলমানদের হাতে ছেড়ে দিতে যেহেতু কাশ্মীরের জনগণের অধিকাংশ মুসলিম, একইসাথে সে নিজাম ওসমান আলি খানএর হায়দ্রাবাদের পাকিস্তানভুক্তি সমর্থন করে, অথচ হায়দ্রাবাদ অর্থাৎ আজকের- অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক ও বেরার অধিকাংশ বাসিন্দা হিন্দু।


গান্ধীর লক্ষ্য ছিলো হিন্দু মুসলমানের ঐক্য। কিন্তু তার মতে, এর জন্য যা কিছু ত্যাগ স্বীকার সব কিছু করতে হবে হিন্দুদেরকে। হিন্দুর যা কিছু আছে তার সব কিছু মুসলমানদেরকে দিয়ে দিতে হবে। মুসলমানদেরকে খুশি করতে গান্ধী এক সময় সৈয়দ আমীর আলীর স্পিরিট অব ইসলামএবং উইলিয়াম মুরের লিখা লাইফ অব মুহম্মদঅনুবাদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো। মুসলমানদেরকে খুশি রাখার জন্য তাদের অত্যন্ত গুরুতর অপরাধও সে না দেখার ভান করতো এবং তাদের আল্লাহু আকবর ধ্বনিকে ভারতের জাতীয় শ্লোগান বলতেন। অনেকের কাছে তাই গান্ধী ছিলো জিন্নার চেয়েও বড় মুসলমান।


গান্ধী বলতো আফগানিস্তানের আমীরের উচিত হবে না ভারতের সাথে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। ভারতের মুসলমানদের জন্য তার উপদেশ ছিলো, আফগানিস্তানের আমীর ভারত আক্রমন করলে তাদের উচিত আফগানিস্তানের আমীরের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করা। গান্ধী ছিলো বৃটিশদের দালাল এবং একারণে ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের জন্য ভারতের মানুষ জেনারেল 'ও ডায়ার' এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক দেন, কিন্তু গান্ধী এর সমর্থন করতে অস্বীকার করে। এছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে আসার পর তার জীবনের সমস্ত ঘটনাই ছিলো বৃটিশ অনুমোদিত নাটকের এক একটা দৃশ্য। তার অহিংস আন্দোলন, ভারত ছাড় আন্দোলন সবই ছিলো বৃটিশদের প্ল্যান। কারণ, বৃটিশরা জানতো এতে তাদের বিন্দুমাত্র ক্ষতি হবে না; উল্টো ভারতের হিন্দুদেরকে এই বলে ধোকা দেওয়া যাবে যে তাদের পক্ষ থেকে সরকারের সাথে কথা বলার লোক একজন আছে এবং সে নিপীড়িত জনগনের হয়ে লড়ছে। এ কারণে গান্ধীর সমস্ত কর্মসূচী ছিলো বৃটিশ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় মঞ্চায়িত এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলে বৃটিশদের ভারত ত্যাগ যখন নিয়তি হয়ে উঠলো, তখন গান্ধী বৃটিশদের কে পরামর্শ দিয়েছিলো ভারতের শাসন ভার মুসলমানদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য। শুধু তাই নয়, গান্ধী যেহেতু প্রথম দিকে এটা বিশ্বাস করতো যে দেশভাগ একটি অসম্ভব ব্যাপার, সেহেতু সে একজন মুসলমান সম্রাট এর খোঁজও শুরু করে দিয়েছিলো।


