সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ভগবানকে জন্মের পরে জেল থেকে পালাতে হল কেন ? সামান্য এক ব্যাধএর তীরে , সেপটিক হয়ে মারা যায় যে লোক --- সে ভগবান ?



ভগবানকে জন্মের পরে জেল থেকে পালাতে হল কেন ? সামান্য এক ব্যাধএর তীরে , সেপটিক হয়ে মারা যায় যে লোক --- সে ভগবান ?”


ঠিক এই দুটি প্রশ্নসহ শ্রীকৃষ্ণ ও হিন্দুধর্ম সম্পর্কে অসংখ্য আপত্তিকর কথাবার্তা বলেছে Nimaipada Biswas নামের এক উন্মাদ; তার কমেন্টটা অনেক বড়, অনেক প্রশ্ন ও প্রসঙ্গ তাতে, সব প্রশ্নের উত্তর একবারে দিলে তা ছোটোখাটে একটা মহভারত হয়ে যাবে। তাই এই পোস্টে শুধু উপরের দুটি প্রশ্নসহ তার করা কৃষ্ণ সংক্রান্ত কটূক্তিগুলোর জবাব দিচ্ছি। পরবর্তী পোস্টগুলোতে তার অন্যান্য প্রশ্নের জবাব পয়েন্ট টু পয়েন্ট দেবো। শুরুতেই দেখে নিন কৃষ্ণ সম্পর্কে করা তার মন্তব্যগুলো-

চরিত্রহীন কৃষ্ণ ( মেয়েদের/ মামীকে নিয়ে যৌন কেলেংকারী -- যেটা " শ্রীকৃষ্ণকীর্তন " কাব্যে প্রমাণিত) যা বলেছে , সেটা মেনে নিতে হবে ?? " কৃষ্ণস্তু ভগবান স্বয়ম্ " কে জানালো , কিভাবে সে জানতে পারলো ? ভগবানকে জন্মের পরে জেল থেকে পালাতে হল কেন ? বৃন্দাবনে মেয়েদের যখন সামলাতে পারলো না , তখন ১০০০ মাইল দূর দ্বারকায় পালাতে হল কেনো ? সামান্য এক ব্যাধএর তীরে , সেপটিক হয়ে মারা যায় যে লোক --- সে ভগবান ?”

এবার দেখুন আমার জবাব, কৃষ্ণ সম্পর্কে তার প্রথম কটূক্তি হলো-

চরিত্রহীন কৃষ্ণ ( মেয়েদের/ মামীকে নিয়ে যৌন কেলেংকারী -- যেটা " শ্রীকৃষ্ণকীর্তন " কাব্যে প্রমাণিত) যা বলেছে , সেটা মেনে নিতে হবে ??”

কৃষ্ণ কিন্তু কোরানের সন্ত্রাসী আল্লার মতো বলে নি যে, আমাকে ভয় করো, আমাকে বিশ্বাস করো, বিশ্বাস না করলে দোযখের আগুনে পুড়িয়ে মারবো ইত্যাদি ইত্যাদি। কৃষ্ণ শুধু বলেছে আমাকে ভজনা করো তাহলে তোমরা মোক্ষ লাভ করতে পারবে। কৃষ্ণের তো এমন কোনো আদেশ নেই যে, তার কথা সকলকে মেনেই চলতে হবে; তো আপনাকে মানতে কে বলেছে ? আচ্ছা, আপনার তো বয়স ৬৫, ঘরে নিশ্চয় বউ ছেলে মেয়ে আছে ? তাহলে তাদের সাথেইঘরে বসে ঝগড়া করুন না, নেট-ফেসবুকে এসে, পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া আপনাকে করতে কে বলেছে ?

হিন্দুধর্মে ডক্টরেট করা আমাদের এই ডক্টরেট সাহেবের কাছে- কৃষ্ণ, চরিত্রহীন; তার প্রমান হিসেবে সে শ্রীকৃষ্ণকীর্তনকাব্যের কথা উল্লেখ করেছে। আমি বুঝতে পারছি তার বিদ্যার দৌড় কতদূর, একটু পর নিশ্চয় আপনাদেরকেও তা বোঝাতে পারবো।

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের প্রথম সাহিত্যিক নিদর্শন। এই হিসেবে এই কাব্যটি বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাংলা সাহিত্যের অনার্স লেভেলে বেশ গুরুত্ব দিয়ে পড়ানো হয় এবং বেশ রসিয়ে রসিয়েও পড়ানো হয়- এই কারণে যে, এই গ্রন্থে আদিরস মানে কামরসের ছড়াছড়ি এবং কৃষ্ণ এখানে সম্পূর্ণ লম্পট চরিত্র, যার মাধ্যমে খুব সহজেই বাংলাদেশের হিন্দু সমাজকে হেয় করা যায়, ক্লাসে হিন্দু ছাত্র-ছা্ত্রী থাকলে তাদের মধ্যে হিন্দু ধর্মের এই প্রধান পুরুষ সম্পর্কে নেগেটিভ চিন্তা ঢুকিয়ে দেওয়া যায়, ফলে ধর্মান্তর অনেক সহজ হয়।

এই কাব্য পড়ার পর আমি নিজেই আমার মাকে বলেছিলাম, কৃষ্ণ তো একটা লম্পট। আমার মা কৃষ্ণভক্ত হলেও তো অশিক্ষিত, সে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছেলেকে কী জবাব দেবে ? তাই শুনে চুপ করে ছিলো। আমি যখন কৃষ্ণ সম্পর্কে এই ধারণা ব্যক্ত করেছিলাম, সেটা ছিলো আমার অনার্স ফার্স্ট ইয়ার। নিশ্চয় সেই সময় কৃষ্ণ সম্পর্কে আমার জ্ঞান কম ছিলো, যাকে বলে অল্পবিদ্যা। আর প্রবাদই তো আছে অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী। এরপর কৃষ্ণ সম্পর্কে যত জেনেছি- ততই অবাক হয়েছি এটা ভেবে যে, কৃষ্ণ সম্পর্কে কত মিথ্যা তথ্য সমাজে প্রচলিত, আর আমাদের ধর্মগুরুদের উদাসীনতায় সেগুলো কিভাবে ডালপালা মেলে ঘুরে বেড়া্চ্ছে! যা হোক অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে কৃষ্ণ সম্পর্কে আমার ধারণা ছিলো রকম, তার কারণ কৃষ্ণ সম্পর্কে- ভাগবত, মহভারত- যেটা কৃষ্ণের প্রামান্য জীবনী তাতে কী বলা্ আছে, সেটা আমি জানতাম না। কিন্তু হিন্দু ধর্ম বিষয়ে ডক্টরেট করা লোকের জ্ঞানও যে ঐ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য পর্যন্ত, এটা তো খুবই ভয়ংকর কথা! এখন তো মনে হচ্ছে প্রবাদ পাল্টে ফেলে বলতে হবে - ডক্টরেট বিদ্যা ভয়ংকরী!

শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য লিখেছে বড়ুচন্ডীদাস নামের এক কবি। কিন্তু নিজে হিন্দু হয়েও হিন্দু ধর্মের প্রধান পুরুষ শ্রীকৃষ্ণকে নিয়ে সে এরকম একটি কাব্য কেনো লিখলো, সেটা বুঝতে হলে ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের প্রেক্ষাপটটা আপনাকে আগে ভালোভাবে বুঝতে হবে।

মধ্যযুগের সব মুসলিম শাসকদের সভায় হিন্দু কবি ছিলো। ইসলামে যেহেতু কবিতা লিখা নিষেধ, তাই কোনো মুসলমানকে কবিতা লিখতে বলে বা তার কাব্য প্রতিভাকে বিকশিত করে, কোনো মুসলমান শাসক পাপের ভাগী হতে চাইতো না। এজন্য মুসলিম শাসকদের শাসন কার্যের কোথাও হিন্দুদের কোনো জায়গা না হলেও এবং তারা পাইকারিভাবে জোর জবরদস্তি করে সাধারণ গরীব হিন্দুদের মুসলমান বানালেও বা বানাতে চেষ্টা করলেও, জিজিয়া করের জন্য ধনী হিন্দুদের এবং কোনো কোনো মুসলিম শাসক ব্রাহ্মণ টাইপের জ্ঞানী হিন্দু পণ্ডিতদের হিন্দুত্ব টিকিয়ে রাখতো রাজসভায় কাব্য আলোচনা এবং তা থেকে রস আস্বাদনের জন্য। এভাবে যে সব হিন্দু, রাজসভায় কবি হিসেবে নিয়োগ পেতো, ধর্মের উপর জোর জবরদস্তি না করার জন্য তারা মুসলমান শাসকদের উপর থাকতো খুবই কৃতজ্ঞ এবং অনুগত। এই কবিদেরকে, তাদের পৃষ্ঠপোষক মুসলমান শাসকের ফরমায়েশ এবং পছন্দ অনুযায়ী কবিতা লিখতে হতো। এই পছন্দকে পাত্তা দিতে গিয়ে এবং মুসলমান শাসকদেরকে খুশি করতে গিয়েই হিন্দু কবিরা তাদের ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় হিন্দু ধর্মের মূল গ্রন্থগুলো সংস্কৃত থেকে বাংলায় অনুবাদ করার সময় বিকৃত করেছে। কারণ, ঐ কবিদের পৃষ্ঠপোষক, মুসলমান শাসকদের খুশির উপরই নির্ভর ছিলো ঐ সব দুর্বল বেতন ভোগী হিন্দু কবিদের জীবন জীবিকা।

একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন, বাংলা সাহিত্যের যত হিন্দু ধর্মীয় পুস্তক, সংস্কৃত থেকে বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে, তার প্রায় সবগুলোই করা হয়েছে, মধ্যযুগের এই মুসলিম শাসনের সময়। এই প্রেক্ষাপটে ১৩৫০ থেকে ১৪০০ সালের মধ্যে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য লেখা। এখন আপনিই বলুন এই কাব্যে কৃষ্ণ চরিত্র লম্পট হবে না কেনো ? আর আমাদের ডক্টরেট সাহেবের কাছে, কৃষ্ণ চরিত্র মূল্যায়নের জন্য- মহাভারত নয়, ভাগবত নয়- এই শ্রীকৃষ্ণকীর্তনকাব্যই হলো প্রামান্য গ্রন্থ, যার লেখক বড়ু চণ্ডীদাস হিন্দু ধর্মের কোনো দায়িত্বশীল সাধু-সন্ন্যাসী-গুরু নয়, শুধু একজন সস্তা কবি, যার উদ্দেশ্য ছিলো মার্কেট ধরা, কারণ এই কাব্য আসলে একটি যাত্রাপালা, যা অভিনয়ের জন্য লেখা হয়েছিলো, সেই সস্তা কাব্যকে ভিত্তি করে ডক্টরেট সাহেব তার সিদ্ধান্তে পৌঁছে গেছে; আমি তো ভেবে অবাক হচ্ছি, এই লোককে ডক্টরেট ডিগ্রী দিলোটা কে ?

 আশা করছি ডক্টরেট সাহেবের বিদ্যার দৌড়টা সবাইকে বোঝাতে পেরেছি।
ডক্টর Nimaipada Biswas এর কাছে- কৃষ্ণ, চরিত্রহীন; কারণ, মেয়েদের সাথে, মামীর সাথে তার যৌন কেলেংকারী।

কৃষ্ণ সম্পর্কে যার জ্ঞান শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য পর্যন্ত সীমাবদ্ধ, তার জানার পরিধি আর কত বেশি হবে ? কুয়ার ব্যাঙ পৃথিবীর আর কতটুকু দেখতে পায় ? এখানে ডক্টর পদ এর মূল টার্গেট হলো রাধা, এখন দেখা যাক কৃষ্ণের জীবনে রাধার ব্যপারটা আসলে কী ?

মূল মহাভারত, চার বেদ, ১২ টি উপনিষদ, ১০৮টি উপ উপনিষদ, ৬টি মহাপুরান, ১৮টি উপপুরান এবং গীতার ১৮টি অধ্যায়ের ৭০০ শ্লোক কোথাও রাধার কোনো উল্লেখ নেই। এই সমস্ত বিষয়, বিচার-বিশ্লেষণ করে, সাহিত্য সম্রাট ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র, তার "কৃষ্ণ চরিত্র" গ্রন্থে এক বিশাল প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেছেন,

"
তাহা হইলে, এই রাধা আসিলেন কোথা হইতে ?

এই রাধা আসিলেন, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরানের মতো কিছু অর্বাচীন বা নতুন পুরানে, বৈষ্ণব পদাবলীতে এবং শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যে; এই সাহিত্যগুলো সৃষ্টির সময় মুসলিম শাসন আমল, এখন শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য রচনার যে প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেছি তার সাথে রাধার আগমনের বিষয়টি মিলিয়ে দেখুন, বুঝতে পারবেন কেনো রাধাকে আবিষ্কার করা হয়েছে আর কেনো কৃষ্ণকে লম্পট বানানো হয়েছে ? যার ভিত্তিতে ডক্টর পাদের কাছে কৃষ্ণ হয়েছে চরিত্রহীন!

কৃষ্ণের এই চরিত্রহীনতার পেছনে মূল কারণ হিসেবে ডক্টর পদ উল্লেখ করেছে মেয়েদের সাথে বিশেষ করে রাধা, যে নাকি কৃষ্ণের মামী তার সাথে কৃষ্ণের সম্পর্ককে। যদিও মহাভারতে রাধার উল্লেখ নেই, তবুও রাধা আছে এটা ধরে নিয়ে এবার বায়োলজির দৃষ্টিতে বিষয়টি এ্যানালাইসিস করা যাক:

