ইসলামের তিন সিদ্ধান্ত বা
( কোরানের সংক্ষিপ্ত সার)
- ড. রাধেশ্যাম ব্রহ্মচারী
(হিন্দুত্রাতা এই লেখকের জন্ম বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলায়। অতঃপর ১৯৭১ সালে, লুটেরা ও ঘাতক মুসলমানদের কাছে সর্বস্ব হারিয়ে সপরিবারে ভারতে পালিয়ে প্রাণ বাঁচাতে বাধ্য হন। ইনি কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিদ্যার সাবেক অধ্যাপক। বর্তমানে মুসলমানদের হাত থেকে হিন্দুদেরকে রক্ষার জন্য প্রাণান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। এই পুস্তিকাটি তাঁর সেই মহৎ উদ্দেশ্যরই সার্থক প্রয়াস। আর যারা পুস্তিকা আকারে এই বইটি হাতে পান নি, সেই সব নেট-ফেসবুক ইউজারদের জন্য আমার এ্ই প্রয়াস। )
ভূমিকা :
গত ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর আমেরিকার বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে জঙ্গী আক্রমন, তৎপরবর্তী আফগানিস্তানের ও ইরাকের ঘটনাবলী, দিল্লির সংসদভবনে ও কোলকাতার আমেরিকান সেন্টারে জঙ্গী হানা এবং গুজরাটের গোধরায় ৫৯ জন করসেবককে পুড়িয়ে মারার ঘটনা - এদেশের মানুষের মধ্যে ইসলাম সম্পর্কে বেশ কৌতূহল বাড়িয়ে তুলেছে। তারা ইসলাম সম্পর্কে জানতে অনেক বেশি আগ্রহী হয়েছেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, তাদের এই আগ্রহের সুযোগ নিয়ে কিছু কিছু হিন্দু দুর্বুদ্ধিজীবী এবং সেক্যুলারবাদী রাজনীতিক তাদের লেখার মধ্যে দিয়ে ইসলাম সম্পর্কে এক ভ্রান্ত ধারণা পরিবেশন করতে খুবই সচেষ্ট হয়ে উঠেছে।
এই সব ব্যক্তিরা প্রচার চালাচ্ছে যে, ইসলামের অর্থ হলো শান্তি এবং সন্ত্রাসবাদবা সন্ত্রাসবাদীদের সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। ইসলাম খুবই নিরীহ এবং ইসলামের নীতিকে অমান্য করেই সন্ত্রাসবাদীরা তাদের সন্ত্রাসী কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে; কারণ, কোরান-হাদিসের কোথাও সন্ত্রাসবাদের কোনো কথা নেই। তারা বলছেন, কোরান-হাদিসের কথা খুবই মানবতাবাদী, অথবা কোনো ধর্মই সন্ত্রাসের কথা বলে না, অথবা মুসলমানদের মধ্যেও অনেক ভালো মুসলমান আছে, যারা সন্ত্রাসবাদ বা রক্তপাতে বিশ্বাস করে না, ইত্যাদি ইত্যাদি। ইসলাম সম্পর্কে পাহাড় প্রমান অজ্ঞতা অথবা উচ্ছ্বিস্টের লোভে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবেই যে তারা ডাহা মিথ্যা কথা লিখে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য। ইসলাম সম্পর্কে পাঠকদের এই কৌতূহল মেটাতে এবং ইসলামের মূল বিষয় পাঠকদের সামনে তুলে ধরতেই আমার এই প্রয়াস।
ইসলামের তিন সিদ্ধান্ত:
কোরান হলো ইসলামের মূল প্রামান্য গ্রন্থ। তাছাড়া আছে হাদিস, যার মধ্যে বুখারী এবং মুসলিম হাদিস হলো শ্রেষ্ঠ। এই সব গ্রন্থে যেসব কথা লেখা আছে তা থেকে বেরিয়ে আসে তিনটি মূল ইসলামি সিদ্ধান্ত। এগুলো হলো-
১) মিল্লাত ও কুফর
২) দার-উল-ইসলাম ও দার-উল-হার্ব এবং
৩) জিহাদ।
ইসলামের প্রথম সিদ্ধান্ত : মিল্লাত ও কুফর
প্রথম সিদ্ধান্ত মিল্লাত ও কুফর-এ মিল্লাত বলতে বোঝায় “কুল্ল মুসলেমিন ইখুয়াতুন” অর্থাৎ পৃথিবীর সকল মুসলমান ভাই ভাই। মৃত্যুর ঠিক আগের বছর নবী মুহম্মদ মক্কায় হজ করতে গিয়ে আরাফাতের ময়দানে যে ভাষণ দেন, তাতে তিনি মুসলমানদেরকে তিনটি উপদেশ দেন। এই তিনটি উপদেশের মধ্যে সর্বপ্রধান ছিলো “কুল্ল মুসলেমিন ইখুয়াতুন” অর্থাৎ পৃথিবীর সকল মুসলমান ভাই ভাই। এই উপদেশ থেকেই বিশ্বব্যাপী মুসলিম ভ্রাতৃত্ব বা ইসলামি উম্মাহর জন্ম হয়।
কুফর শব্দের অর্থ বিরোধিতা করা বা অবিশ্বাস করা এবং যারা এই বিরোধিতা করে তাদেরকে বলা হয় কাফের। বিরোধিতা বলতে এখানে ইসলামের বিরোধিতাকে বোঝাচ্ছে। বিশেষ করে আল্লার কোরান এবং আল্লার রাসূলের বিরোধিতা। অর্থাৎ যে সমস্ত ব্যক্তি আল্লার কোরান ও মুহম্মদের নবীত্বে অবিশ্বাস করে তারাই কাফের। এছাড়াও ইসলামের মোট ছয়টি কলেমা বা সংকল্প বাক্য আছে, যার মধ্যে প্রথম কলেমা বা কলেমা তৈয়বকে বলা হয় ইসলামের প্রাণ। এই কলেমা তৈয়ব হলো, “ লা ইলাহা...” আর এর অর্থ হলো, আল্লা ব্যতীত কোনো উপাস্য নাই এবং মুহম্মদ আল্লার প্রেরিত রাসূল। ইসলামে এই কলেমার এতই গুরুত্ব যে, বলা চলে, এই কলেমাতে যারা বিশ্বাস করে না, তারাই কাফের। অত্যন্ত গোঁড়া কোনো মুসলমানও যদি এই কলেমায় বিন্দুমাত্র অবিশ্বাস করে তবে সে তৎক্ষণাৎ কাফের হয়ে যাবে।