মুসলমানদের জন্য এত কিছু করলেও গান্ধী জানতো না যে, সে তাদের প্রিয় হতে পারবে না; কারণ, কোরান মতে সে কাফের, ঘৃণ্য, পশুর চেয়েও অধম। তাই জিন্না গান্ধী সম্পর্কে বলেছিলো, গান্ধী একজন অধঃপতিত মুসলমানের চেয়েও হীন। ভারত ভাগ যখন হয়েই গেলো এবং বৃটিশদের দালালী করার জন্য যখন গান্ধী ও নেহেরু ভারতের শাসন ভার হাতে পেলো তখন তারা উঠে পড়ে লাগলো দেশ থেকে সমস্ত হিন্দু চিহ্ন মুছে ফেলতে, তাদের কারণেই ভারতের নাম হিন্দুস্থানহয় নি, এমনকি তারা ভারতও বলতো না, বলতো অ-পাকিস্তানএবং শেষ পর্যন্ত ভারতের নাম রাখে ইন্ডিয়া বা ইন্ডিয়া রিপাবলিক। অথচ যেকোনো দেশের নাম তাদের অধিবাসীদের ধর্ম বা জাতীয়তা অনুযায়ী ই হয়ে থাকে। অনেক গান্ধী ভক্ত এটা বিশ্বাস করে যে, ভারত ভাগের জন্য গান্ধী দায়ী নয় বা অপরাধী নয়; কারণ, গান্ধী প্রকাশ্য জনসভায় বলতো, “দেশকে দ্বিখণ্ডিত করার আগে আমার দেহকেআগে দ্বিখণ্ডিত করো।উপরে এই কথা বললেও তলে তলে গান্ধী কী নিয়ে কাজ করতো তা বোঝার চেষ্টা করুন নিচের এই কয়টি ঘটনা থেকে-


১৯৪০ সালের ২৬ মার্চ এর বৈঠকে মুসলিম লীগের নেতারা সর্বপ্রথম দেশভাগ ও পাকিস্তানের দাবীকে উত্থাপন করে। এর ১০ দিন পর, তাদের এই দাবীকে সমর্থন করে গান্ধী, ৬ এপ্রিল, হরিজন পত্রিকায় লিখে, “দেশের অন্যান্য জনগোষ্ঠীর মতো মুসলমানদেরও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার আছে। বর্তমানে আমরা একটা যৌথ পরিবারের মতোই বাস করছি। তাই এর কোনো এক শরিক ভিন্ন হতে চাইতেই পারে।এই ঘটনার ২ বছর পর, ১৯৪২ সালের ১৮ এপ্রিল গান্ধী হরিজন পত্রিকায় আবারও লিখে, “যদি ভারতের বেশিরভাগ মুসলমান এই মত পোষণ করে যে মুসলমানরা একটা আলাদা জাতি, তবে পৃথিবীর এমন কোনো শক্তি নেই যে সেই চিন্তাভাবনা থেকে তাদেরকে বিরত করতে পারে এবং সেই ভিত্তিতে তারা যদি বেশির ভাগ চায় তবে অবশ্যই দেশভাগ করতে হবে। তবে ইচ্ছা করলে হিন্দুরা তার বিরোধিতা করতে পারে।


এরপর বড় ঘটনা ঘটে ১৯৪৬ সালের কোলকাতার ডাইরেক্ট এ্যাকশন ডেএবং নোয়াখালির হিন্দু হত্যা’, এই ধরণের ঘটনা মুসলমানরা ঘটাবেই, এটা উপলব্ধি করেই বোধহয়, গান্ধী ৬ই মে ১৯৪৬ সালে, এক জনসভায় হিন্দুদের উদ্দেশ্যে বলে, মুসলিম লিগের সাথে লড়াই না করতে বরঞ্চ তার পরিবর্তে প্রয়োজনে ক্ষতিস্বীকার করতে।
 
