সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বেদ এ ‘‘পিতা তার মেয়ের সাথে অশ্লীলকর্মে লিপ্ত’’- =>এছাড়া মা- ছেলে দূষ্কর্ম, এমন বিশ্রি বর্ণনা যেই গ্রন্থে তা কি করে সৃষ্টিকর্তার বাণী হতে পারে ?”



রিগবেদ---- অধ্যায়-, খন্ড-৩১, শ্লোক: - ‘‘পিতা তার মেয়ের সাথে অশ্লীলকর্মে লিপ্ত’’- =>এছাড়া মা- ছেলে দূষ্কর্ম, এমন বিশ্রি বর্ণনা যেই গ্রন্থে তা কি করে সৃষ্টিকর্তার বাণী হতে পারে ?”


ঠিক এই প্রশ্নটিই করেছে Md Alhaz Hosain নামের এক মুসলমান আমার এক পোস্টের কমেন্ট বক্সে। বেদ এ্রর এই বাণীতে আসলেই কী বলা হয়েছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা পাবেন আমার এই পোস্টে :

ফেসবুকে মুসলমানদের কমেন্ট মানেই গালাগালি, খিস্তি। থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার যে, মুসলমানরা যুক্তি বোঝে না। কারণ, যারা যুক্তি বোঝে তারা যুক্তি দিয়ে কথা বলে, প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করতে তাদের গালি-গালাজের প্রয়োজন হয় না। এজন্য তথ্য রেফারেন্স দিয়ে লেখার পরও যারা সেসবে নজর না দিয়ে গালাগালি করে তাদের কমন্টেকে আমি রাস্তার পাগলা কুত্তার ঘেউ ঘেউ বলেই মনে করি, তাই সেগুলোকে কোনো গুরুত্বই দিই না। কিন্তু আজকে যে কমেন্টটির উত্তর দিচ্ছি, সে বেশ ভদ্রভাবেই কথাগুলো তুলে ধরেছে; তাই তার লেখার জবাব দিচ্ছি, যদিও পাগলা কুকুরের কিছু বৈশিষ্ট্য তার মধ্যেও আছে। তার কমেন্টটি অনেক বড়, অনেক প্রশ্ন তাতে, সব প্রশ্নের উত্তর এক সাথে দিলে সেটা অনেক বড় হয়ে যাবে, তাই এখন শুধু উপরে উল্লেখ করা তার একটা প্রশ্নের জবাব দিচ্ছি

প্রথমেই সে লিখেছে, “আমি শুধু জানতে চাই....? রিগবেদ---- অধ্যায়-, খন্ড-৩১, শ্লোক: - ‘‘পিতা তার মেয়ের সাথে অশ্লীলকর্মে লিপ্ত’’

প্রথমত ঋগ্বেদকে সে যেভাবেঅধ্যায়-খণ্ড-শ্লোক বিন্যাস করেছে, ব্যাপারটা সেরকম নয়, ঋগ্বেদকে বিন্যস্ত করা হয়মণ্ডল-সূক্ত-ঋকএ। এটাকে আমি তার ভুল হিসেবে দেখছি না, আপনাদেরকেও দেখতে বলছি না, এই ব্যাপারটায় আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আমি এটা বোঝাতে চাচ্ছি যে, ঋগ্বেদ সম্পর্কে সে কতটা অজ্ঞ! যে ঋগ্বেদ এর বিন্যাস ঠিক মতো বোঝে না, সে এসেছে ঋগ্বেদের শ্লোকের অর্থ বুঝতে! ব্যাপারটা ইঁদুরের হিমালয়ের পর্বতের ওজন বিষয়ে মতামত দেওয়ার মতো, মন্দ নয়, নিশ্চয় এটা মাতব্বর শ্রেণীর ইঁদুর। যা হোক, ঋগ্বেদের বিকৃত রেফারেন্স দিয়ে, ‘‘পিতা তার মেয়ের সাথে অশ্লীলকর্মে লিপ্ত’’ বলে যাকে মনে করেছে, সেই দুটি শ্লোক আগে দেখে নিন,