এখানে বলে রাখা যুক্তিযুক্ত হবে যে, ইসলাম শব্দের অর্থ শান্তি নয়, আত্মসমর্পন। বিশেষ অর্থে আল্লার কোরান এবং আল্লার রাসূল মুহম্মদের কাছে আত্মসমর্পন। যে সমস্ত ব্যক্তি আল্লার কোরান এবং নবী মুহম্মদের কাছে আত্মসমর্পন করে এবং কলেমায় বিশ্বাস করে তারাই হলো আত্মসমর্পনকারী অর্থাৎ ঈমানদার মুসলমান বা মোমেন। আর যারা তা করে না, তারাই হলো কাফের। বর্তমানে অনেক মুসলমান এই ব্যাখ্যা দিয়ে চলেছে যে, কাফের শব্দের অর্থ ঈশ্বরে অবিশ্বাসী অর্থাৎ নাস্তিক ব্যক্তি। এই ব্যাখ্যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং হিন্দুদেরকে বিভ্রান্ত করতেই যে তারা এই ব্যাখ্যা উপস্থিত করেছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই ব্যাখ্যা সত্য হলে মুসলমান আক্রমনকারীরা এই দেশে এসে কোটি কোটি হিন্দুকে কেটে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিতো না। কেননা, এই সমস্ত হিন্দুরা সকলেই ছিলো ঈশ্বর বিশ্বাসী। তাদের দোষ ছিলো যে, তারা আল্লার কোরান এবং মুহম্মদের নবীত্বে বিশ্বাস করতেন না। তাই তারা কাফের বলে বিবেচিত হয়েছিলেন এবং এই কারণেই তাদেরকে হত্যা করা হয়েছিলো। ওই একই কারণে আজ বাংলাদেশের হিন্দুরা কাফের বা মালাউন বলে চিহ্নিত হচ্ছেন। তাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে। ধ্বনি তোলা হচ্ছে, একটা দুইটা হিন্দু ধর, সকাল বিকাল নাস্তা কর। কাফের শব্দের অর্থ যদি নাস্তিক হতো তবে মুসলমানদের উচিত ছিলো সবার আগে কমিউনিস্টদের কেটে উজার করা। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের কমিউনিস্টদের সাথেই তাদের খাতির সব থেকে বেশি।
উপরের এই আলোচনা থেকে এটা পরিষ্কার যে, ইসলাম এই বিশ্বমানব সমাজকে সরাসরি দুইভাগে ভাগ করেছে- (১) মুসলমান এবং (২) অমুসলমান বা কাফের। আল্লার দৃষ্টিতে এই কাফেররা অত্যন্ত ঘৃণিত জীব ও ঈশ্বরহীন পশু। তাই কোরান বলছে-
“আমি অবশ্যই নরকের জন্য বহু জাতির মানব সৃষ্টি করেছি, তাদের হৃদয় আছে, কিন্তু তারা তা উপলব্ধি করে না। তাদের চক্ষু আছে, কিন্তু তারা দেখে না। ওরা পশুর ন্যায় এবং তা অপেক্ষাও অধিক মূঢ়।” ( কোরান-৭/১৭৯)
“যে কেহ ইসলাম ব্যতীত অন্য মতের অনুসরণ করলে তা কখনো গৃহীত হবে না এবং পরকালে সে হবে ক্ষতিগ্রস্তগণের অন্তর্ভূক্ত।” (কোরান-৩/৮৫)
“আমি অচিরেই অবিশ্বাসীদের মনে ভীতির সঞ্চার করছি। অতএব তাদের গর্দানে আঘাত করে মস্তক ছিন্ন করো এবং তাদের অঙ্গুলীসমূহ ছিন্ন করো। ইহা এইজন্য যে তারা আল্লা ও তার রাসূলের বিরোধিতা করেছিলো এবং যে আল্লা ও তার রাসূলের বিরোধিতা করে আল্লা তার জন্য নিশ্চয় কঠোর শাস্তিদাতা।” (কোরান- ৮/১২-১৩)
“যারা অবিশ্বাস করেছে, আমি তাদেরকে ইহকালে ও পরকালে কঠোর শাস্তি দান করবো।... আর যারা বিশ্বাস করেছে ও সৎ কাজ করেছে, তাদেরকে পূর্ণ পুরষ্কার দেওয়া হবে।” (কোরান- ৩/৫৬-৫৭)
“পরলোকে কাফেরদের কোনো অংশ নাই এবং আল্লা তাদের কথা বলবেন না এবং শেষ বিচারের দিনে তাদের প্রতি দৃষ্টি দিবেন না এবং তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি আছে।” (কোরান- ৩/৭৭)
“আল্লা তার শরিক করার অপরাধ শিরক ক্ষমা করেন না, ইহা ব্যতীত যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যে কেহ আল্লার শরিক করে, সে মহা অপরাধী মুশরিক।” (কোরান- ৪/৪৮)
যারা অবিশ্বাস করেছে, সত্বর তাদের অন্তরে আমি ভীতির সঞ্চার করবো, যেহেতু তারা আল্লার সাথে অংশী স্থির করেছে, নরক তাদের বাসস্থান এবং অবশ্যই তা নিকৃষ্ট বাসস্থান।” (কোরান- ৩/১৫১)
“তোমাদের ও আমাদের মধ্যে চিরশতত্র“তা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি হবে যদি তোমরা এক আল্লাতে বিশ্বাস স্থাপন না করো।” (কোরান- ৬০/৩)
“আল্লার কাছে অবিশ্বাসকারীরাই নিকৃষ্ট জীব; কারণ, তারা কোরানে অবিশ্বাস করে।” (কোরান- ৮/৫৫)
“ওরা আল্লার পরিবর্তে এমন কিছুর উপাসনা করে যা ওদের উপকারও করতে পারে না, অপকারও করতে পারে না। অবিশ্বাসীরা স্বীয় প্রতিপালকের বিরোধী।” (কোরান- ২৫/৫৫)
“মুহম্মদ আল্লার রাসূল। তার অনুগামীরা অবিশ্বাসীদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল।” (কোরান- ৪৮/২৯)
“আমাদের মধ্যে কতক আত্মসমর্পণকারী মুসলমান এবং কতক অবাধ্যচারী কাফের। যারা আত্মসমর্পন করে তারা যুক্তিগতভাবেই সৎপথ বেছে নেয়। অপরপক্ষে অবাধ্যচারীরা তো নরকের ইন্ধন।” (কোরান- ৭২/১৪-১৫)
“তোমাদের পিতা ও ভ্রাতা যদি বিশ্বাস অপেক্ষা অবিশ্বাসকে শ্রেয় জ্ঞান করে তবে তাদেরকে অভিভাবরকরূপে গ্রহন করো না।” (কোরান- ৯/২৩)