যা হোক, নানা ঘটন অঘটনের পর ১৯৪৭ সালের ১২ জুন থেকে শুরু হওয়া বৈঠকে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি দেশভাগের উপর প্রস্তাব আনে, এই বৈঠকেই কংগ্রেসের অনেক বিশিষ্ট নেতা, যেমন-পুরুষোত্তম দাস ট্যাণ্ডন, গোবিন্দবল্লভ পস্থ, চৈতরাম গিদোয়ানী, ড. এস কিচলু প্রমুখ দেশভাগের প্রবল বিরোধিতা করে বক্তব্য রাখে। কিন্তু গান্ধী এই সব নেতাদের বক্তব্যের বিরোধিতা করে দেশভাগের পক্ষে ৪৫ মিনিট ধরে এক জোরালো বক্তব্য রাখে। এতে গান্ধীর মূল বক্তব্য ছিলো, দেশ ভাগ মেনে না নিলে দেশব্যাপী অরাজকতা দেখা দেবে এবং দেশের নেতৃত্ব কংগ্রেসের হাত ছাড়া হয়ে যাবে। এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে গান্ধী মুসলমানদের উদ্দেশ্যে এই বার্তা দেয় যে দেশভাগ না হলে কোলকাতা ও নোয়াখালির মতো অরাজকতা করতে থাকো, আর কংগ্রেস নেতাদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেয় যে, সারাজীবন তো অনেক জেল জুলুম সহ্য করলে, এখন দেশভাগ মেনে নিয়ে একটু ক্ষমতা ভোগ করো; কারণ, দেশভাগ মেনে না নিলে ইংরেজ ক্ষমতা ছাড়বে না আর তোমরা ক্ষমতার স্বাদও পাবো না। এরফলে ক্ষমতালোভী কংগ্রেসের নেতারা দেশভাগের পক্ষে চলে যায় এবং ভারতমাতা দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়।


কিছু কিছু এমন নির্বোধ হিন্দু আছে, যারা ভারতের এই দ্বিখণ্ডিত হওয়াকেই ভারতের স্বাধীনতা মনে করে এবং ১৫ আগস্টে আনন্দ ফুর্তি করে ভারতের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করে। এরা এইটুকুও বোঝে না যে, ভারত যদি অখণ্ডরুপে স্বাধীন হতো, তাহলেই সেটাকে ভারতের প্রকৃত স্বাধীনতা বলা যেতো, তাহলে ১৫ আগস্টকে আনন্দ ফুর্তির দিন হিসেবে কাটালে সেটা মানাতো। কিন্তু ১৫ আগস্ট যে হিন্দুদের আনন্দের নয় শোকের দিন, সেটাও এই নির্বোধ হিন্দুরা বোঝে না। এবং এই নির্বোধ হিন্দুরাই মনে করে ভারতকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে গান্ধী, তার অহিংসা আন্দোলনের দ্বারা। এরা যে কী পরিমাণ স্টুপিড সেটাকে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। মায়ের ধর্ষিতা হওয়ার দিনকে এরা শুধু আনন্দের দিন হিসেবেই উদযাপন করে না, এরা এমন একজনকে তাদের পিতা হিসেবে মনে করে, যে তাদের পিতাই নয়; এভাবে তারা ভারতমাতাকে অপমান করছে দুই দিক থেকে।


প্রকৃতপক্ষে ইংরেজরা ভারত ছেড়ে যেতে বাধ্য হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিণতিতে। কারণ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৫ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত সারা বিশ্বের ৬০ টি দেশ ইউরোপীয় উপনিবেশের কবল থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে। ভারতের এই খণ্ডিত স্বাধীনতা ছিলো বিশ্বব্যাপী এই বড় ধরণের পরিবর্তনের একটি ফল। এই সময় অনেক দেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে, যারা স্বাধীনতার আন্দোলনই করে নি, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পতনের ফলে তারা এমনিই স্বাধীন হয়ে গিয়েছিলো, ভারত ছেড়ে ইংরেজদের চলে যাওয়া ছিলো এই ধরণেরই একটা ঘটনা।


যা হোক, ১৯৪৭ সালের আগস্টে ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান সৃষ্টি হলেও কাশ্মির স্বাধীনই থেকে যায়। কিন্তু কাশ্মির দখল করার জন্য পাকিস্তান মাত্র ২ মাস পরেই কাশ্মির আক্রমন করে। এর আগে পাকিস্তানের প্রাপ্য হিসেবে ৫৫ হাজার কোটি টাকা ভারতের পাকিস্তানকে দেবার কথা ছিলো; কিন্তু পাকিস্তান, কাশ্মির আক্রমন করায়, ভারত, ঐ টাকা পাকিস্তানকে না দেবার সিদ্ধান্ত নেয়, কেননা, ভারতের এই ভয় ছিলো যে, ঐ টাকা দিলে পাকিস্তান তা ভারতের বিরুদ্ধে শত্রুতা করতেই কাজে লাগাবে। কিন্তু ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গান্ধী অনশন শুরু করে।
 