কৃষ্ণের বেড়ে উঠার স্থান, গোকুলের পাশের বৃন্দাবনে, কৃষ্ণের ৭ বছর বয়সের সময় রাধার সাথে তার দেখা হয় এবং কৃষ্ণের ১০ বছর ২ মাস বয়সের সময়, কৃষ্ণ, কংসকে হত্যা করার জন্য গোকূল-বৃন্দাবনের সকল মায়া ত্যাগ করে মথুরা চলে যায়। পরে কৃষ্ণ আর কোনোদিন বৃন্দাবনে যায় নি, আর রাধার সাথে তার দেখাও হয় নি। রাধা, কৃষ্ণের সমবয়সী হলেও ৭ থেকে ১০ বছরের মধ্যে দুজনের দেখা সাক্ষাৎ। এই বয়সে দুজনে বালক বালিকার মধ্যে প্রেম-যৌনতার অনুভূতি কাজ করবে, না খেলার অনুভূতি কাজ করবে ? ১০ বছর বয়সে কোনো মেয়ের ঋতুচক্রও শুরু হয় না, আর ইস্টোজেন হরমোনের প্রভাবে ঋতুচক্র শুরু না হলে কোনো মেয়ের মধ্যে প্রেমের অনুভুতি জাগতেই পারে না, যেমন টেস্টোস্টেরন হরমোনের প্রভাবে কেনো ছেলের শরীরে বীর্যের উৎপত্তি না হলে, তার মধ্যেও প্রেমের অনুভূতির সৃষ্টি হবে না। খুব এ্যাডভান্স হলেও একটি মেয়ের প্রেমে পড়তে বয়স হতে হবে কমপক্ষে ১৪/১৫ এবং ছেলের ১৭/১৮। রাধা কৃষ্ণের প্রেমের ক্ষেত্রে এই বাইলোজিক্যাল সায়েন্সও কি মেলে ?

মহাভারতের এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট যে, রাধা নামের কোনো মেয়ে কৃষ্ণের বাল্যকালের খেলার সাথী থাকলেও, ১০ বছর বয়সে কৃষ্ণের সাথে তার বিচ্ছেদ হয়েছে এবং পরে তার সাথে আর দেখাই হয় নি। ১০ বছর বয়সী কোনো মেয়ের মধ্যে যে প্রেম ও যৌনানুভূতি থাকে না, সেটা তো বিজ্ঞান দিয়েই প্রমান করে দিলাম। এখন ডক্টর সাহেব বলুন, এরপরও কি কৃষ্ণের সাথের রাধার এবং তার সখীদের প্রেম ও যৌনতার বিষটি কি আপনার কাছে কাল্পনিক মনে হয় না ? নাকি আপনার জীবনে ১০ বছর বয়সের আগে এইরকম যৌন সংক্রান্ত কোনো ঘটনা ঘটেছে বা নিজের ছেলে মেয়েদের মধ্যে এমন কিছু দেখেছেন ? কিসের ভিত্তিতে ১০ বছর বয়সী একটা ছেলেকে আপনার চরিত্রহীন মনে হচ্ছে ? মহাভারত, ভাগবতে রাধাই যেহেতু নেই, সেই রাধা, কৃষ্ণের মামী কিনা সেই প্রশ্নটি ই তো অবান্তর। এখানে প্রশ্ন আসতে পারে রাধা না থাকলে রাধার সাথে কৃষ্ণকে নিয়ে এত কথা কাহিনী কেনো ?

বাল্যকালে কৃষ্ণের অনেক খেলার সাথীদের মধ্যে হয়তো রাধা বলে কেউ থাকলে থাকতে পারে, কিন্তু কৃষ্ণের ১০ বছর বয়সের পর যেহেতু তার জীবনে রাধার কোনো ভূমিকা নেই, সেহেতু মহাভারত ভাগবতে রাধার উল্লেখ হয় নি। কৃষ্ণ, যত লোক ছেলে মেয়েদের সাথে বাল্যকালে খেলা-ধূলা করেছে, সবার নাম কি ভাগবত মহাভারতে উল্লেখ হয়েছে ? কৃষ্ণ গোকূল বৃন্দাবন ছেড়ে যাওয়ার কয়েক বছর পর হয়তো যৌবনবতী রাধার মধ্যে কৃষ্ণের জন্য প্রেম জেগে উঠে এবং তাকে নিয়ে বৃন্দাবনে নানা গল্প তৈরি হতে থাকে। পরবর্তীতে এই গল্পগুলোকে বেজ করেই আমাদের হিন্দু কবিরা মধ্যযুগের মুসলিম শাসনের সময় মুসলিম শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় রাধা ও কৃষ্ণকে নিয়ে নানা গল্প কাহিনী তৈরি করেছে। এ বিষয়ে শুধু একটা তথ্যই মনে রাখবেন, রাধা যদি থেকেই থাকে তাহলে হিন্দুধর্মের প্রাচীন গ্রন্থগুলোতে রাধার উল্লেখ নেই কেনো আর কেনোই বা শুধু মধ্যযুগের সাহিত্যেই রাধার অস্তিত্ব আবিষ্কৃত হচ্ছে ? আর একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন, ভারতে মুসলিম শাসনের আগের তৈরি করা কোনো মূর্তি বা ছবিতে কৃষ্ণের পাশে আপনি রাধাকে পাবেন না।

এ দুটো বিষয় মেলালেই বুঝতে পারবেন কৃষ্ণ চরিত্রকে লম্পট বানিয়ে হিন্দু সমাজকে ধ্বংস করার জন্য এ ছিলো মুসলিম শাসকদের একটা সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্র। আর এ ষড়যন্ত্র যে কিছুটা হলেও সফল তা তো ডক্টর সাহেবের কমেন্ট দেখেই বুঝতে পারছেন। হিন্দু পরিবারে জন্ম নিয়ে হিন্দু ধর্ম ও সংস্কৃতিকে রক্ষার চেষ্টা না করে সে আজ উঠে পড়ে লেগেছে হিন্দু ধর্মকে ধ্বংস করতে, তাই খোলা ময়দানে এসে হিন্দু ধর্মের সমালোচনা করছে, কৃষ্ণকে বলছে চরিত্রহীন, কৃষ্ণের নাম নিতেও তার নাকি ঘৃণা হয়। যা হোক, পর্বতের ওজনের বিষয়ে মতামত দেওয়ার কাজ মূষিকের নয়। এখন আমি ডক্টর সাহেবের কাছে জানতে চাই, আপনার কি এখনও মনে হয় ১০ বছর বয়সী একটা ছেলে, যার মাথায় কাজ করছিলো রাজনৈতিক চিন্তা- কংসকে হত্যা করে পিতা-মাতাকে উদ্ধারের এবং অনাচার দূর করে রাজ্যে ধর্মপ্রতিষ্ঠার, সেই ছেলে রাধা নামের কোনো মেয়ের সাথে যৌনলীলায় ব্যস্ত ছিলো ? যৌনতাই যদি তার লক্ষ্য ছিলো, তাহলে সে বৃন্দাবনের এই মধুভাণ্ড ছেড়ে চলে গেলো কেনো ? এই প্রশ্নের অদ্ভূত বিকৃত ব্যাখ্যাও ডক্টর সাহেবের কাছে আছে, কেননা তিনি প্রশ্ন তুলেছেন,

বৃন্দাবনে মেয়েদের যখন সামলাতে পারলো না , তখন ১০০০ মাইল দূর দ্বারকায় পালাতে হল কেনো ?”