এর অর্থ হলো, একজন মুসলমানের কাছে তারা কাফের আত্মীয়রাও ঘৃণার পাত্র। উপরন্তু তারা আল্লার শত্র“, ইসলামের শত্র“, নবী মুহম্মদের শত্র“; তাই তারা নির্মমভাবে বধ যোগ্য। সেই কারণে আল্লার বান্দা মুসলমানরা এই ঘৃণিত কাফেরদের উপর অত্যাচার করলে, তাদের সহায় সম্বল লুঠ করলে, তাদের জায়গা জমি দখল করলে এবং কাফের মহিলাদেরকে ধর্ষণ করলে আল্লা খুশি হয় এবং অত্যাচারী ঐসব মুসলমানদেরকে সে নানাভাবে পুর®কৃত করে। অপরদিকে কোরান অবিশ্বাস করার কারণে কাফেররা সকলেই নরকের আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে, (কোরান- ৩/৮৫)। সেখানে আল্লা তাদেরকে অনন্ত কাল ধরে আগুনে ঝলসাবে এবং প্রত্যেকবার ঝলসাবার পর আবার নতুন করে চামড়া সৃষ্টি করবে, যাতে তারা অনন্তকাল ধরে শাস্তি পেতে পারে, (কোরান- ৪/৫৬)। বুঝতে অসুবিধা হয় না যে আল্লা কত বুদ্ধিমান ! চামড়া একবার পুড়ে গেলে দ্বিতীয়বার পোড়াবার সময় যন্ত্রণা তত বেশি হবে না, তাই নতুন চামড়া সৃষ্টির ব্যবস্থা।
আল্লার দৃষ্টিতে এই কাফেররা এতই ঘৃণিত যে, আল্লা তার নিজের লোকদেরকে অর্থাৎ মুসলমানদেরকে এই ঘৃণিত কাফেরদের উপর এবং তাদের মহিলাদের উপর যেকোনো ধরণের নারকীয় অত্যাচার করার অধিকার দিয়ে রেখেছেন। লুঠপাট করে তাদের সহায়-সম্বল, ধন-সম্পদ,
জায়গা-জমি আত্মসাৎ করার অধিকার দিয়ে রেখেছেন। যে সব মুসলমান কাফেরদের উপর অত্যাচার করবে, শেষ বিচারের দিনে আল্লা তাদেরকে চরমভাবে পুর®কৃত করবে। যেসব মুসলমান কমপক্ষে একজন কাফেরও হত্যা করবে, তারা হবে গাজী। আল্লার বেহেশতে এই গাজীরা হবে সম্মানীয় অতিথি। আল্লা সসম্মানে সেই খুনীদেরকে জান্নাতুল ফেরদৌস বা সবচেয়ে মর্যাদপূর্ণ বেহেশতে নিয়ে যাবে এবং সেখানে তাদের অনন্তকাল থাকার ব্যবস্থা করবে।
যেসব ব্যক্তি আল্লার কোরান ও মুহম্মদের নবীত্বে বিশ্বাস করে ইসলাম গ্রহন করবে, শেষ বিচারের দিন আল্লা তাদেরকে নানাভাবে পুর®কৃত করবে। শুধু মাত্র লা ইলাহা... কলমা পড়ার জন্য আল্লা তাদের পাহাড় সমান পাপ ক্ষমা করে দেবে এবং অত্যন্ত অধঃপতিত পাপাসক্ত মুসলমানও বেহেশতে প্রবেশ করবে। অবশ্য শুধু পুরুষ মুসলমানরাই এই সুযোগ পাবে এবং মুসলমান মহিলারা সকলেই নরকের আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে।
আল্লার সেই জান্নাতে মুসলমানরা নানারকম স্বর্গীয় খাবার খাবার ও স্বর্গীয় ফলমূল খাবে। দুধের খাল বা ঝরণা থেকে দুধ, মধুর খাল থেকে মধু এবং সূরা বা মদের খাল বা ঝরণা থেকে মদ পান করবে। ( যদিও পৃথিবীতে মুসলমানদের জন্য মদ খাওয়া নিষিদ্ধ)। বেহেশতে মুসলমানরা যা খাবে তার সবই হজম হয়ে যাবে। তাই মল মুত্র ত্যাগের প্রয়োজন হবে না।
বেহেশতের সব মুসলমানের বয়স ৩২ বছর পর্যন্ত বাড়বে, তারপর আর বাড়বে না। সেখানে প্রতিটি বেহেশতবাসী মুসলমান হাজার হাজার অপূর্ব সুন্দরী হুর পাবে যারা সব সময় কুমারী থাকবে। তাদের বয়স ১৬ বছরের বেশি হবে না। একটি হাদিসে আছে, অত্যন্ত পাপাসক্ত, লম্পট ও পতিত একজন মুসলমানও আল্লার জান্নাতে বিশাল এক জমিদারী পাবে। সেখানে থাকবে ৭০টি প্রাসাদ। প্রত্যেক প্রাসাদে থাকবে ৭০ টা মহল। প্রত্যেক মহলে থাকবে ৭০টা ঘর। প্রত্যেক ঘরে থাকবে ৭০ টা আরাম কেদারা। আর প্রত্যেক আরাম কেদারায় বসে থাকবে একজন করে হুরী। আল্লা প্রতিটি স্বর্গবাসী মুসলমানকে অঢেল যৌন ক্ষমতা দেবে, যাতে তারা হুরীদের সাথে যৌন ক্রিয়া করতে পারে। একজন হুরীর সাথে যৌন ক্রিয়া শুরু করলে তা ৪০ বছর স্থায়ী হবে। এছাড়াও সমকাম করার জন্য প্রতিটি বেহেশতবাসী মুসলমান পাবে ৮০ হাজার স্বর্গীয় ক্রিতদাস বা গেলমান। যাদের বয়স ১৬ বছরের বেশি বাড়বে না। স্বর্গে এতসব সুবিধা পেয়ে মুসলমানরা যার পর নাই আনন্দিত হবে এবং আল্লা কোনো কাফেরকে সেখানে প্রবেশ করতে না দেওয়ার জন্য আল্লার প্রশংসা করবে। পার্থিব পতিতালয় এবং আল্লার জান্নাতের মধ্যে সামান্য পার্থক্য আছে; পার্থিব পতিতালয়ে পয়সা লাগে কিন্তু কিন্তু আল্লার পতিতালয়ে কোনো পয়সা লাগবে না।
কাজেই বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে, ইসলাম হলো চুড়ান্ত সাম্প্রদায়িক এবং চরম ঘৃণার এক তত্ত্ব। একমাত্র মুসলমানরাই আল্লার প্রিয় পাত্র, আর অমুসমলানরা আল্লার কাছে পশুর মতো এক ঘৃণ্য জন্তু বিশেষ। সেই সঙ্গে আল্লা তার বান্দা মুসলমানদের উপদেশ দিয়েছে যে, তারাও যেন কাফেরদের প্রতি সমান ঘৃণা পোষণ করে। আল্লা বলেছে, তিনি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করবেন, তাই তার বান্দারা যেন আত্মীয় স্বজনের সামনে কাফেরদেরেকে কেটে কুচি কুচি করে, কাফের রমনীদের তার স্বামী সন্তানদের সামনে ধর্ষণ করে, কাফের শিশুদের আছাড় দিয়ে মারে, আরও কত কী ?