এই ঘটনার সময় থেকেই বাতাসে এই কথা ভেসে বেড়াচ্ছিলো যে, গান্ধী যদি পাকিস্তানকে এই টাকা দিতে সরকারকে বাধ্য করতে পারে, তাহলে তার নেক্সট প্ল্যান হলো পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পূর্ব পাকিস্তানে যাওয়ার জন্য ভারতের ভেতর দিয়ে স্থলপথে রাস্তার মতো একটি এলাকা দিয়ে দেওয়া, যাতে মুসলমানরা দুই পা্কিস্তানের মধ্যে স্থলপথে যোগাযোগ সৃষ্টি করতে পারে।


যেদিন পত্রিকায় গান্ধীর এই অনশনের সিদ্ধান্তটি প্রকাশিত হয়, সেদিনই নাথুরাম গডসে গান্ধীকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয় এবং তা কার্যকর করে ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি।


আমার গবেষণায়, পৃথিবীর ইতিহাসে, হিন্দুদের ক্ষতি গান্ধীর চেয়ে বেশি কেউ করে নি, আর এখন পর্যন্ত গান্ধীকে হত্যা করে নাথুরাম গডসের চেয়ে বেশি উপকারও এখন পর্যন্ত কোনো হিন্দু, হিন্দু সমাজের জন্য করে নি। অনেকেই মনে করতে পারেন, মুসলমানরা তো ৫০ কোটি হিন্দুকে হত্যা করেছে, গান্ধী কি মুসলমানদের চেয়েও হিন্দুদের বেশি ক্ষতি করেছে ? মুসলমানরা ৫০ কোটি হিন্দুকে হত্যা করেছে ঠিকই, কিন্তু সেই জনসংখ্যার ক্ষতি পূরণ করা সম্ভব, কিন্তু গান্ধীর কারণে হিন্দুরা ভারতের যে ৩২% ভূমি হারিয়েছে, এটা কোনো দিনই পূরণ করা সম্ভব নয়। এই দৃষ্টিকোন থেকেই গান্ধী আমার কাছে হিন্দুদের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গ। শুধু তাই নয় ভারত ভাগের সময় যে ২০ লাখ হিন্দু ও শিখ মুসলমানদের হাতে নিহত হয়েছে এবং প্রায় ১ লাখ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে এবং ভারত ভাগের পর থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে হিন্দুদের উপর যে অত্যাচার-নির্যাতন চলছে তার জন্যও প্রকৃত দায়ী মূলত গান্ধী। সুতরাং মুহম্মদের মতোই গান্ধীর পাপের কোনো শেষ নেই।


অনেকেই ভাবতে পারেন আমার লেখার বিষয় তো সাধারণত হিন্দু ও ইসলাম ধর্মের বিষয়, তার মধ্যে হঠাৎ এই গান্ধীপোকার কাহিনী কেনো ? আসলে আমার মূল উদ্দেশ্য হলো হিন্দু সমাজের ক্ষতগুলোকে সারিয়ে তুলে হিন্দুসমাজের উন্নয়ন করা, তাই যে বিষয়গুলো এখনও হিন্দু সমাজের ক্ষতি করে যাচ্ছে, আমার নজর সেই সকল বিষয়ের উপর। গান্ধীর প্রভাব বাংলাদেশর হিন্দুদের উপর তেমন নেই, কিন্তু ব্যাপকভাবে আছে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের উপর; যেকারণে তারা এখনও হিন্দু হয়ে উঠতে পারে নি বা পারছে না। আর একারণেই ক্ষতি হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের; তারা মুসলমানদের হাতে মার খাচ্ছে, কিন্তু গান্ধীবাদ তথা হিজড়াবাদের নেশা ছাড়তে পারছে না; এজন্যই আমার এই থিসিস- নপুংসকতার কবল থেকে পশ্চিমবঙ্গের ৯০% হিন্দুকে বের করে এনে মানুষ বানানো; কারণ, পশ্চিমবঙ্গের বেশির ভাগ হিন্দু যখন প্রকৃত হিন্দু হয়ে উঠবে, তখন বাংলাদেশের হিন্দুদের সমস্যা এমনিই কমে যাবে বা দূর হয়ে যাবে। একই সাথে পুরো ভারতবর্ষও প্রকৃত অর্থে স্বাধীন হবে, যেকারণে ঋষি অরবিন্দ বলে গিয়েছেন, “ভারতবর্ষ ততখানিই স্বাধীন হবে, গান্ধীবাদের যাদুকে সে যতখানি ঝেড়ে ফেলতে পারবে।