পুত্রহীন পিতা সমর্থ জামাতাকে সম্মানিত করে শাস্ত্রানুশাসনক্রমে দুহিতা জাত পৌত্র প্রাপ্ত হন। অপুত্ত পিতা দুহিতার গর্ভ হতে বিশ্বাস করে প্রসন্নমনে শরীর ধারণ করেন।” – ঋগ্বেদ, /৩১/

এবং

ঔরসপুত্র দুহিতাকে পৈতৃক ধন দেন না। তিনি তাকে ভর্তার প্রণয়ের আধার করেন। যদি পিতামাতা পুত্র কন্যাং উভয়েই উৎপাদন করেন তা হলে তাদের মধ্যে একজন উৎকৃষ্ঠ ক্রিয়া কর্ম করেন, এর অন্যজন সম্মানিত হন।”- ঋগ্বেদ, /৩১/

প্রথম ঋক বা শ্লোকে বলা হয়েছে, যে পিতা পুত্রহীন অর্থাৎ যে লোকের কন্যা আছে কিন্তু পুত্র নেই, সে তার জামাই অর্থাৎ মেয়ের স্বামীকে সন্তুষ্ট করে মেয়ে-জামাই এর ছেলেকে নিজের দায়িত্বে নিতে পারবেন। খেয়াল করবেন, শ্লোকের মধ্যে লিখা আছে, “দুহিতা জাত পৌত্র”- এর মানে হলো কন্যার পুত্র। এই ভাবে কন্যার পুত্রের দায়িত্ব নিয়ে তাকে বড় করে তুললে, এই নাতী পুত্রের মতো করে দাদুর সকল রকম দায়িত্ব পালন করবে। বেদ এর বিধানের ফলেই হিন্দু সমাজে যাদের পুত্র নেই, তাদের সম্পত্তির মালিক হয় কন্যার পুত্ররা এবং শাস্ত্রমতে কন্যার পুত্ররা পুত্রের মতোই দাদুর অন্ত্যেষ্টি্ক্রিয়ারও অধিকারী

এবার নজর দিন প্রথম শ্লোকের ২য় বাক্যে- “অপুত্ত পিতা দুহিতার গর্ভ হতে বিশ্বাস করে প্রসন্নমনে শরীর ধারণ করেন।সাধারণভাবে এই বাক্যের অর্থ বোঝা কঠিন, কারণ এর মধ্যে লুকিয়ে আছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞানে বংশগতির সূত্র লে বিজ্ঞানীগ্রেগর জোহান মেন্ডেলএর একটি সূত্র আছে, যা সাধারণভাবেমেন্ডেলএর সূত্র নামে পরিচিত, সেই সূত্র জানলে আপনি এই বাক্যের অর্থ বুঝতে পারবেন।

খ্রিষ্টান যাজক মেন্ডেল তার সূত্রে বলেছেন, দাদুর বৈশিষ্ট্য নাতীর মধ্যে প্রতিফলিত হয়। এই কথাটি যে কতখানি সত্য তা নিজেরাই প্রমান পাবেন, আপনার মধ্যে বা আপনার যেকোনো একজন ভাই-বোনের মধ্যে আপনার দাদুর বৈশিষ্ট্যকে লক্ষ্য করলে। সেই কথাই বলা আছে কমপক্ষে হাজার বছর আগের হিন্দু মুনি-ঋষির জ্ঞানবেদএর এই শ্লোকে। বাক্যটি আবার খেয়াল করুন, “অপুত্ত পিতা দুহিতার গর্ভ হতে বিশ্বাস করে প্রসন্নমনে শরীর ধারণ করেন।