আপনি একবার বলছেন, কৃষ্ণ লম্পট, আবার বলছেন মেয়েদের সামলাতে পারলো না, ব্যাপারটা কি স্ববিরোধী হয়ে গেলো না ? কৃষ্ণ যদি লম্পটই হয় তাহলে মেয়েদের ছেড়ে পালাবে কেনো ? কেননা, লম্পটদের মধ্যে ভোগ আকাঙ্ক্ষা, যৌনক্ষমতা এবং তার প্রয়োগ করার ক্ষমতা- তাদের মধ্যে থাকে বলেই তো তারা লম্পট। আর যদি পালায় ই তাহলে সে লম্পট হবে কেনো ? কৃষ্ণ বৃন্দাবন ছেড়ে দ্বারকায় নয়, গিয়েছিলো মথুরায়, তার মামা কংসকে হত্যা করে তার মা বাবাকে উদ্ধার করতে। এটা কৃষ্ণের প্রামান্য জীবনী গ্রন্থ ভাগবত ও মহাভারতের সাক্ষ্য। কিসের ভিত্তিতে ডক্টর সাহেব বৃন্দাবন থেকে কৃষ্ণের পালানোর কথা বলছে, তা তার কাছে জানতে চাই। আর এই বৃন্দাবন থেকে মথুরা ১০০০ মাইল দূরে নয়, মাত্র ১৫/১৬ কি.মি। যারা মথুরা বৃন্দাবনে যান নি, এই দুই জায়গার দূরত্ব বোঝার জন্য তাদেরকে একটা ক্লু দিচ্ছি; স্মরণ করুন, কৃষ্ণের জন্মের রাতে কৃষ্ণের বাবা বসুদেব একরাতের মধ্যে পায়ে হেঁটে কৃষ্ণকে গোকূলে রেখে আবার মথুরায় ফিরে গিয়েছিলো। কৃষ্ণ গোকূলেই বড় হয়েছিলো আর তার পাশের জনপদই ছিলো বৃন্দাবন। তাহলে বৃন্দাবন থেকে মথূরা আর কত দূরে ?

পোস্টের শিরোনামে এই লোককে আমি কেনো উন্মাদ বলেছি, এবার তার ব্যাখা দিই।

কম জানা লোককে পগাল বলা হয় না, পাগল বলা হয় যুক্তি এবং সঠিক তথ্য ছাড়া যে লোক কথা বলে, তাকে। ইতোমধ্যে নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন তার যুক্তি ও তথ্যের অবস্থা। এখন একটি গল্প শুনুন। গল্পটি অনেকের শোনাও থাকতে পারে:

চৈত্র মাসে এক লোকের গরু হারিয়ে গেছে। বাংলায় চৈত্র মাসে কেমন রোদ হয় সবাই জানেন। লোকটি দুপুরের রোদে গরু খুঁজতে খুঁজতে একেবারে হয়রান হয়ে গেছে, তবু গরু পায় নি। এই অবস্থায় সে বাড়ি এসে ঘরের বারান্দায় বসে তার ছেলেকে বলছে- ভাই, এক গ্লাস জল দে । এটা শুনে তার স্ত্রী তাকে বলছে, মিনশের কথা শোন, ছাওয়ালেক কচ্ছে ভাই। এর জবাবে লোকটি তখন তার স্ত্রীকে বলেছে, চোত মাসে গরু হারালে এমনি হয় মা। হাসি পেলেও গল্পটি মনে রেখে এবার নিচের প্যারাটা দেখুন-

যেকোনো বিষয়ে ডক্টরেট করতে হলে থিসিস মানে গবেষণা করতে হয়। এই গবেষণা করে আপনি যদি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নতুন কোনো কিছু আবিষ্কার বা উদঘাটন করতে পারেন, যা আগে কেউ জানতো না, তাহলেই কেবল আপনি ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করবেন বা পি.এইচ.ডি ডিগ্রী পাবেন। Ph.D এর মানে হচ্ছে ডক্টর অব ফিলোসপি। ফিলোসপি মানে দর্শন আর ডক্টর মানে বিশারদ। তার মানে পি.এইচ.ডি এর পূর্ণ বাংলা অর্থ হলো দর্শনের বিশারদ। সহজ কথায় জাতিকে আপনি নতুন কিছু দেখিয়েছেন বলেই আপনি পি.এইচ.ডি হোল্ডার। এই পি.এইচ.ডি এর মূল বিষয় গবেষণা। এখন গবেষণা শব্দটির সন্ধি বিচ্ছেদ দেখুন, গো+ এষণা = গবেষণা। গোমানে গরু আর এষণামানে সন্ধান করা বা খোঁজা। সহজ কথায় গবেষণা মানে গরু খোঁজা। এখন গরু খুঁজতে গেলে যে কী অবস্থা হয়, তা তো উপরেই গল্পেই বুঝিয়েছি। সব ডক্টরেট এর অবস্থা হয়তো এরকম হয় না, কিন্তু ডক্টর Nimaipada Biswas এর অবস্থা যে উপরের গল্পের ঐ লোকের মতো তাতে কোনো সন্দেহ নেই, এজন্য শিরোনামেই উনাকে বলেছি উন্মাদ।

কৃষ্ণের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর, তার পরের প্রশ্ন হলো, " কৃষ্ণস্তু ভগবান স্বয়ম্ " কে জানালো , কিভাবে সে জানতে পারলো ?"

কৃষ্ণস্তু ভগবান স্বয়ম্এই কথাটির মানে হলো কৃষ্ণ স্বয়ং ভগবানকিন্তু ডক্টর পদের প্রশ্ন হলো কৃষ্ণ কিভাবে জানলো যে সে ভগবান ?

যখন কোনো মানব শিশু জন্ম নেয় তখন সে কি বুঝতে পারে যে, সে মেয়ে না ছেলে হয়ে জন্মেছে ? ৩/৪ বছর বয়সে যখন শিশুর দেখে কিছু বোঝার ক্ষমতা হয়, তখন সে সাধারণভাবে দেখার সুযোগ থাকলে, নিজের নুনু আছে কি নেই, তার ভিত্তিতে নিজেকে অন্যের থেকে আলাদা করতে শেখে এবং এরপর পোষাকের ভিত্তিতে বড়দের কাছ থেকে সে জানতে পারে সে আসলে ছেলে না মেয়ে। কিন্তু তখনও সে জানে না প্রকৃতপক্ষে ছেলে কী বা মেয়ে কী ? প্রকৃতপক্ষে মানবশরীরে যখন সেক্স হরমোনগুলো কাজ শুরু করে, এর প্রভাবে শরীর যখন জেগে উঠে, তখনই একটি মানব সন্তান নিজেকে পুরুষ বা মেয়ে হিসেবে বুঝতে পারে বা বলা যায় নিজেকে আবিষ্কার করে। এই যে বোধ, এই বোধের ব্যাপারগুলি কি কেউ তাকে বলে দেয়, না সে নিজের থেকেই আস্তে আস্তে বুঝতে শিখে ?