জয় হিন্দ।





মন্তব্যসমূহ

  1. বাংলাদেশে হিন্দুরা যতটা ভাল অবস্থায় আছে। তোমাদের হিন্দুদেশ হয়েও ওতটা ভাল রাখতে পারো নি। অন্যের পুটকিতে আংগুল দেবার আগে,নিজের পুটকির দিকে একবার আংগুল নিয়ে দেখো। তোমার মত মাথা মোটা হিন্দু যদি গান্ধী হতো তাহলে যে ইন্ডিয়া নাম লাগিয়ে চলছো সেটা আর থাকতো না। একদিন তোমার জন্মও কোনো মুসলমানের ঘরে হতো। গান্ধী মুসলমানদের রক্ষা করেনি করছে মুসলমানদের থেকে হিন্দুদের রক্ষা। দেশ যদি ভাগ না হতো তাহলে দেখতি মুসলমানদের খেলা। যে খেলা এখন তোমরা দেখাচ্ছো ।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

পয়েন্ট টু পয়েন্ট : মুসলমানদের মিথ্যাচারের দাঁত ভাঙ্গা জবাব

পয়েন্ট টু পয়েন্ট : মুসলমানদের মিথ্যাচারের দাঁত ভাঙ্গা জবাব ফটো হিসেবে এই প্রবন্ধের সাথে যেটা যুক্ত করেছি , তার জবাব দেওয়া ই আমার এই পোস্টের উদ্দেশ্য। তাই কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক: ফটোপোস্টের শুরুতেই লিখা হয়েছে , “ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কোন প্রতিমা নেই , কোন প্রতিমূর্তি নেই , কোন প্রতিকৃতি নেই , কোন রূপক নেই , কোন ফটোগ্রাফ নেই , তাঁর কোন ভাস্কর্য নেই। ” এর রেফারেন্স হিসেবে লিখা হয়েছে , “ শ্বেতাসত্র উপনিষদ , অধ্যায় ৪ , পরিচ্ছেদ ১৯ এবং যযুর্বেদ অধ্যায় ৩২ , অনুচ্ছেদ ১৯। ” এবার দেখা যাক , সত্যিই সেখানে কী লিখা আছে এবং তার প্রকৃত অনুবাদটা কী ? রেফারেন্স হিসেবে প্রথম বইয়ের নাম লিখা হয়েছে , “ শ্বেতাসত্র উপনিষদ ”, কিন্তু এর নাম প্রকৃতপক্ষে “ শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ ”, লিখেছে তো কোনো এক মুসলমান , তার কাছ থেকে আপনি আর কত শুদ্ধ বানান আশা করতে পারেন ? রেফারেন্সের বাকি অংশে লিখা হয়েছে- “ অধ্যায় ৪ , পরিচ্ছেদ ১৯ ”, অধ্যায় ৪ ঠিক থাকলেও এই উপনিষদে অনুচ্ছেদ বলে কিছু হয় না , এটি হবে আসলে শ্লোক নং ১৯। শুধু এই রেফারেন্সেই নয় , প্রতিটি রেফারেন্সেই দেখবেন কিছু না কিছ...