মদীনার ইহুদিদের মনে ত্রাসের সঞ্চার করার জন্য মুহম্মদ প্রথমে ভয় দেখিয়ে নাজির ও কানুইকা গোত্রের ইহুদিদেরকে মদীনা থেকে বিতাড়িত করে এবং ৬২৭ সালে কুরাইজা গোত্রের ইহুদিদের গণহত্যা করে। আগের দিন কুরাইজাদের ৮০০ জন সক্ষম পুরুষকে দিয়ে, মদীনার বাজারে ৮০০ জন মানুষ চাপা দেবার মতো একটি বিশাল গর্ত খোড়া হয় এবং রাতে একটি গুদাম ঘরে সেই ৮০০ জনকে বন্দী করে রাখা হয়। পরদিন ভোরে ফজরের নামাজ শেষ হতেই শুরু হয় কোতল পর্ব। ৫/৬ জন বন্দীকে এক সাথে ডেকে আনা হয় এবং গর্তের কিনারায় উপুর হয়ে শুয়ে পড়তে বলা হয়, এরপর নবীর চাচা হামজা, চাচাতো ভাই আবু তালহা, জুবায়ের এবং আলী তাদের গলা কেটে কেটে গর্তে ফেলে দেয়। এই ভাবে ৮০০ জন মানুষকে হত্যা করতে করতে সন্ধ্যা পেরিয়ে যায়। কুরাইজা গোত্রের যুবতী মহিলাদেরকে মুসলমানরা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয় এবং বয়স্কা মহিলা ও শিশুদেরকে বেদুইন উপজাতির লোকদের কাছে ঘোড়া ও অস্ত্রশস্ত্রের বিনিময়ে ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রি করে দেয়। কুরাইজা গোত্রের সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ে রিহানাকে মুহম্মদ আগে থেকেই নিজের জন্য পছন্দ করে রেখেছিলো । সারাদিন ধরে ৮০০ কুরাইজার কোতল পর্ব সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করে মুহম্মদ ক্লান্তি দূর করার জন্য রিহানার সাথে শয়ন করতে যায়।
বিখ্যাত মুসলমান লেখক আনোয়ার শেখের মতে, সেই সময় ৮০০ কুরাইজার গণহত্যা আজ ৮০ হাজার মানুষের সমান। বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, দুনিয়ার মুসলমানদের সামনে রয়েছে- কি অমানবিক, পাশব ও দানবীয় এক আদর্শ, যার নাম ইসলাম।
ইসলামের দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত : দার-উল-ইসলাম ও দার-উল-হার্ব
ইসলাম মতে এই পৃথিবীতে যত দেশ আছে তা দুইভাগে বিভক্ত, দার-উল-ইসলাম ও দার-উল-হার্ব। দার-উল-ইসলাম হচ্ছে সেই সমস্ত দেশ, যেগুলো ইতোমধ্যে মুসলমানদের অধিকারে চলে এসেছে। বর্তমানে পাকিস্তান, বাংলাদেশ , মিশর, ইরান, ইরাক, ইত্যাদি দার-উল-ইসলাম এর নিদর্শন। দার-উল-হার্ব এর আক্ষরিক অর্থ হলো সন্ত্রাস বা যুদ্ধের দেশ। প্রকৃতপক্ষে দার-উল-হার্ব হলো সেই সমস্ত দেশ যেগুলো এখনও মুসলমানদের অধিকারে আসে নি এবং যেখানে মুসলমান ও কাফেরদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। তাই সেগুলো হলো হিংসা ও রক্তপাতের দেশ।
ইসলামের চরম লক্ষ্য হলো পৃথিবীর সমস্ত দার-উল-হার্বকে দার-উল-ইসলামে পরিণত করে সমগ্র বিশ্বে আল্লার রাজত্ব কায়েম করা। সমগ্র বিশ্বে ইসলামের বিজয় পতাকা উড্ডীন করা। অর্থাৎ সমগ্র পৃথিবীকে আরবের সাংস্কৃতিক ক্রীতদাসে পরিণত করা। তাই কোরান বলছে, “তাদের বিরুদ্ধে অবিরাম যুদ্ধ করতে থাকো, যতদিন না আল্লার রাজত্ব কায়েম হয়” (৮/৩৯)। ইসলামি মতে, পৃথিবীতে যতদিন কাফের থাকবে অর্থাৎ দার-উল-হার্ব থাকবে, ততদিন - ঝগড়া, অর্থাৎ ফিতনা ফ্যাসাদও থাকবে। যেদিন সমস্ত পৃথিবী দার-উল-ইসলামে পরিণত হবে একমাত্র সেই দিনই পৃথিবীতে চিরস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। এই কারণেই অনেক দুষ্ট ব্যক্তি বলে যে, ইসলাম মানে শান্তি। যা হোক, কোন পদ্ধতির মাধ্যমে সমগ্র পৃথিবীতে ইসলামের পতাকা উড্ডীন করতে হবে ? কোন পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে পৃথিবীর সমস্ত দার-উল-হার্বকে দার-উল-ইসলামে পরিণত করতে হবে ? এখানেই ইসলামের তৃতীয় সিদ্ধান্ত জিহাদের আগমন।
ইসলামের তৃতীয় সিদ্ধান্ত : জিহাদ
অনেক নির্বোধ হিন্দু আছে, যারা জিহাদের বাংলা অর্থ লিখে বা বলে ধর্মযুদ্ধ। কিন্তু হিন্দুরা ধর্মযুদ্ধ বলতে বোঝে, ধর্মের সাথে অধর্মের যুদ্ধ বা ধর্মাশ্রিত মানুষের সাথে অন্যায়কারী, অসুর প্রকৃতির মানুষের যুদ্ধ। হিন্দুদের এই ধর্মযুদ্ধে যে কোনো অসামরিক ব্যক্তি-নারী-শিশু-বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা শুধু অবধ্যই নয়, তাদের হত্যা করা মহাপাপ। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ হিন্দুর ধর্মযুদ্ধের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। সেখানে যুদ্ধ শুরু হওয়ার ঠিক আগের মূহুর্তে পিতামহ ভীষ্ম যেসব নিয়ম কানুনের কথা ঘোষণা করেছিলেন, তা থেকে হিন্দুর ধর্মযুদ্ধের চরিত্র বোঝা যায়।
কিন্তু জিহাদ হলো, পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত যত রকম বর্বরতার অনুষ্ঠান হয়েছে তার মধ্যে বর্বরতম ও সর্বাপেক্ষা পাশবিক হত্যা লীলা। তিনটি ইংরেজি শব্দের মাধ্যমে জিহাদের বর্বরতাকে প্রকাশ করা যায়, তা হলো- বাই সোর্ড, ফায়ার এ্যন্ড রেপ; অর্থাৎ তরবারি, আগুন ও ধর্ষণের মধ্যে দিয়ে নারী-শিশু-বৃদ্ধ-বৃদ্ধা নির্বিশেষে কাফের হত্যা করে তাদের সহায়-সম্বল-ধন-দৌলত লুঠপাট করে তাদের জায়গা জমি দখল করার নামই হলো জিহাদ।
বর্বর মুসলমান আক্রমনকারীরা যখন ভারতে আক্রমন শুরু করে, তখন থেকেই এই ভারতবর্ষে জিহাদের বর্বরতার অনুষ্ঠান শুরু। মুসলমানরা কোনো নিয়ম নীতির ধার ধারে নি। লক্ষ লক্ষ পরাজিত হিন্দু সৈন্যকে কেটে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছে, লক্ষ লক্ষ নিরীহ অসামরিক প্রজাকে হত্যা করে মৃত মানুষের পাহাড় তৈরি করেছে, তাদের ঘরবাড়ি ও ক্ষেতের ফসল জ্বালিয়ে পুড়িয়ে এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।