কংস যখন জানতে পারে যে দেবকীর অষ্টম সন্তান কৃষ্ণ গোকূলে বড় হচ্ছে, তখন সে এক রাক্ষসীকে ছদ্মবেশে পাঠায় কৃষ্ণকে হত্যা করতে। কিন্তু সেই রাক্ষসী পুতনা, কৃষ্ণের হাতে মারা পড়ে। মহাভারতে বিরাট রাজার সভায় দ্রৌপদীর এক ছেলের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে কৃষ্ণ বলেছিলো, “কারো কোনো অলৌকিক ক্ষমতা নেই, কেউ অলৌকিক কিছু ঘটাতে পারে না, যথন প্রয়োজন হয়, প্রকৃতি নিজেই অলৌকিক ঘটনা ঘটায়।যখন রাক্ষসী পুতনাকে কৃষ্ণ নিজে হত্যা করতে পারলো, মাত্র সাড়ে তিন বছর বয়সে যমুনার জলে ঝাঁপ দিয়ে কালীয় নাগের মতো একটি ভয়ংকর বিষধর সাপকে দমন করতে পারলো, মাত্র ৭/৮ বছর বয়সে হাতের এক আঙ্গুলের উপর একটা আস্ত পর্বতকে তুলে ধরতে পারলো, এই ঘটনায় দেবরাজ ইন্দ্র কৃ্ষ্ণের কাছে পরাজিত হন এবং বশ্যতা স্বীকার করেন। এই সব ঘটনা যার সামনে ঘটতে থাকে তার কি বোঝার আর বাকি থাকে যে সে কী ? আপনার নিজেকে কখন দেশের প্রধানমন্ত্রী বলে মনে হবে ? যখন তিন বাহিনী প্রধান আপনাকে এসে স্যালুট করবে এবং সমস্ত প্রশাসন আপনার কথামতো কাজ করবে, তখনই আপনার মধ্যে এই বোধ আসবে যে আপনি দেশের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী, প্রধানমন্ত্রী। এটা আসলে উপলব্ধির ব্যাপার যে আসলে আমি কী ? এই উপলব্ধি থেকেই শ্রীকৃষ্ণ গীতার জ্ঞান দানের সময় অর্জুনকে বলেছেন, আমিই জগতের পিতা। আর কৃষ্ণের সমগ্র জীবনী পর্যালোচনা করে ঋষি বঙ্কিম চন্দ্র তার কৃষ্ণচরিত্রগ্রন্থে এই মত ব্যক্ত করেছেন যে, “কৃষ্ণস্তু ভগবান স্বয়ম্অর্থাৎ কৃষ্ণই স্বয়ং ভগবান।

কৃষ্ণ সম্পর্কে তার প্রধান দুটি প্রশ্ন হলো-

ভগবানকে জন্মের পরে জেল থেকে পালাতে হল কেন ? সামান্য এক ব্যাধ এর তীরে , সেপটিক হয়ে মারা যায় যে লোক --- সে ভগবান ?”

সদ্যজাত এক শিশু নাকি জন্মের পর জেল থেকে পালিয়েছে ? এই লোক সম্ভবত মক্কা থেকে মদীনায় মুহম্মদের পালানোর ঘটনাকে কাউন্টার এ্যাটাক করতে চাইছে এই কথা বলে। কারণ এই লোক মানবধর্মের জয়গান গাওয়ার চেষ্টা করলেও সে যে আসলে ইসলামকে ডিফেন্ড করার চেষ্টা করছে তার অনেক প্রমান তার কমেন্টে আছে। প্রসঙ্গ অনুযায়ী সেগুলো আপনাদের সামনে আমি পেশ করবো।

কৃষ্ণকে নিয়ে তার পিতা বসুদেব যখন জেল থেকে বের হয়, তখন না ছিলো কৃষ্ণের বলার ক্ষমতা, না ছিলো তার চলার ক্ষমতা, সে পালাবে কিভাবে ? স্বয়ং ঈশ্বর হলেও সে তো মানুষ হিসেবে জন্ম নিয়েছে, তাই প্রকৃতির নিয়ম তাকে মানতেই হবে। চলতে বা বলতে না পারলেও তার তো মনের শক্তি ছিলো এবং মানুষের মন বোঝারও ক্ষমতা ছিলো, জন্মের রাতে কৃষ্ণ ঠিক তার সেই ক্ষমতাটাকেই কাজে লাগিয়েছিলো।

কংসের হাতে আগের ৬ টি সন্তানের নির্মম মৃত্যু, বসুদেব ও দেবকীকে ভাবিয়ে তুলেছিলো তাদের অষ্টম সন্তানের বেঁচে থাকার ব্যাপারেও। বসুদেব ও দেবকী যখন তাদের সদ্যজাত সন্তানের জীবন বাঁচানোর ভাবনায় দিশেহারা, তখন তাদের মনের অবস্থা বুঝতে পেরে কৃষ্ণ নিজেই তাদেরকে চিন্তা মুক্ত করার ব্যবস্থা করে, অটোমেটিক্যালি জেলের বিশাল তালা খুলে যায়, বসুদের বাইরে এসে দেখে সব প্রহরী ঘুমন্ত, তখনই তার মাথায় আসে কৃষ্ণকে অন্য জায়গায় রেখে আসার ব্যাপারটা এবং দ্রুত সদ্যজাত সন্তানকে নিয়ে জেলের বাইরে এসে যমুনা পার হয়ে গোকূলে তার বন্ধু নন্দের কাছে আসে কৃষ্ণকে লুকিয়ে রাখার জন্য। কিন্তু ঘটনাচক্রে সেই দিনই নন্দের স্ত্রীও এক সন্তান প্রসব করে। নন্দ বুঝতে পেরেছিলো যে, কৃষ্ণকে তার কাছে লুকিয়ে রেখে সে পার পাবে না; কারণ দেবকীর গর্ভের সদ্যজাত সন্তান কোথায় গেলো, এই প্রশ্নের উত্তর কংস অবশ্যই খুঁজে বের করবেই এবং তারা ধরা পড়ে যাবে, তখন কারোরই প্রাণ রক্ষা পাবে না।

এই ভাবনা থেকেই নন্দ, তার সদ্যজাত মেয়েকে বসুদেবের হাতে তুলে দেয়, যাতে কারাগারে ফিরে যাওয়ার পর বসুদের এটা প্রমান করতে পারে যে, দেবকীর ছেলে নয় মেয়ে হয়েছে, তাহলে হয়তো কংস তা বিশ্বাস করবে এবং কৃ্ষ্ণের জীবন রক্ষা পাবে। খেয়াল করুন, বসুদেব কিন্তু জানতোই না যে নন্দের স্ত্রী সেই রাতেই একটা কন্যা সন্তান প্রসব করেছে; কারণ, সে তো বহু বছর ধরে জেলে আটকা, সে বাইরের পৃথিবীর খবর জানবে কিভাবে ? কৃষ্ণের জন্মের পর সেই রাতে যা ঘটেছে সবই আনপ্ল্যান্ড। কিন্তু পালানোর জন্য পরিকল্পনা লাগে। যেমন মুহম্মদ মক্কা থেকে মদীনায় পালানোর প্ল্যান করেছিলো ২/৩ বছর আগে থেকে। এটা সত্য যে, জন্মের রাতে যা ঘটেছে তা কৃ্ষ্ণের ইচ্ছাতেই হয়েছে, কিন্তু সদ্যজাত মানব সন্তানের দৈহিক বৈশিষ্ট্যের ক্ষমতা অনুযায়ী কৃষ্ণের নিজের কিছু করার ক্ষমতা ছিলো না, আর সে এ্যাকটিভ হয়ে ফিজিক্যালি কিছু করেও নি। তাহলে কৃষ্ণ জেল থেকে পালালো কিভাবে ?