বেদ এ ‘‘পিতা তার মেয়ের সাথে অশ্লীলকর্মে লিপ্ত’’- =>এছাড়া মা- ছেলে দূষ্কর্ম, এমন বিশ্রি বর্ণনা যেই গ্রন্থে তা কি করে সৃষ্টিকর্তার বাণী হতে পারে ?”

“ রিগবেদ ---- অধ্যায় - ৩ , খন্ড - ৩১ , শ্লোক : ১ - ২ ‘‘ পিতা তার মেয়ের সাথে অশ্লীলকর্মে লিপ্ত ’’- => এছাড়া মা - ছেলে দূষ্কর্ম , এমন বিশ্রি বর্ণনা যেই গ্রন্থে তা কি করে সৃষ্টিকর্তার বাণী হতে পারে ?” ঠিক এই প্রশ্নটিই করেছে Md Alhaz Hosain নামের এক মুসলমান আমার এক পোস্টের কমেন্ট বক্সে। বেদ এ্রর এই বাণীতে আসলেই কী বলা হয়েছে , সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা পাবেন আমার এই পোস্টে : ফেসবুকে মুসলমানদের কমেন্ট মানেই গালাগালি , খিস্তি। এ থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার যে , মুসলমানরা যুক্তি বোঝে না। কারণ , যারা যুক্তি বোঝে তারা যুক্তি দিয়ে কথা বলে , প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করতে তাদের গালি - গালাজের প্রয়োজন হয় না। এজন্য তথ্য রেফারেন্স দিয়ে লেখার পরও যারা সেসবে নজর না দিয়ে গালাগালি করে তাদের কমন্টেকে আমি রাস্তার পাগলা কুত্তার ঘেউ ঘেউ বলেই মনে করি , তাই সেগুলোকে কোনো গুরুত্বই দিই না। কিন্তু আজকে যে কমেন্টটির উত্তর দিচ্ছি , সে বেশ ভদ্রভাবেই কথাগুলো তুলে ধরেছে ; তাই তার লেখার জবাব দিচ্ছি , যদিও পাগলা...

হিন্দুদের এত দেবতা, আসলে কোনটা বড় ?

হিন্দুদের এত দেবতা , আসলে কোনটা বড় ? এবং ইসলাম নাকি সবচেয়ে প্রাচীন ধর্ম ! উপরের এই দুটো প্রসঙ্গসহ মুসলমানদের করা আরো কিছু প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে জানতে চেয়ে ছিলো Pritam Das নামের আমার এক ফেসবুক বন্ধু। শুরুতেই দেখে নিন সেই প্রসঙ্গগুলো- মুসলমানরা বলে যে , একটা হাতির মুখ মানুষের শরীরে কি করে বসানো যায় ? কী যুক্তি আছে এটার পেছনে ? আর সেইটাকে তোমরা হিন্দুরা আবার পূজাও করো! আবার সেই গনেশের একটা কলা গাছ বউও আছে। তারপর হুনুমান কী করে উড়তে পারে ? কী করে একাই একটা লংকা জ্বালিয়ে দিতে পারে ? এছাড়াও বলে যে ইসলাম নাকি পৃথিবীর প্রাচীন ধর্ম , হিন্দু ধর্ম অনেক পরে এসেছে। পৃথিবী কবে শেষ হবে তা নাকি ওদের কোরানে লেখা আছে। আর মাঝে মধ্যে প্রায় জিজ্ঞেস করে হিন্দুদের এত দেবতা , আসলে কোনটা বড় ? কোনো না কোনো তো একটা বড় দেবতা হয়েই যায়। সবাই তো এক দেবতা পূজা করে না। কেউ কেউ তো আলাদা পূজা করে , তাহলে হিন্দুদের মধ্যে দেবতা নিয়ে একতার অভাব। ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি... এবার দেখুন আমার জবাব: মুসলমানরা হিন্দুদেরকে ধর্ম বিষয়ে নানা প্রশ্ন করে বিব্রত করে , ঠিকঠাক সেই প্রশ্নগুলোর জবাব দিতে না...