যে যে যুদ্ধে হিন্দু রাজারা বিজয়ী হয়েছিলেন, সেই ক্ষেত্রে তারা বহুদিনের সভ্যতার সংস্কারবশত পরাজিত মুসলমান সৈন্যদের মুক্ত করে দিয়েছিলেন। পক্ষান্তরে মুসলমানরা পরাজিত হিন্দু বাহিনীর সকলকেই, কোরানের কাফের নিধনের সূত্র অনুসারে হত্যা করেছে। তাই হিন্দু রাজারা যে বারবার মুসলমানদের কাছে পরাজিত হয়েছেন, তার জন্য হিন্দুর সভ্যতার সংস্কারও অনেকাংশে দায়ী।
পরাজিত শত্রুরা অবধ্য, এই সভ্য সংস্কারের দ্বারা চালিত হয়েই রাজা পৃথ্বীরাজ চৌহান, মুহম্মদ ঘোরীকে মুক্ত করে দিয়েছিলেন। কিন্তু এই সুসভ্য আচরণই পৃথ্বীরাজের পরাজয় ও মৃত্যু ডেকে এনেছিলো।
ইসলামের মূল উদ্দেশ্য হলো, সারা পৃথিবীতে ইসলামি সাম্রাজ্য বিস্তার করা। সমগ্র পৃথিবীকে ইসলাম তথা আরবের সাম্রাজ্যে পরিণত করা। এই কারণে বলা চলে যে, ইসলাম কোনো ধর্মমত নয়, এটি একটি রাজনৈতিক মতবাদ। যেহেতু জিহাদ হলো এই সাম্রাজ্য বিস্তারের সামরিক অঙ্গ, তাই ইসলামের জিহাদের গুরুত্ব অপরিসীম। এই কারণেই আল্লা প্রত্যেক সক্ষম মুসলমানের জন্য জিহাদে অংশ গ্রহন অবশ্য কর্তব্য বলে নির্দেশ দিয়েছে, (কোরান-২/২৪৪)। যারা জিহাদে যোগ না দিয়ে ঘরে বসে থাকে, তাদের নিন্দা করেছে, (কোরান-৪/৯৬); এবং কাফেরদের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে মুসলমানদের নির্মম হতে বলেছে, (কোরান, ৪/৮-২৯)।
জিহাদের গুরুত্ব এতই অপরিসীম যে, আল্লা, একদিনের জিহাদকে হাজার দিনের নামাজের সমান করে দিয়েছে এবং জিহাদকারীর জন্য রোযা সম্পূর্ণ মাফ করে দিয়েছে। ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দের রমজান মাসে মুসলমানদের সাথে কোরেশদের বদর যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধের আগে মুহম্মদ সর্বপ্রথম রোযা ভাঙ্গে এবং অন্য সবাই পরে রোযা ভাঙ্গে। ৬২৯ সালে খয়বরের যুদ্ধের সময় এক ইহুদি যুবক সকালে ইসলাম গ্রহন করে জিহাদে যোগ দেয় এবং দুপুরে মারা যায়। এ সম্পর্কে মুহম্মদ বলে যে, জিহাদে শহীদ হওয়ার ফলে সে মরার সঙ্গে সঙ্গে বেহেশতে চলে গিয়েছে।
জিহাদে মুসলমানদেরকে উৎসাহিত করার জন্য, আল্লা জিহাদে লাভ করা লুঠের মালকে ভোগ করা বৈধ করে দিয়েছে। জিহাদে লাভ করা কাফের নারীরাও লুঠের মাল বা গণিমতে মাল। তাই আল্লা, জিহাদে লাভ করা- কুমারী, সধবা, বিধবা, বৃদ্ধাসহ যেকোনো প্রকারের অমুসলিম নারী মুসলমানদের জন্য বৈধ করে দিয়েছেন। জিহাদে উৎসাহিত করতে আল্লা আরও বলেছে, “কাফেরদেরকে যেখানে পাবে হত্যা করবে, তাদের জন্য ঘাঁটি গেড়ে ওঁৎ পেতে থাকবে, তাদের বন্দী করবে, অবরোধ করবে” (কোরান-৯/৫) । আল্লা আরও বলেছে,
“যেখানেই তাদের পাবে, হত্যা করবে”- (কোরান, ২/১৯১)
“তাদেরকে গ্রেফতার করো, যেখানে পাও হত্যা করো, তাদের মধ্যে থেকে সাহায্যকারী গ্রহণ করো না।”- (কোরান, ৪/৮৯)
“ অবিশ্বাীদের মধ্যে যারা তোমার নিকটবর্তী, তাদের সাথে যুদ্ধ করো, তারা তোমাদের মধ্যে কঠোরতা দেখুক।- (কোরান, ৯/১২৩)
“যখন তোমরা অবিশ্বাসীদের সাথে যুদ্ধে মোকাবেলা করো, তখন তাদের গর্দানে আঘাত করো।”- (কোরান, ৪৭/৪)
“তাদের হত্যা করো, কিংবা তাদের শুলবিদ্ধ করো, অথবা তাদের হস্তসমূহ ও পদসমূহ বিপরীত দিক হতে কর্তন করো।”- (কোরান, ৫/৩৩)
“ ওরাই অভিশপ্ত এবং ওদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই ধরা হবে এবং নির্মমভাবে হত্যা করা হবে।”- (কোরান, ৩৩/৬১)
জিহাদে অংশগ্রহণকারী মুসলমানদেরকে বলে মুজাহিদ, আর এর বাংলা অর্থ হলো আল্লার সৈনিক। মুজাহিদ শব্দের বহুবচন হলো মুজাহিদিন। আল্লার অন্তিম ইচ্ছা হলো মুজাহিদদের সাহায্যে পৃথিবীর সমস্ত ধর্মকে বিনাশ করে সারা বিশ্বে ইসলামের প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠা করা।
মুসলমানদেরকে জিহাদে উদ্দীপিত করতে আল্লা আরও বলেছে,
“আল্লার দৃষ্টিতে জিহাদের সমতুল্য আর কিছু নেই।”- (কোরান, ৯/১৯)
“বিশ্বাসীদের মধ্যে অক্ষমতা ব্যতীত যারা ঘরে বসে থাকে, আর যারা আল্লার পথে স্বীয় ধন-প্রাণ দ্বারা জিহাদ করে তারা সমান নয়।... যারা ঘরে বসে থাকে তাদের উপর জিহাদকারীদের আল্লাহ মহাপুরষ্কারের শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন।” - (কোরান, ৪/৯৫)
“যেকোনো ব্যক্তি, যারা আল্লার পথে জিহাদ করতে গিয়ে ধুলি মলিন হয়েছে, নরকের আগুন তার জন্য নিষিদ্ধ হয়েছে।” - (বোখারি শরীফ, ৮/৬৬)
যেসব ব্যক্তি শারীরিক দিক থেকে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও জিহাদে যোগ না দিয়ে ঘরে বসে থাকে, আল্লা তাদের কঠোর ভাষায় তিরস্কার করে বলেছে, “যদি তোমরা জিহাদে বের না হও, তবে তিনি তোমাদের যন্ত্রণাপ্রদ শাস্তি দিবেন এবং অপর কোনো জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন, তোমরা তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।” - (কোরান, ৯/৩৯)
জিহাদ বা যুদ্ধে সফল হতে গেলে প্রথমেই দরকার সামরিক শৃঙ্খলা, তাই আল্লা বলেছে, “যারা আল্লার পথে সারিবদ্ধভাবে সুদৃঢ় প্রাচীরের মতো যুদ্ধ করে আল্লা তাদের ভালোবাসেন।” - (কোরান, ৬১/৪)
সামরিক ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ একজন ব্যক্তিই থাকে, যে সর্বোচ্চ আদেশ দেয় এবং বাহিনীর সবাই তার আনুগত্য করে। এক্ষেত্রে একাধিক ব্যক্তি হলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। তাই আল্লা সকল জিহাদীকে আল্লার রাসূলের আনুগত্য করার আদেশ দিয়ে বলেছে, “যারা তোমার (মুহম্মদ) নিকট আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করে তারা আল্লার আনুগত্যেরই শপথ গ্রহন করে।”- (কোরান, ৪৮/১০)