Nimaipada Biswas
কে বলছি, আপনাকে যদি চড় মেরে অজ্ঞান করা হয়, আর তার পর আপনাকে বাঁচানোর জন্য কেউ যদি আপনাকে হসপিটালে নিয়ে যায়, তাহলে আপনি নিজে হসপিটালে গেলেন, না অন্য কেউ আপনাকে হসপিটালে নিয়ে গেলো ?

আশা করছি এই চড় খাওয়ারপর জেল থেকে কৃষ্ণের পালানোর যে ভুল তথ্য আপনার মাথায় ছিলো তা দূর হয়ে যাবে।

এরপর তার প্রশ্ন হলো,

সামান্য এক ব্যাধ এর তীরে , সেপটিক হয়ে মারা যায় যে লোক --- সে ভগবান ?”

আপনার মতো সাধারণ লোক যদি এরকম তীর খেয়ে সেপটিক হয়ে মারা যায়, তাহলে নিশ্চয় আপনি ভগবান হবেন না বা কেউ আপনাকে ভগবান বলবে না। কিন্তু কারো ইচ্ছা ই যদি এমন হয় যে, সে কোনো এক নির্দিষ্ট ব্যক্তির হাতের ছোঁড়া তীরের আঘাতেই জীবন দেবে, আর সেই ঘটনা যদি বাস্তবেই ঘটে, তাহলে লোকে তাকে কী বলবে ?

আমার ভাবতে খুবই অবাক লাগছে যে, শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের জ্ঞান নিয়ে আপনি কৃষ্ণ চরিত্রকে বিশ্লেষণ করেছেন এবং সে সম্পর্কে নানা প্রশ্ন তুলেছেন এবং তা প্রকাশও করেছেন ফেসবুকের মতো একটি পাবলিক ফোরামে। আপনি আমাকে কয়েকজন লেখকের নাম উল্লেখ করে জিজ্ঞেস করেছেন, আমি তাদের নাম শুনেছি কি না বা তাদের বই আমি পড়েছি কি না। অর্থাৎ আপনি ধরেই নিয়েছেন যে, আমি ওই বইগুলো পড়িই নি। যদি আপনি ধরেই নেন যে, ওগুলো আমি পড়ি নি তাহলে আবার তা আমাকে জিজ্ঞেস করলেন কেনো যে, ওই বইগুলো পড়েছি কি না ? কিন্তু আমি জানি রামায়ণ, মহাভারত আপনি পড়েন নি, তাই সেগুলো আপনি পড়েছেন কিনা তা্ আর জিজ্ঞেস করছি না। আপনি বুঝতে পারছেন, আপনার আর আমার মাথার চিন্তা করার ক্ষমতার পার্থক্য ? রামায়ন মহাভারতের জ্ঞান আপনার থাকলে আপনি জানতেন যে, কৃষ্ণের এই ব্যাধের তীরে প্রাণ ত্যাগের ঘটনা তার পূর্ব জন্মের প্রতিশ্রুতি বা বলা যায় তার নিজের পরিকল্পনারই ফল।

রামায়নে, রামের কাছে- বালি এবং রাবনের অপরাধ ছিলো সমান সমান। কারণ, রাবন যেমন সীতাকে আটকে রেখে তাকে বিয়ে করার চেষ্টা করেছিলো, একই ভাবে বালিও তার ছোট ভাই সুগ্রীবের স্ত্রীকে আটকে রেখে তাকে বিয়ে করার চেষ্টা করেছিলো। তাই রাম প্রথমে বালিকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং সুগ্রীব ও বালির যুদ্ধ লাগিয়ে দিয়ে আড়াল থেকে তীর নিক্ষেপ করে বালিকে হত্যা করে। বালিকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত ছিলো ঠিক, কিন্তু হত্যার পদ্ধতি ঠিক বীরের মতো ছিলো না, এটা রাম নিজেও জানতো। যদিও পিতাকে হত্যা করার জন্য বালির পুত্র অঙ্গদ রামকে কোনো দোষারোপ করে নি; কারণ, অঙ্গদ লংকার যুদ্ধে রামের পক্ষ থেকে যোগ দেয় এবং যুদ্ধ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, বালি হত্যায় রামের দোষ থাকলে অঙ্গদ এটা করতে না। যা হোক, আড়াল থেকে তীর মেরে বালিকে হত্যা করাটাকে রাম নিজেই ভালো চোখে দেখে নি, এটা যে তার ভুল ছিলো এবং সেই ভুলের শাস্তি সে স্বীকার করে বালির পুত্র অঙ্গকে এই প্রতিশ্রুতি দেয় যে, পরের জন্মে একইভাবে অঙ্গদের আড়াল থেকে ছোঁড়া তীরে সে নিহত হবে।

এবার আসি মহাভারতে, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পর শত পুত্রের মৃত্যু শোক সইতে না পেরে গান্ধারী কৃষ্ণকে এই বলে অভিশাপ দেয় যে, কুরুবংশের মতো তার যদুবংশও ধ্বংস হবে। কৃষ্ণ গান্ধারীর এই শাপকে স্বীকার করে নেয় এবং সেই অনুযায়ী খুব অল্প সময়ের মধ্যে অন্তর্কলহে যদু বংশে অশান্তি ও বিপর্য়য় শুরু হয়। এসব সহ্য করতে না পেরে বলরাম ও কৃষ্ণ বনে চলে যায়। এর কিছুদিন পরেই বলরাম দেহত্যাগ করে, কৃষ্ণ একদম একা হয়ে যায় এবং সে নিজেও প্রাণ ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়।

এর আগে বালির পুত্র অঙ্গদ এক ব্যাধের ঘরে জন্ম নেয় এবং তার নাম হয় জিরু। সে একদিন বনে পশু শিকার করতে করতে গিয়ে দেখতে পায় সুন্দর একটি পাখি। পাখিটিকে হত্যা করার জন্য জিরু আড়াল থেকে তীর নিক্ষেপ করে। তীরবিদ্ধ হলে কাছে গিয়ে দেখতে পায় পাখি নয় এক মানুষের শরীরে বিদ্ধ হয়েছে তার তীর। জিরু তার কাছে ক্ষমা চায়। তখন কৃষ্ণ বলে, ক্ষমা চাওয়ার কিছু নেই, এটাই আমার ভবিতব্য ছিলো এবং আমি নিজেই এটা বেছে নিয়েছি। এরপর কৃষ্ণ, জিরুকে রাম হিসেবে তার আগের জন্মের ঘটনা এবং বালি হত্যার কাহিনী বলে এবং সে ই যে বালির পুত্র অঙ্গদ এবং তার হাতেই যে কৃষ্ণ নিজে এই জন্মের মৃত্যুকে নির্ধারিত করেছ, তা ও বলে। অনেকে মনে করে জিরুর তীর কৃষ্ণের পায়ে লেগেছিলো, কিন্তু তারা ভুলে যায় যে, পায়ে তীর লাগলে কোনো মানুষ মরে না, বড় জোর আহত হয়। জিরু পাখি রূপী কৃষ্ণকে তীর মেরেছিলো এবং এই তীর তার বুক ই বিদ্ধ করেছিলো। কারণ, কোনো ব্যাধ পাখি মারার জন্য পাখির পা নিশানা করে না। এই পায়ে তীর বিদ্ধ হওয়ার ভুল থিয়োরির ফলেই পদ বিশ্বাসএর মতো লোকজন সেপটিক হওয়ার থিয়োরি খুঁজে পায়। যা হোক, নিজের মৃত্যু আসন্ন এটা বুঝতে পের কৃষ্ণ জিরুর কাছ থেকে বিদায় নেয় এবং তার দেহ আস্তে আস্তে শুন্যে বা বাতাসে বিলীন হয়ে যায়।