হিন্দু ধর্ম পুনর্জন্ম তত্ত্বে বিশ্বাস করে। এই পুনর্জন্ম তত্ত্ব চিরন্তন সত্য এই কারণে যে, না হলে পৃথিবীর সব মানুষ একই সমান মর্যাদা নিয়ে জন্মগ্রহন করতো, কারো বস্তিতে আবার কারো কোটিপতির ঘরে জন্ম হতো না। শুধু মানুষের ক্ষেত্রেই নয়, বিভিন্ন প্রাণীর ক্ষেত্রেও এই পুনর্জন্ম থিয়োরী এবং পূর্বজন্মের কর্মের ফল ধ্রুব সত্য। বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া কুকুরের ভাগ্য আর ইউরোপ-আমেরিকায় জন্ম নেওয়া কুকুরের ভাগ্যের তুলনা করলে নিশ্চয় আমার কথার মর্ম আপনারা বুঝতে পারবেন।

হিন্দু ধর্মের এই পুনর্জন্ম তত্ত্ব বলে, মানুষের আত্মা মরে না, শরীর পুরোনো হয়ে গেলে, পুরোনো শরীর ছেড়ে আত্মা আবার নতুন শরীরে আশ্রয় নেয়। ঋগ্বেদ এর এর শ্লোকে সেই কথা বলা হয়েছে যে, পিতা তার কন্যার গর্ভের মাধ্যমে পুনরায় শরীর ধারণ করে। যদিও বাক্যটির শুরুতেঅপুত্তশব্দটি যুক্ত আছে, যার অর্থ পুত্রহীন, তথাপি সব পিতার ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য, কিন্তু অপুত্রক পিতার ক্ষেত্রে এটা আরো বেশি প্রযোজ্য এই কারণে যে, পুত্রহীনদের মধ্যে একটা পুত্রের কামনা সব সময়ই কাজ করে এবং শেষ পর্যন্ত নিজের স্ত্রীর মাধ্যমে তা পূরণ না হলে সেই পুত্রহীন পিতা চায়, যেন তার কন্যার গর্ভে একটি পুত্র হয়, এই চাওয়ার কারণেই কন্যার পুত্রদের মধ্যে কন্যার পিতার মন-মানসিকতা শারীরিক বৈশিষ্ট্য অধিক মাত্রায় পরিলক্ষিত হয়, যদিও সব সন্তানের মধ্যেই তার গ্র্যান্ড ফাদার মাদারের কিছু না কিছু বৈশিষ্ট্য থাকেই। পুনর্জন্ম থিয়োরিতে একজন মারা গেলেই কেবল সে অন্য দেহ ধারণ করে পৃথিবীতে নতুন করে জন্মলাভ করে। এজন্য জীবিত দাদুর বৈশষ্ট্যি নাতী-নাতনীর মধ্যে যতটা না প্রকাশিত হবে, মৃত দাদুর বৈশিষ্ট্য তার চেয়ে বেশি প্রকাশিত হবে। আমার দাদুকে আমি দেখি নি- কিন্তু আমার মা, বাবা এবং পিসির মুখে শুনেছি আমার বড় ভাই নাকি আমার দাদুর হুবহু অনুরূপ

উপরে উল্লেখ করা ২য় শ্লোকটি এবার খেয়াল করুন,

ঔরসপুত্র দুহিতাকে পৈতৃক ধন দেন না। তিনি তাকে ভর্তার প্রণয়ের আধার করেন। যদি পিতামাতা পুত্র কন্যা উভয়েই উৎপাদন করেন তা হলে তাদের মধ্যে একজন উৎকৃষ্ট ক্রিয়া কর্ম করেন, এর অন্যজন সম্মানিত হন।”- ঋগ্বেদ, /৩১/

 এই শ্লোকের প্রথম বাক্যে বলা হচ্ছে- পুত্র, কন্যাকে পৈতৃক ধন দেন না। তিনি তাকে ভর্তার প্রণয়ের আধার করেন

বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আপনার মনে হতে পারে যে, এটা কিভাবে সম্ভব ? পুত্র, কন্যাকে অর্থাৎ ভাই, বোনকে পৈতৃক ধন দেওয়া বা না দেওয়ার কে ? কন্যাকে যা দেবার তা তো দেবে পিতা। পুকুরের গভীরতা বোঝার জন্য পুকুরের পাড়ে দাঁড়িয়ে জলের উপর থেকে না দেখে পুকুরের জলে ডুব দেন, তাহলেই আপনি বুঝতে পারবেন আসলে পুকুরের গভীরতা কত। আমি বলতে চাইছি এত সরল দৃষ্টিতে না দেখে একটু গভীর অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে বিষয়টি ভাবুন, তাহলে নিশ্চয় এর মানে বুঝতে পারবেন

আমরা স্বীকার করি বা না করি, পুত্রের জন্মের পর প্রাকৃতিকভাবে পুত্রই তার পিতার সমস্ত সম্পত্তির অধিকারী হয়; কারণ, যে কোনো লোক সন্তানের জন্মই দেয় মূলত তার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী বানানো সম্পত্তিকে রক্ষা করার জন্য; এছাড়াও মানুষের মৃত্যু কখন হবে তা কেউ জানে না, আর পুত্র শুধু জন্মের পরেই নয়, মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থাতেও যদি পিতার মৃত্যু হয়, তাহলেও পিতার সমস্ত সম্পত্তির মালিক হবে সে। এজন্য পুত্রকেই পিতার সম্পত্তির প্রকৃত উত্তরাধিকারী বিবেচনা করেছেন আমাদের মুনি-ঋষিরা। এজন্যই বাক্যের শুরুতে রয়েছেঔরসপুত্রশব্দটি এবং বলা হচ্ছে- ঔরসপুত্র, দুহিতাকে পৈতৃক ধন দেন না। অর্থাত ভাই, তার বোনকে পিতার সম্পত্তির ভাগ দেয় না। কিন্তু তিনি তাকে ভর্তার প্রণয়ের আধার করেন। ভাই, তার বোনকে পিতার সম্পত্তির যে ভাগ দেয় না, এই বিষয়টি তো মোটামুটি পরিষ্কার; এজন্যই শাস্ত্রমতে হিন্দু মেয়েরা পিতার সম্পত্তির ভাগ পায় না। বর্তমানে ভারতে আইনের মাধ্যমে মেয়েদেরকে সম্পত্তির অধিকার দেওয়া হচ্ছে সেটা অন্য ব্যাপার। কিন্তু ভাই, বোনকে ভর্তার প্রণয়ের আধার করেন, এই ব্যাপারটি কী রকম ?

ভর্তা মানে স্বামী। এখানে বোনের স্বামীকে বোঝানো হয়েছে। তো ভাই, কিভাবে তার বোনকে, বোনের স্বামীর প্রণয়ের আধার করে বা করবে ? এই বিষয়টিতেই লুকিয়ে আছে হিন্দু পরিবারে মেয়েদের মর্যাদা বা অধিকারের বিষয়টি। বিয়ের সময় সাধ্যমতো গৃহসামগ্রী উপহার দিয়ে- ভাই, বোনের প্রতি এই দায়িত্বটি পালন রে, বোনকে অধিকার প্রদান করবে বা সম্মানিত করবে। যদিও বর্তমান সমাজে, বেদ বর্ণিত বোনের প্রতি ভাই এর এই দায়িত্ব, কন্যার পিতাই পালন করে থাকে, কিন্তু গুঢ় অর্থে এই দায়িত্বটি ভাইয়ের এবং বর্তমান সমাজে ভাইয়ের পক্ষ থেকে কন্যার পিতা তা পালন করে থাকে মাত্র; কেননা আগেই উল্লেখ করেছি, জন্মের পর পরই পিতার সমস্ত সম্পত্তির অধিকারী হয় পুত্র। এখন এই উপহার প্রদান করলে- বোন, তার স্বামীর প্রণয়ের আধার হয় কিভাবে ? এই ব্যাপারটা পুরোটাই মনস্তাত্ত্বিক; কারণ, এই ধরণের উপহার পেয়ে ছেলেরা খুশি হয় এবং যেহেতু স্ত্রীর মাধ্যমে সে এগুলো পেয়েছে, তাই স্ত্রীর প্রতি তার ভালোবাসা বেড়ে যায় অর্থাৎ বরের কাছে কনে প্রেমের পাত্রী হয়ে উঠে, যাকে বলা হয়েছে প্রণয়ের আধার। আর এটা তো সবাই জানে যে, যেখানে প্রণয় অর্থাৎ প্রেম থাকে সেখানে কোনো অশান্তি থাকে না। বেদ এর এই বাণী, হিন্দু সমাজের মেয়েদেরকে, স্বামীর সংসারে তাদের সুখকে নিশ্চিত করেছে।