সেই সঙ্গে সঙ্গে আল্লা জিহাদীদের স্বর্গীয় সাহায্যের প্রতিশ্র“তি দিয়ে বলেছে, “তিনি ৫ হাজার ফেরেশতাকে জিহাদীদের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করার জন্য পাঠাবেন, যাতে তারা জয়ী হতে পারে।”- (কোরান, ৩/ ১২৪-১২৫)
“তোমরা শিথিল হইয়ো না, বিষন্ন হয়ো না। তোমরাই সমুন্নত যদি তোমরা প্রকৃত মুমিন হও।” - (কোরান, ৩/১৩৯)
আল্লা আরও বলেছে, “যারা বিশ্বাসী তারা আল্লার পথে যুদ্ধ করে এবং যারা অবিশ্বাসী তারা শয়তানের পথে যুদ্ধ করে, নিশ্চয় শয়তান এক দুর্বল চক্রান্তকারী।”- (কোরান, ৪/৭৬)
“হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা যখন কোনো কাফের বাহিনীর সম্মুখীন হও, তখন তোমরা অবিচলিত থাকবে এবং মুখে ও মনে আল্লাকে স্মরণ করবে, যাতে তোমরা বিজয় প্রাপ্ত হও।” (কোরান- ৮/৪৫)
“হে নবী, বিশ্বাসীগণকে যুদ্ধে উদ্দীপিত করো, যদি তোমাদের মধ্যে ২০ জন ধৈর্যশীল থাকে, তবে তারা ২০০ জনের উপর জয়ী হবে এবং যদি ১০০ জন ধৈর্যশীল থাকে, তাহলে তারা ১ হাজার জন অবিশ্বাসীর উপর বিজয়ী হবে।” - (কোরান, ৮/৬৫)
পক্ষান্তরে জিহাদ করতে এসে জিহাদের ময়দান থেকে ভয়ে পলায়ন করলে তা আল্লার চোখে অতিশয় গর্হিত কাজ এবং তার শাস্তি হবে ভয়ংকর। তাই আল্লা বলেছে, “হে বিশ্বাসীগন, যখন তোমরা জিহাদে অবিশ্বাসীদের মুখোমুখী হবে, তখন তোমরা পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে না। যে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে, সে হবে আল্লার বিরাগভাজন এবং তার আশ্রয় হবে দোযখে।” - (কোরান, ৮/১৫-১৬)
আগেই বলা হয়েছে যে, যারা জিহাদ করতে গিয়ে শহীদ হবে, তারা হবে বেহেশতে আল্লার বিশিষ্ট সম্মানিত অতিথি। এই ব্যাপারে আল্লা বলেছে, “যারা আল্লার পথে নিহত হয়েছে, তাদেরকে তোমরা মৃত মনে করো না। আল্লার দৃষ্টিতে তারা জীবিত এবং তারা প্রতিপালকের কাছ থেকে উত্তম জীবিকা পেয়ে থাকে।” - (কোরান, ৩/১৬৯)
যারা পরকালের বিনিময়ে পার্থিব জীবন বিক্রয় করতে ইচ্ছুক, তারা আল্লার পথে জিহাদ করুক এবং কেহ আল্লার পথে জিহাদ করলে, সে মরুক বা বাঁচুক, আমি তাকে মহান প্রতিদান দিবো।”- ( কোরান, ৪/৪৭)
কোনো মুসলমানের পক্ষে জিহাদে শহীদ হওয়া এতই লাভজনক যে, একজন মুজাহিদ বলবে, “আমি আল্লার পথে জিহাদ করে শহীদ হবো এবং শহীদ হবার জন্য আবার বেঁচে উঠবো এবং শহীদ হবো, শহীদ হবার জন্য আবার বেঁচে উঠবো এবং শহীদ হবো এবং শহীদ হবার জন্য আবার বেঁচে উঠবো।” ( বোখারী, ৪/৫৪)
জিহাদে শহীদ হওয়া কত উপকারী ও লাভজনক তা বোঝাতে মুহম্মদ আরও যেসব কথা বলেছে সেগুলো হলো-
“শহীদের আত্মা সবুজ পাখি হয়ে স্বর্গে বসবাস করবে এবং স্বর্গের যেখানে সেখানে উড়ে বেড়াবে।”
“তাদের সমস্ত পাপ ও কুকর্ম ক্ষমা করা হবে।”
“শেষ বিচারের দিন সেই শহীদ তার ৭০ জন আত্মীয় স্বজন বন্ধুর জন্য আল্লার বিচারে হস্তক্ষেপ করতে পারবে।”
“ কেয়ামতের সেই বিচারের দিনেও একজন শহীদ অবিচলিত থাকবে।”
“একজন শহীদ মৃত্যুর কোনো কষ্ট বা যন্ত্রণা অনুভব করবে না।”
“কাফেরদেরকে হত্যা করার ব্যাপারে একজন শহীদ কোনো অনুতাপ বা দুঃখ ভোগ করবে না।”
উপরের এই তথ্যগুলো জানলে, বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, কেনো জিহাদ করতে ও জিহাদে শহীদ হওয়ার জন্য মুসলমান যুবক যুবতীরা এগিয়ে আসছে এবং আত্মঘাতী বোমা হামলা করে নিজেদেরকে উড়িয়ে দিচ্ছে।
আল্লা বনাম ভগবান
হিন্দু গান রচনা করেছে, “ঈশ্বর আল্লা তেরে নাম” অর্থাৎ যিনি ঈশ্বর, তিনিই আল্লা। কিন্তু যে হিন্দু এই গান রচনা করেছে, তার জানা নেই যে, ঈশ্বর হতে গেলে যে যোগ্যতা দরকার, তা আল্লার নেই। আল্লা যদি ঈশ্বর হতো, তবে সব মানুষই তার কাছে সমান হতো। যেমন, হিন্দুর ভগবান গীতায় বলেছেন, “আমার কাছে সবাই সমান, কেউ আমার প্রিয়পাত্রও নয়, আবার কেউ আমার বিরাগভাজনও নয়” (৯/২৯)।
কিন্তু আল্লার দৃষ্টিতে সব মানুষ সমান নয়। শুধু মুসলমানদের প্রতিই তিনি দয়ালু, দয়াময় বা রহমানির রাহিম। কিন্তু হিন্দুসহ অন্যান্য অমুসলমানদের প্রতি তিনি নির্মম নৃশংস একজন ঘাতক জল্লাদ। কাজেই এরকম পক্ষপাত দোষে দোষী আল্লা এই জগতের ঈশ্বর হবেন কীভাবে ? তাই স্বামী বিবেকানন্দ তার প্র্যাকটিক্যাল বেদান্ত গ্রন্থে বলেছেন, “যে ভগবান তার বিশেষ কিছু সন্তানের প্রতি দয়ালু বা দয়াময় এবং বাকিরা হৃদয়হীন পশু, এরকম পক্ষপাত দোষে দুষ্ট আল্লা ভগবান হবেন কেমন করে ? সে তো অসুরের থেকেও নীচ। আমি একশত বার জন্মগ্রহণ করতে রাজী আছি, কিন্তু এরকম আল্লাকে ঈশ্বর বলতে রাজী নই। বরং আমি এই আল্লার বিরুদ্ধে সারাজীবন যুদ্ধ করতে রাজী আছি।”
নামাজ হলো নিয়মিত সামরিক অভ্যাস
অনেক হিন্দু আবার এই মনোভাব পোষণ করে যে, মুসলমানরা কত ধর্মপ্রাণ! তারা দিনে ৫ বার নামাজের মধ্যে দিয়ে তাদের ভগবান বা আল্লাকে ডাকছে। এ ব্যাপারে প্রথমেই বলে নেওয়া ভালো যে, ইসলামের চরম আধ্যাত্মিক প্রাপ্তি হলো স্বর্গ বা জান্নাত নামক আল্লার পতিতালয়ে যাওয়া। কিন্তু আগেই বলা হয়েছে যে, “লা ইলাহা...” এই কলেমা গ্রহণ করার জন্য অত্যন্ত পাপমতি অধঃপতিত মুসলমানকেও আল্লা তার জান্নাতে নিয়ে যাবে। কাজেই বেহেশতে যাবার জন্য নামাজেরও প্রয়োজন নেই আর রোযারও প্রয়োজন নেই। তো প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক, তবু কেনো মুসলমানরা দিনে ৫ বার নামাজ পড়ে এবং এক মাস ধরে রোযা রাখে ?