রামায়ণ মহাভারতের এইসব কাহিনী না জানার ফলে যারা মনে করে কৃষ্ণ সেপটিক হয়ে মারা গিয়েছিলো, Nimaipada Biswas এর মতো তাদের চিন্তা ধারাই যে সেপটিক যুক্ত, তাতে কিন্তু কোনো সন্দেহ নেই।

জয় হিন্দ।
জয় শ্রীরাম। জয় শ্রীকৃষ্ণ।







মন্তব্যসমূহ

  1. ল্যাওড়া. হ্যা আমি তোকে ল্যাওড়া বলেই সম্মোধন করছি. কারণ মনে হচ্ছে তুই পড়াশুনা করিসনি.নিমাইপদ বিশ্বাস পিএইচডি করেছে আর তুই শুধু অন্ধ বিশ্বাস এর ওপর কথা গুলো বলে গেছিস তাই তোকে বোকাচোদা বলাটা ভুল হবে না. আগে ভালো করে জান হিন্দু ধর্মে ভগবান মানে কি? জেনে রাখ ভগবান ভগ যোনি আর বান লিঙ্গ. Unnion of সেক্স called ভগবান. যে কোনো শিব মন্দিরে যা গিয়ে দেখ. সব ধৰ্ম রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এটাও জেনে রাখ মূর্খ. সব যুগে সব কালে. এ সন্মন্ধে পরে আলোচনা করবো যে ভগবান. আল্লাহ. গড বলে কিছুই হয়না. 10মাথা. 2পা. 4মাথা. হনুমান মানে জানোয়ার পুজো. এ গুলো অশিক্ষিত জানোয়ার মার্কা কথাবাত্রা.চিন্তা ধারাও ঐরকম. কৃষ্ণ কেন কংসের মৃত্যুর পর দ্বারকায় পালিয়ে ছিল জেনেরাখ মগধ এর রাজা জরাসন্ধের ভয়ে. 17 বার কৃষ্ণ কে আক্রমণ করেছিল. এই কথা জানতে গেলে রাজস্থান গ্রন্থাগার এর বই পড়তে হবে. কৃষ্ণ জেনে রাখ কেন অপঘাত এ মারা যায়. যখন জলন্ধর এর সঙ্গে শিব এর মারপিঠ হয় তখন শিব হেরে যাবার উপক্রম. তখন বৃষনি সেনা নিয়ে ল্যাওড়ার কৃষ্ণ বৃন্দা কে ধর্ষণ করে. এই কথা সোনার পর যুদ্ধ ক্ষেত্রে জলন্ধর ভেঙে পরে. সেই সুযোগ নিয়ে শিব জলন্ধর কে হত্যা করে. তখনকার দিনে মিডিয়া ছিল না প্রচার করে দেয় বৃন্দা তার পরম ভক্ত ছিল. কিন্তু কৃষ্ণ ভুলে গেছিলো যে বৃন্দার এক ছোট ভাই ছিল সে লুকিয়ে তার দিদির ধর্ষণ চুপ চাপ দেখে গেছিলো অসহায়ের মতো. পরে বড়ো হয়ে জিরু নামক ব্যাধের সাহায্য ন্যায়. বলরাম কে বিষক্রিয়া. সাপের বিষ দিয়ে মারায়. কৃষ্ণ রটিয়ে দেয়. দাদা সরযূ নদীতে মুখদিয়ে সাপ বেরিয়ে নিজে স্বেচ্ছায় মারা গিয়ে স্বর্গে গেছেন. নিজেও খুব চিন্তিত ছিল. কারণ পরবতী শাম্ব রাজা হলেও রাজত্ব কন্ট্রোল য়ে থাকবে না. নেশাগ্রস্ত. ধর্ষণ এইসব করে এরা শেষ হবে. পয়সা থাকলে এই সব গুন গুলো থাকবে. ঐ সব গান্ধারীর অভিশাপ এই গুলো পরবর্তী সময় জুড়ে দেওয়া. গল্পে গাছের ডালে কৃষ্ণ বসে আছে আর জিরু এসে পাখি ভেবে মেরে দিলো য়ে সব পুরো কল্পনা. প্ল্যান করে কৃষ্ণ কে মারা হয়েছে. এখনকার দিন হলে সি বি আই তদন্ত হতো.
    কৃষ্ণ গোপীদের বা সম্পর্কে মামী র সঙ্গে যৌন মিলন করেনি এর প্রমান কোথায় আছে? বাল সেই সময়কার সামাজিক পরিস্থিতি কি ছিল তুই জানতিস? আর একটা কথা না বলে পারছিনা এই সনাতন. বৈদিক এই কথা গুলো খুবই শুনি যা বেদ ঋকবেদ শাস্ত্র দেখায় কিছু ছাগল টাইপ এর লোক. সংকৃত ভাষা কত বছরের পুরোনো? 2500.একে দেবনাগরী ভাষা বলা হয়. নাগর থেকে এই ভাষা শুরু হয় তাকে রটিয়ে দেয়া হয় দেব ভাষা. এর অপভ্রংশ ভাষা hindi. সংস্কৃত এর আগে. পালি. এর আগে prakit. এর আগে গ্যাপ. কি ভাষায় কথা হতো প্রকৃত জানা যায়না. অনেক ভাষা মৃত হয়ে পড়ে তার আগে সিন্ধু ভাষা. সপ্তম শতাব্দী তে যত পুরান তা লিখিত হয়ে যায় . আগে ল্যাওড়া জান মহাভারত কাল কত বছরের পুরোনো সেই সময় কি ভাষা চলতো? আদতে সংকৃত না অন্য কোনো ভাষা. যা পরবর্তী মুঘল রাজত্বে শাস্ত্রের মা মাসি করে দেয়া হয়েছে. তাই এটাই যে প্রামাণ্য মূলক সেটা অমূলক. ধৰ্ম নিয়ে যারা ব্যবসা করে তাদেরকে জুতো মারা উচিৎ. যাকে তাকে ভগবান বানানো. মুসলিম ধৰ্ম মাত্র 1400 বছরের পুরোনো. হিন্দুর সমাধি আর মুসলিম দের কবর. পার্থক্য কোথায়.? ল্যাওড়া সব ধর্মই বলছে সৃষ্টি তাঁদের ধর্মের থেকেই. বাড়া যখন মুসলিম রা ভারতে আসে ত খন ঈশ্বর ভগবান গড কোথায় ছিল? হ্যান্ডেল মারছিলো? কেউ ভগবান নয় সব একশ্রেণীর মানুষের তৈরী করা অবাস্তব চরিত্র. জাতপাত তৈরী করে মানুষ কে ছোট করে কুসংস্কার রে জরিয়ে নিজে র ফায়দা তোলার নাম ধৰ্ম. দিনের পর দিন মাসের পর মাস. বছরের পর বছর. বাড়া ব্রহ্মা র মুখ থেকে ব্রাহ্মণ জন্মেছে? মুখ না gud বুঝতে পারার উপায় নেই. বাঁদর এর পুজো? তার ওপর মানুষের জানোয়ার রাশি তাকে কন্ট্রোল করার জন্যেই পাথর মাদুলি. এই সব এর সঙ্গে কৃষ্ণ ভগবান. বাড়া মন্দির নয় হাসপাতাল শিক্ষা উজবুক মানুষদের দরকার. ল্যাওড়া তার বদলে মাটির পুতুল মন্ত্র পড়ে জ্যান্ত করা? আর যাকে তাকে উন্মাদ বলা? যে ধর্ম বিজ্ঞান শিক্ষা না দিয়ে অন্ধ কুসংস্কার শেখায় সে বালের ধৰ্ম কে আইন করে বন্ধ করা উচিৎ.

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

পয়েন্ট টু পয়েন্ট : মুসলমানদের মিথ্যাচারের দাঁত ভাঙ্গা জবাব

পয়েন্ট টু পয়েন্ট : মুসলমানদের মিথ্যাচারের দাঁত ভাঙ্গা জবাব ফটো হিসেবে এই প্রবন্ধের সাথে যেটা যুক্ত করেছি , তার জবাব দেওয়া ই আমার এই পোস্টের উদ্দেশ্য। তাই কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক: ফটোপোস্টের শুরুতেই লিখা হয়েছে , “ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কোন প্রতিমা নেই , কোন প্রতিমূর্তি নেই , কোন প্রতিকৃতি নেই , কোন রূপক নেই , কোন ফটোগ্রাফ নেই , তাঁর কোন ভাস্কর্য নেই। ” এর রেফারেন্স হিসেবে লিখা হয়েছে , “ শ্বেতাসত্র উপনিষদ , অধ্যায় ৪ , পরিচ্ছেদ ১৯ এবং যযুর্বেদ অধ্যায় ৩২ , অনুচ্ছেদ ১৯। ” এবার দেখা যাক , সত্যিই সেখানে কী লিখা আছে এবং তার প্রকৃত অনুবাদটা কী ? রেফারেন্স হিসেবে প্রথম বইয়ের নাম লিখা হয়েছে , “ শ্বেতাসত্র উপনিষদ ”, কিন্তু এর নাম প্রকৃতপক্ষে “ শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ ”, লিখেছে তো কোনো এক মুসলমান , তার কাছ থেকে আপনি আর কত শুদ্ধ বানান আশা করতে পারেন ? রেফারেন্সের বাকি অংশে লিখা হয়েছে- “ অধ্যায় ৪ , পরিচ্ছেদ ১৯ ”, অধ্যায় ৪ ঠিক থাকলেও এই উপনিষদে অনুচ্ছেদ বলে কিছু হয় না , এটি হবে আসলে শ্লোক নং ১৯। শুধু এই রেফারেন্সেই নয় , প্রতিটি রেফারেন্সেই দেখবেন কিছু না কিছ

হিন্দুদের এত দেবতা, আসলে কোনটা বড় ?

হিন্দুদের এত দেবতা , আসলে কোনটা বড় ? এবং ইসলাম নাকি সবচেয়ে প্রাচীন ধর্ম ! উপরের এই দুটো প্রসঙ্গসহ মুসলমানদের করা আরো কিছু প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে জানতে চেয়ে ছিলো Pritam Das নামের আমার এক ফেসবুক বন্ধু। শুরুতেই দেখে নিন সেই প্রসঙ্গগুলো- মুসলমানরা বলে যে , একটা হাতির মুখ মানুষের শরীরে কি করে বসানো যায় ? কী যুক্তি আছে এটার পেছনে ? আর সেইটাকে তোমরা হিন্দুরা আবার পূজাও করো! আবার সেই গনেশের একটা কলা গাছ বউও আছে। তারপর হুনুমান কী করে উড়তে পারে ? কী করে একাই একটা লংকা জ্বালিয়ে দিতে পারে ? এছাড়াও বলে যে ইসলাম নাকি পৃথিবীর প্রাচীন ধর্ম , হিন্দু ধর্ম অনেক পরে এসেছে। পৃথিবী কবে শেষ হবে তা নাকি ওদের কোরানে লেখা আছে। আর মাঝে মধ্যে প্রায় জিজ্ঞেস করে হিন্দুদের এত দেবতা , আসলে কোনটা বড় ? কোনো না কোনো তো একটা বড় দেবতা হয়েই যায়। সবাই তো এক দেবতা পূজা করে না। কেউ কেউ তো আলাদা পূজা করে , তাহলে হিন্দুদের মধ্যে দেবতা নিয়ে একতার অভাব। ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি... এবার দেখুন আমার জবাব: মুসলমানরা হিন্দুদেরকে ধর্ম বিষয়ে নানা প্রশ্ন করে বিব্রত করে , ঠিকঠাক সেই প্রশ্নগুলোর জবাব দিতে না

বেদ এ ‘‘পিতা তার মেয়ের সাথে অশ্লীলকর্মে লিপ্ত’’- =>এছাড়া মা- ছেলে দূষ্কর্ম, এমন বিশ্রি বর্ণনা যেই গ্রন্থে তা কি করে সৃষ্টিকর্তার বাণী হতে পারে ?”

“ রিগবেদ ---- অধ্যায় - ৩ , খন্ড - ৩১ , শ্লোক : ১ - ২ ‘‘ পিতা তার মেয়ের সাথে অশ্লীলকর্মে লিপ্ত ’’- => এছাড়া মা - ছেলে দূষ্কর্ম , এমন বিশ্রি বর্ণনা যেই গ্রন্থে তা কি করে সৃষ্টিকর্তার বাণী হতে পারে ?” ঠিক এই প্রশ্নটিই করেছে Md Alhaz Hosain নামের এক মুসলমান আমার এক পোস্টের কমেন্ট বক্সে। বেদ এ্রর এই বাণীতে আসলেই কী বলা হয়েছে , সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা পাবেন আমার এই পোস্টে : ফেসবুকে মুসলমানদের কমেন্ট মানেই গালাগালি , খিস্তি। এ থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার যে , মুসলমানরা যুক্তি বোঝে না। কারণ , যারা যুক্তি বোঝে তারা যুক্তি দিয়ে কথা বলে , প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করতে তাদের গালি - গালাজের প্রয়োজন হয় না। এজন্য তথ্য রেফারেন্স দিয়ে লেখার পরও যারা সেসবে নজর না দিয়ে গালাগালি করে তাদের কমন্টেকে আমি রাস্তার পাগলা কুত্তার ঘেউ ঘেউ বলেই মনে করি , তাই সেগুলোকে কোনো গুরুত্বই দিই না। কিন্তু আজকে যে কমেন্টটির উত্তর দিচ্ছি , সে বেশ ভদ্রভাবেই কথাগুলো তুলে ধরেছে ; তাই তার লেখার জবাব দিচ্ছি , যদিও পাগলা