এই উপহার প্রদানের প্রথাই এখনকার যৌতুক প্রথা, যেটা বর্তমান সমাজে নিন্দনীয় হলেও বহুল প্রচলিত; আর প্রচলিত এই কারণেই যে, এর সামাজিক উপযোগিতা রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বিয়ের সময় প্রতিটি মেয়েকে কিছু না কিছু মূল্যবান সামগ্রী, পিতার বাড়ি থেকে তাকে তার শশুরবাড়িতে নিয়ে যেতেই হয়, হোক সেটা শিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত চাকরি বা ঘর সাজানোর উপকরণ বা নগদ টাকা। না হলে সেই মেয়েকে তার শশুরবাড়িতে নানা কথা শুনতে হয়, ফলে সংসারে শুরু হয় অশান্তি হিন্দু মুনি-ঋষিরা এটা বুঝতেন বলেই এবং হিন্দু সমাজ যেহেতু বাস্তবতাকে মেনে চলে তাই এই ধরণের বিধান বেদ উল্লেখ করা হয়েছে।

পক্ষান্তরে ইসলামে শুধু যৌতুক প্রথা নিষিদ্ধই নয়, উল্টো মেয়েকে মোহরানার টাকা দিতে হয় যা স্পষ্টতঃ নারীশরীর কেনার সমতুল্য। কিন্তু বাংলার কয়জন মুসলিম ছেলে, তার স্ত্রীকে এই টাকা দেয় ? শুধু কাগজেই লিখা থাকে। এছাড়াও কয়জন মুসলিম ছেলে বিয়ের সময় শশুর বাড়ি থেকে কিছু পাওয়ার আশা করে না ? আশা অবশ্যই করে এবং এজন্যই প্রতিবছর বাংলাদেশে কয়েক শত মুসলিম মেয়ে যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয় এবং কেউ কেউ মারাও যায়। কিন্ত এই কয়েক শত এর মধ্যে একটি হিন্দু মেয়েও পাবেন না; কারণ, হিন্দুরা বাস্তবতা বোঝে, তাই তারা ইসলাম নামক এক অবাস্তব থিয়োরিতে বিশ্বাস রাখে না

যা হোক, আলোচ্য শ্লোকের শেষ বাক্যে বলা হয়েছে, “যদি পিতামাতা পুত্র কন্যা উভয়ই উৎপাদন করেন তা হলে তাদের মধ্যে একজন উৎকৃষ্ট ক্রিয়া কর্ম করেন, এর অন্যজন সম্মানিত হন।

এখানে বলা হয়েছে, যদি কোনো দম্পতির পুত্র এবং কন্যা উভয়ই থাকে, তাহলে পুত্র উৎকৃষ্ট ক্রিয়া কর্ম করে, এইউৎকৃষ্ট ক্রিয়া কর্মবলতে বোঝানো হয়েছে পিতা মাতার ভরণ-পোষণ এবং তাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া; বাক্যের শেষে, “এর অন্যজন সম্মানিত হনদ্বারা বিয়ের সময় মেয়েকে যে যথেষ্ট উপহার সামগ্রী দিয়ে বরপক্ষকে খুশি করে মেয়েকে শশুর বাড়ি পাঠাতে হবে, যেটা উপরে বললাম এবং মেয়েরা সবসময়ই যে পিতার বাড়িতে সম্মানীয় সেই কথা বলা হয়েছে