হিন্দু বলে ভগবানকে ডাকতে হয় একা একা নির্জনে গিয়ে। কিন্তু ইসলাম মতে, একা নামাজ পড়লে খুবই কমই পূন্য হয়, এর চেয়ে পাড়ার মসজিদে নামাজ পড়লে তার ১০ গুন এবং জামে মসজিদে নামাজ পড়লে তার একশ গুন এবং এইভাবে বাড়তে বাড়তে মক্কার মসজিদ উল হারেমে নামাজ পড়লে এক লক্ষ গুন ছোয়াব হয়। কাজেই বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, নামাজের মূল উদ্দেশ্য হলো মসজিদে লোক জড়ো করা। তারপর সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়ানো, ইমামের আদেশ মতো উঠা-বসা ইত্যাদি দেখলে বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, নামাজের অন্য উদ্দেশ্য মসজিদে লোক জড়ো করে মুসলমানদের নিজেদের মধ্যে দেখাশোনা ও কথাবার্তার মধ্যে দিয়ে সংঘবদ্ধতা বাড়িয়ে তোলা এবং দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হলো, নামাজের মাধ্যমে সামরিক প্রশিক্ষণ। এই কারণেই মুহম্মদের জীবিতকালে মুসলমানরা যত যুদ্ধ করেছে, সব ক্ষেত্রে নামাজ পড়ে যুদ্ধ শুরু করেছে। নবীর জীবিতকালে কোনো কাফের বসতিকে আক্রমন করতে হলে, মুসলমানরা খুব ভোরে, ফজরের নামাজ শেষ করে আক্রমন করতো। গত ১৯৪৬ সালের ১৬ ই আগস্ট, মুসলমানরা কোলকাতায় যে হিন্দু হত্যা শুরু করেছিলো, যার নাম “গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং”, সেই ভয়ংকর গণহত্যাও তারা শুক্রবারের ফজরের নামাজ শেষ করে মসজিদ থেকেই শুরু করেছিলো।
কাজেই একথা স্পষ্ট যে, মৃত্যুর পর জান্নাত বা আল্লার পতিতালয়ে যাবার জন্য নামাজের প্রয়োজন না থাকলেও জিহাদের জন্য নামাজের প্রয়োজন আছে এবং সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই দুনিয়াব্যাপী মুসলমানরা দিনে ৫ বার নামাজ পড়ে চলেছে।
কোরানের প্রথম সূরা ফাতেহা। নামাজের শুরুতে প্রত্যেক নামজীকে সূরা ফাতেহা আবৃত্তি করতে হয় এবং তারপর কোরানের অন্তত তিনটি আয়াত আবৃত্তি করতে হয়। সাধারণত কোরানে কাফের নিধনের যেসব ভয়ংকর আয়াত আছে, তা থেকে ঐ তিনটি আয়াত আবৃত্তি করা হয়ে থাকে। কাজেই বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, দিনে ৫ বার করে ঐসব কাফের নিধনের আয়াত আবৃত্তি করতে থাকলে একজন মানুষের মনে কাফেরদের প্রতি কতখানি ঘৃণার উদ্রেক হতে পারে এবং কাফের নিধনের ব্যাপারে তার মন কতখানি হিংসাত্মক হয়ে উঠতে পারে।
তারপর আছে নামাজের শেষে ইমামের খুতবা বা ধর্মীয় ভাষণ। এই খুতবায় কী বলা হয়ে থাকে তা অনেকেরই জানা নেই। ঈদের নামাজের পর ইমাম যে খুতবা দেয়, তা থেকে খানিকটা তুলে দেওয়া হলো। “ হে আল্লা, আপনি ইসলাম ধর্ম ও মুসলমানদেরকে চিরকাল জয় যুক্ত করুন। আর অবাধ্য কাফের ও বেদআতি মুশরিকদের সর্বদা পদানত ও পরাস্ত করুন। হে আল্লা, যে বান্দা আপনার আজ্ঞাবহ হবে, তার রাজ্য চিরকাল অক্ষয় রাখুন; তিনি রাজার পুত্র রাজা হোন, কিংবা খাকান পুত্র খাকান হোন; স্থল বা নদীপেথের অধিকর্তা হোন, কিংবা দুই সাগরের মালিক হোন, তিনি পবিত্র মক্কা ও মদীনার সেবক হোন, কিংবা আল্লার পথে জেহাদকারী ও সংগ্রামী হোন, তিনি যদি মুসলিম রাজা হোন, আল্লা তার রাজ্য ও অধিকৃত সাম্রাজ্যকে চির অক্ষয় রাখুন।... তাঁরই তরবারি দ্বারা বিদ্রোহী, মহাপাতকী ও অবাধ্য কাফেরদের মস্তকছেদন করে নিশ্চিহ্ন করে দিন।... হে আল্লা আপনি ধ্বংস করুন কাফেরদের, বেদআতি মোশরেকদের। হে আল্লা তাদের দল ও সংঘকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দিন। হে আল্লা, তাদের ঐক্যের মধ্যে মতানৈক্য আনয়ন করুন। হে আল্লা, তাদের দেশ সমূহকে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দিন। ( মুসলিম পঞ্জিকা, ১৪০০ বঙ্গাব্দ, হরফ প্রকাশনী, পৃ-১৬৯, কোলকাতা।)
ইসলামি রীতি অনুসারে প্রত্যেক মুসলমান বালককে ৭ বছর বয়স থেকে নামাজ শিক্ষা দেবার বিধি। তাই বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, ৭ বছর বয়স থেকে কোনো মানুষকে দিনে ৫ বার করে কাফের নিধনের মন্ত্র দিলে তার মন কতখানি কলুষিত হতে পারে, বা কতখানি সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন এবং হিংসাত্মক হয়ে উঠতে পারে। এক কথায় কতখানি জানোয়ার হয়ে উঠতে পারে।
নামাজের মতে রোযার উপকারিতাও জিহাদের মধ্যে নিহিত আছে। যে আরব দেশে ইসলামের আবির্ভাব হয়েছিলো, সেখানে জলের বড় অভাব। অনেক সময় এমন হতো যে, মদীনা থেকে অনেক দূরে, মুহম্মদ তার সৈন্য সামন্ত নিয়ে জেহাদ করতে গেলো, সারাদিন ধরে যুদ্ধ হলো, কিন্তু খাওয়া দাওয়া দূরে থাক, এক ফোটা জলও জুটলো না। এই রকম পরিস্থিতিকে মোকাবেলা করার জন্যই পানাহার ত্যাগ করে এক মাস রোজা পালন। এটাও সামরিক প্রশিক্ষণের একটা অঙ্গ এবং ইংরেজিতে এটাকে বলা হয় ঊফঁৎধহপব ঞৎধরহরহম বা প্রতিকূলতা সহ্য করার প্রশিক্ষণ। সেই রকম কুরবানী ঈদের দিন চাকু দিয়ে পুচিয়ে পুচিয়ে নৃশংসভাবে পশুর গলা কেটে তাকে জবাই করাও হলো, কাফেরদের গলা কাটার হাতে কলমে শিক্ষা।
মন্দির বনাম মসজিদ :
অনেক হিন্দু আবার মন্দির শব্দের সাথে মজিদ শব্দটা এমনভাবে উচ্চারণ করে যাতে মন্দির আর মসজিদ একই জিনিস; যেন মন্দিরও ধর্মস্থান আবার মসজিদও ধর্মস্থান, কাজেই যাহা মন্দির, তাহাই মসজিদ। কিন্তু বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গী থেকে বিচার করলে দেখা যাবে, মন্দির আর মজিদের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য বিদ্যমান। একটা বিশেষ প্রভেদ আজ সকলেরই নজরে পড়ছে, আর তা হলো, মুসলমান সন্ত্রাসবাদীরা বিভিন্ন মসজিদে আশ্রয় নিচ্ছে বা পাচ্ছে। কিন্তু হিন্দুদের কোনো সন্ত্রাসবাদী দলও নেই এবং তারা কোনো দিন কোনো মন্দিরে আশ্রয়ে নিয়েছে এমন কোনো সংবাদও নেই।