কিন্তু এই দুটি শ্লোকের মধ্যে মুসলমানরা খুঁজে পেয়েছে পিতার সাথে কন্যার সেক্স। ফেসবুকে একটা পোস্ট দেখেছিলাম, “যৌনানুভূতি আক্রান্ত মুসলিম সেই পোস্টে লেখক দেখিয়েছিলো মুসলমানরা সব কিছুর মধ্যেই সেক্সকে দেখতে পায়। এজন্যই বোধহয় বেদ এর এই শ্লোকের মধ্যেও তারা সেক্সকে দেখতে পেয়েছে। আবার এমনও হতে পারে ইসলামের ইতিহাসে যেহেতু পিতা-কন্যার সেক্স এর একটা ঘটনা আছে, সেই ঘটনার পাল্টা ঘটনা হিসেবে হিন্দু ধর্মেও এমন একটা ঘটনা আবিষ্কার করতে হবে, যাতে হিন্দুরা চাইলেও এই প্রসঙ্গে ধাক্কা দিয়ে ইসলামকে নিচে ফেলতে না পারে অথবা কাউন্টার এ্যাটাক করতে না পারে কিন্তু যে নিচেই পড়ে আছে তাকে ধাক্কা দিয়ে আর নিচে ফেলার দরকার হয় না, তার স্থান এমনিতেই নিচে

যা হোক, ইসলামে পিতা-কন্যার সেক্স এর ঘটনাটি হলো,

স্ত্রী মারা গেলে হযরত লুত তার বয়স্ক দুই কন্যার গর্ভে পুত্র উৎপাদন করেছিলো।”– জেনেসিস, ১৯/৩৩-৩৬

এই লুত ইসলামের সিনিয়র নবীদের একজন। যদিও তার মর্যাদা শেষ অর্থাৎ ছোটা নবী মুহম্মদের চেয়ে কম

এরপর সে কমেন্ট লিখেছে, “এছাড়া মা- ছেলে দূষ্কর্ম, এমন বিশ্রি বর্ণনা যেই গ্রন্থে তা কি করে সৃষ্টিকর্তার বাণী হতে পারে?” যেহেতু এর কোনো রেফারেন্স নেই, সেহেতু এটাকে রাস্তার পাগলা কুকুরের ঘেউ ঘেউ বলেই মনে করছি এবং এর জবাব দেবার প্রয়োজন বোধ করছি না।

জয় হিন্দ
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রী কৃষ্ণ

মন্তব্যসমূহ

  1. হায়রে গরু গাধা সৃষ্টিকর্তা ধর্ম দিলো,সত ও অসত পথ দিলো এখন যদি কেউ সে পথে না চলে তার জন্য পরকালে শাস্তির বিধান আছে। ধর্মের কি দোষ। মরনে পর জীবন আছে পাপ পুননের বিচার আছে এ কথা বিশ্বাস না থাকলে মানুষ অমানুষ হবে। এটা নিশ্চিত সত্য। আমরা গরু গাধা নই। আজে বাজে দলিল কোথায়। আমাদের দলিল আল্লার বানি কুরআন। আমাদের দলিল বাইবেল না। লুত নবীর রেফারেন্স কুরআনে দেখ রে গরু।

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. খানকির ছেলে হজরত মুহাম্মদ,বালের আল্লাহ

      মুছুন
    2. চায়নার তৈরী নরম প্লাস্টিকের শিবের সুন্দরী ত্রিনয়নী স্ত্রী বেশ্যা দেবী শ্রী দূর্গাকে নিয়ে হস্তমৈথুন করলে ভালো মজা পাইবি🤣👹😹

      মুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

পয়েন্ট টু পয়েন্ট : মুসলমানদের মিথ্যাচারের দাঁত ভাঙ্গা জবাব

পয়েন্ট টু পয়েন্ট : মুসলমানদের মিথ্যাচারের দাঁত ভাঙ্গা জবাব ফটো হিসেবে এই প্রবন্ধের সাথে যেটা যুক্ত করেছি , তার জবাব দেওয়া ই আমার এই পোস্টের উদ্দেশ্য। তাই কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক: ফটোপোস্টের শুরুতেই লিখা হয়েছে , “ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কোন প্রতিমা নেই , কোন প্রতিমূর্তি নেই , কোন প্রতিকৃতি নেই , কোন রূপক নেই , কোন ফটোগ্রাফ নেই , তাঁর কোন ভাস্কর্য নেই। ” এর রেফারেন্স হিসেবে লিখা হয়েছে , “ শ্বেতাসত্র উপনিষদ , অধ্যায় ৪ , পরিচ্ছেদ ১৯ এবং যযুর্বেদ অধ্যায় ৩২ , অনুচ্ছেদ ১৯। ” এবার দেখা যাক , সত্যিই সেখানে কী লিখা আছে এবং তার প্রকৃত অনুবাদটা কী ? রেফারেন্স হিসেবে প্রথম বইয়ের নাম লিখা হয়েছে , “ শ্বেতাসত্র উপনিষদ ”, কিন্তু এর নাম প্রকৃতপক্ষে “ শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ ”, লিখেছে তো কোনো এক মুসলমান , তার কাছ থেকে আপনি আর কত শুদ্ধ বানান আশা করতে পারেন ? রেফারেন্সের বাকি অংশে লিখা হয়েছে- “ অধ্যায় ৪ , পরিচ্ছেদ ১৯ ”, অধ্যায় ৪ ঠিক থাকলেও এই উপনিষদে অনুচ্ছেদ বলে কিছু হয় না , এটি হবে আসলে শ্লোক নং ১৯। শুধু এই রেফারেন্সেই নয় , প্রতিটি রেফারেন্সেই দেখবেন কিছু না কিছ

হিন্দুদের এত দেবতা, আসলে কোনটা বড় ?

হিন্দুদের এত দেবতা , আসলে কোনটা বড় ? এবং ইসলাম নাকি সবচেয়ে প্রাচীন ধর্ম ! উপরের এই দুটো প্রসঙ্গসহ মুসলমানদের করা আরো কিছু প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে জানতে চেয়ে ছিলো Pritam Das নামের আমার এক ফেসবুক বন্ধু। শুরুতেই দেখে নিন সেই প্রসঙ্গগুলো- মুসলমানরা বলে যে , একটা হাতির মুখ মানুষের শরীরে কি করে বসানো যায় ? কী যুক্তি আছে এটার পেছনে ? আর সেইটাকে তোমরা হিন্দুরা আবার পূজাও করো! আবার সেই গনেশের একটা কলা গাছ বউও আছে। তারপর হুনুমান কী করে উড়তে পারে ? কী করে একাই একটা লংকা জ্বালিয়ে দিতে পারে ? এছাড়াও বলে যে ইসলাম নাকি পৃথিবীর প্রাচীন ধর্ম , হিন্দু ধর্ম অনেক পরে এসেছে। পৃথিবী কবে শেষ হবে তা নাকি ওদের কোরানে লেখা আছে। আর মাঝে মধ্যে প্রায় জিজ্ঞেস করে হিন্দুদের এত দেবতা , আসলে কোনটা বড় ? কোনো না কোনো তো একটা বড় দেবতা হয়েই যায়। সবাই তো এক দেবতা পূজা করে না। কেউ কেউ তো আলাদা পূজা করে , তাহলে হিন্দুদের মধ্যে দেবতা নিয়ে একতার অভাব। ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি... এবার দেখুন আমার জবাব: মুসলমানরা হিন্দুদেরকে ধর্ম বিষয়ে নানা প্রশ্ন করে বিব্রত করে , ঠিকঠাক সেই প্রশ্নগুলোর জবাব দিতে না