আগেই বলা হয়েছে যে, হিন্দুরা যাকে ধর্ম বলে মনে করে ইসলাম সেরকম কোনো ধর্ম নয়। প্রকৃতপক্ষে ইসলাম হলো একটি রাজনৈতিক মতবাদ, যার উদ্দেশ্য হলো, পৃথিবীব্যাপী এক ইসলামি সাম্রাজ্য গড়ে তোলা এবং মসজিদগুলো হলো ইসলামের পার্টি অফিস। মসজিদগুলোতে জিহাদ ও কাফের হত্যার পরিকল্পনা তৈরি করা এবং জিহাদের অস্ত্রশস্ত্র যথা- রাইফেল, বন্দুক, পিস্তল, গুলিসহ নানারকম বিস্ফোরক মসজিদে মজুদ করা হয়। হিন্দুরা তাদের কোনো মন্দিরকে এরকম অস্ত্রাগার হিসেবে ব্যবহার করেছে, এমন সংবাদ আজ পর্যন্ত পাওয়া যায় নি।
হিজরত করে মদীনায় আসার পর মুহম্মদ একাধারে মদীনার প্রধান শাসক, প্রধান বিচারক এবং প্রধান সৈন্যাধ্যক্ষে পরিণত হয়েছিলো। মদীনার মসজিদে বসেই মুহম্মদ তার উপরের দায়িত্বগুলো পালন করতো। কাজেই সেই সময় মদীনার মসজিদ ছিলো প্রধান সরকারি কার্যালয়, প্রধান বিচারালয় এবং প্রধান সামরিক কার্যালয়। মুহম্মদ তার ১০ বছরের মদীনা ৮২ টা যুদ্ধ-হত্যা-আক্রমন ও লুণ্ঠন পরিচালনা করে। এই সমস্ত অভিযানের পরিকল্পনা মদীনার মসজিদেই তৈরি করা হয়েছিলো। তাছাড়া কবি আবু আফাক, কবি কাব বিন আশরাফ এবং মহিলা কবি আসমার মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিদের গুপ্ত হত্যার পরিকল্পনাও মুহম্মদ মদীনার মসজিদে বসেই রচনা করেছিলো। কোনো হিন্দু ধর্মগুরু, মন্দিরকে এ সমস্ত হীন চক্রান্ত ও সামরিক কাজে ব্যবহার করেছেন, এমন কোনো প্রমান নেই।
মুহম্মদই হলো সমগ্র মুসলমান সমাজের আদর্শস্থল। মুহম্মদ বলেছে, গোঁফ কামিয়ে দাড়ি রাখতে, যাতে মুসলমানদেরকে সহজে চেনা যায়; তাই মুসলমানদের গোঁফ কামিয়ে দাড়ি রাখতে হবে। মুহম্মদ খাওয়ার পর হাত চেটে পরিষ্কার করতো, তাই সব মুসলমানকে হাত চেটে পরিষ্কার করতে হবে। মুহম্মদ কুকুর পছন্দ করতো না, তাই কোনো মুসলমান কুকুর পুষতে পারবে না। মুহম্মদ বলেছে, যে দাবা খেলে – তার হাত শুয়োরের রক্তে মাখামাখি হয়; তাই কোনো মুসলমান দাবা খেলতে পারবে না। পাজামার ঝুল গোড়ালি ঢেকে ফেললে, মুহম্মদের মতে, তা নাকি অহমিকার প্রকাশ, তাই খাটো ঝুলের পাজামা পরতে হবে। আল্লা বলেছে, সর্বক্ষেত্রে নবীকে অনুসরণ করতে। কাজেই নবী যে যে কাজে মসজিদকে ব্যবহার করেছে, নবীর সেই দৃষ্টান্তকে অনুসরণ করে আজকের মুসলমানরাও মসজিদকে যে সেই কাজে ব্যবহার করবে তাতে আর আশ্চর্য কি ?
এজন্যই এখনও মসজিদের ইমামরা মসজিদ থেকে ফতোয়া জারি করে, মসজিদে বসে জিহাদ তথা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চক্রান্ত রচনা করে, মসজিদের মধ্যে জিহাদের অস্ত্রশস্ত্র মজুদ ক‘রে তাকে অস্ত্রের গুদাম হিসেবে ব্যবহার করে। শুধু তাই নয়, ইমামদের নোংরা প্রস্তাবে রাজী না হবার ফলে, নিরীহ মুসলমান গৃহবধূদের ধরে এনে, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ব্যভিচারের অভিযোগ এনে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলার ফতোয়াও দেওয়া হয় মসজিদ থেকে। হিন্দুদের পক্ষে কোনো মন্দিরকে এই সমস্ত হীন কাজে ব্যবহার করা দূরে থাক, এই সব চিন্তা করাও অসম্ভব।
কাজেই দেখা যাচ্ছে যে, মন্দির ও মসজিদের মধ্যে পাহাড় প্রমান পার্থক্য বিদ্যমান এবং যেসব ব্যক্তি বলেন যে, মন্দির ও মসজিদ একই জিনিস, কোনো হীন উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে তারা যে ঐসব মিথ্যা কথা বলে, তাতে আর কোনো সন্দেহ নেই।
কোনো হিন্দু, কোনো দিন, কোনো মন্দিরকে সামরিক শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে না, কোনো মন্দিরকে তারা কখনো লুঠপাট, হত্যা ইত্যাদির ষড়যন্ত্র রচনার করার স্থান বা লুঠ করে আনা গনিমতের মাল ভাগাভাগি করার কাজে ব্যবহার করে না। সর্বোপরি তারা মন্দিরে বসে মাতৃজাতিকে কলুষিত করার কোনো ষড়যন্ত্রও তৈরি করে না। হিন্দুরা ভক্তি ভরে পূজা অর্চনার দ্বারা আত্মিক উন্নতির বা আধ্যাত্মিক উন্নতির স্থান হিসেবেই চিরকাল মন্দিরকে ব্যবহার করে এসেছেন এবং ভব্যিতেও করবেন। তার থেকেও বড় কথা হলো, আল্লা যে সমস্ত হীন কাজের মন্ত্রনা দেয় হিন্দুর দেবতারা সেই সমস্ত হীন কাজকে তামসিক ও আসুরিক কাজ বলে ঘৃণা করেন। তাই সেই সব হীন কাজ বা হীন কাজের মন্ত্রণা হিন্দুর মন্দিরে কখনোই সম্ভব নয়।
উপসংহার :
উপরের আলোচনা থেকে এটাই পরিস্কার হচ্ছে যে, হিন্দুরা যাকে ধর্ম বলে জানে, ইসলাম সে রকম কোনো ধর্ম নয়। ইসলাম হলো একটি রাজনৈতিক মতবাদ। আজ যদি এই ভারতে মুসলিম শাসন কায়েম হয় বা এই ভারতবর্ষ আবার মুসলমানদের হাতে চলে যায়, তাহলে অতীতের মতো একটি হিন্দু মন্দিরও রক্ষা পাবে না। সমস্ত হিন্দুগ্রন্থ ভস্মীভূত হবে এবং ভারত থেকে মানবিকতা বিদায় নেবে। তাই সমস্ত হিন্দুর অবশ্য কর্তব্য হলো ইসলামকে বুঝতে চেষ্টা করা, ইসলমামের আক্রমনাত্মক দিকটিকে অনুধাবন করা। তবেই সে তার বিরুদ্ধে সঠিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে এবং হিন্দুধর্ম ও হিন্দু সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে পারবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন