সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বেদ এ মূর্তি পূজা নিষিদ্ধ নয়, হিন্দুধর্মের শাস্ত্রে পূজার অধিকার আছে সকলের এবং জন্মসূত্রে কেউ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য বা শুদ্র নয় :



বেদ এ মূর্তি পূজা নিষিদ্ধ নয়, হিন্দুধর্মের শাস্ত্রে পূজার অধিকার আছে সকলের এবং জন্মসূত্রে কেউ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য বা শুদ্র নয় :



আমার ফেসবুক আইডিতে যাতে কোনো মুসলমান ঢুকতে না পারে, সেটা আমি কঠোরভাবে খেয়াল রাখি। তারপরও কোনো কোনো মুসলমান ছদ্মনামে বা হিন্দু নাম নিয়ে আমার ফ্রেণ্ড লিস্টে ঢুকে পড়ে। অবশ্য এররপর সেগুলোকে আমি আর আনফ্রেন্ড করি না, এই কারণে যে, আমার লেখা পড়ে তবুও ওরা ইসলামের প্রকৃত সত্যটা জানুক। এরকমই ছদ্মনামে ঢুকে পড়া একজনের একটা কমেন্ট ফটোর সাথে যুক্ত করে দিলাম। তার কমেন্টের জবাব দিবো, এই লেখায়।

প্রথমেই সে লিখেছে, হিন্দুরা আর হিন্দু থাকবে না, কারণ হিন্দু কোনো ধর্মই না। এর জবাবে বলছি শোন,

তোর অ্যারাবিয়ান বর্বর বাপেরা ৭০০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে শুরু করে ১৭৯০ পর্যন্ত উপমহাদেশের হিন্দুদেরকে বিলুপ্ত করার জন্য বহু চেষ্টা করেছে। খুন, ধর্ষণ, জোর করে মুসলমান করণ, জিজিয়া কর চাপিয়ে আর্থিক চাপে ফেলে ধর্মান্তকরণের চেষ্টা, কোনোটাই বাদ দেয় নি। এছাড়াও ইসলামকে অস্বীকার করায় খুন করেছে প্রায় ৫০ কোটি হিন্দুকে, এত প্রচেষ্টার পরও এই ভারতীয় উপমহাদেশে তোরা মুসলমানেরা এখনও কিন্তু সংখ্যায় কম। এই ঘটনা কি এটা প্রমান করে যে, হিন্দুরা আর হিন্দু থাকবে না ?

পরে সে লিখেছে, হিন্দু কোনো ধর্মই না, সিন্ধু প্রদেশের নাম অনুসারে হিন্দুদের নাম হয়েছে হিন্দু।

-
হিন্দু কোনো ধর্মের নাম নয়, এটা একটা জাতির নাম। আর, হিন্দুদের ধর্মের নাম সনাতন ধর্ম। যেটা পৃথিবীর শুরু থেকে আছে আর থাকবে। ইসলাম ধর্মের বিকল্প নাম যদি মুসলমান ধর্ম হয়, তাহলে সনাতন ধর্মের বিকল্প নাম হিন্দু ধর্ম হলে তোর অসুবিধা কোথায় ?তোর নবী মুহম্মদ এবং তার চৌদ্দগুষ্টি একসময় হিন্দু ছিলো এবং তারা মক্কার কাবা ঘরে মূর্তি পূজা করতো, তোর জন্মও হয়েছে হিন্দু হিসেবে। তোর বাপ তোর নুনুর চামড়া কেটে তোকে মুসলমান বানিয়েছে। আর নুনুর চামড়া না কেটে প্রকৃতির সৃষ্টি মানুষকে বিকৃত না করে তাকে প্রকৃত রাখা সনাতন ধর্মের নিয়ম। সিন্ধু প্রদেশের নাম অনুসারে হিন্দুদের নাম হয়েছে হিন্দু, এটা ঠিক। কিন্তু নামে কি আসে যায় ? যেমন শুরু থেকেই তোদের নাম মুসলমান না রেখে যদি রাখা হতো জানোয়ার, তোরা জানোয়ার নামেই পরিচিতি হতি। নামে মুসলমান হলেও এখন অবশ্য তোরা জানোয়ারই। কারণ, মুসলমান ও জানোয়ার এখন সমার্থক।

এর পর সে লিখেছে, হিন্দুরা যে মূর্তি পূজা করে সেটাই নাকি আমাদের ধর্মে নেই।
-জাকির নায়েকের লেকচার শুনলে এরকম মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক কিন্তু হিন্দু ধর্মের প্রধান গ্রন্থ ঋগ্বেদে ব্যাপারে কী লেখা আছে, দ্যাখ-

"
একং সদ্বিপ্র বহুদাবদন্তি।" ঋগ্বেদ - ১/১৬৪/৪৬
এর অর্থ হলো, পরমেশ্বর এক ও একের মধ্যে বহুশক্তি।

 এই বহুশক্তিই যে দেব দেবী, সেটা বলা আছে নিচের এই শ্লোকে,

"
একং সত্যং বহুদা কল্পয়ন্তি।" ঋগ্বেদ - ১/১১৪/৫
এর অর্থ, দেব-দেবী, পরমেশ্বরের বিভূতি ও অনন্ত শক্তির প্রকাশ।

এবার দ্যাখ, হিন্দু ধর্মের সারগ্রন্থ গীতায় এ ব্যাপারে কী বলা আছে,

"
যো যো যাং যাং তনুং ভক্ত শ্রদ্ধয়ার্চিতুমিচ্ছতি।
তস্য তস্যাচলং শ্রদ্ধাং তামেব বিদধাম্যহম।।" গীতা-৭/২১
                                                                                                           
এর অর্থ, যে যে স্বকামী ভক্ত যে যে দেবতার স্বরূপ শ্রদ্ধাপূর্বক অর্চনা করতে ইচ্ছুক, আমি তাদের শ্রদ্ধা সেই দেবতার প্রতি স্থির করি

শ্রীকৃষ্ণ হলো হিন্দুধর্ম তথা সনাতন ধর্মের প্রধান পুরুষ, সে কিন্তু দেবতার বিভিন্ন রূপকে গীতায় তার বাণীর মাধ্যমে স্বীকার করে নিচ্ছে।

আরো দ্যাখ, গীতার ৭/২২ শ্লোকে কী লেখা আছে,

"
স তয়া শ্রদ্ধয়া যুক্তস্তস্যারাধনমীহতে।
লভতে চ ততঃ কামান্ময়ৈব বিহিতান্ হিতান্।"

এর অর্থ, সেই পুরুষ শ্রদ্ধাযুক্ত হয়ে সেই দেব বিগ্রহের পূজায় তৎপর হন এবং সেই দেবতার মাধ্যমে আমারই দ্বারা বিহিত কাম্য বস্তু অবশ্য লাভ করেন।

এখানে শ্রীকৃষ্ণ বললেন, যে ব্যক্তি যে দেবতার পূজাই করুক, সে আমার দ্বারাই তার ফল লাভ করে। এখানেও দেবতাদের পূজাকে স্বীকৃতি দেওয়া হলো।

আরো দ্যাখ, গীতার ১১/১৫ শ্লোকের বাণী, যে শ্লোকে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে তার বিশ্বরূপ দেখিয়েছিলো, সেই বিশ্বরূপে অর্জুন কী দেখেছিলো, দ্যাখ,

"পশ্যামি দেবাংস্তব দেব দেহে
সবাংস্তথাস ভূত বিশেষ সঙ্ঘান্ ।"

এর অর্থ হলো, হে দেব, আপনার দেহে আমি সমস্ত দেবতা এবং বহুভূতের সমুদায়, পদ্মের আসনে অবস্থিত ব্রহ্মা মহাদেব, সমস্ত ঋষিগণ এবং দিব্যসর্পসমূহ দেখছি।

কৃষ্ণের বিশ্বরূপ দর্শণ করতে গিয়ে অর্জুন তার মধ্যে বহুদেবতাকে দেখেছিলো। এটা কি প্রমান করে না যে, হিন্দু ধর্মে দেবতার পূজার স্বীকৃতি শ্রীকৃষ্ণ নিজে দিয়ে গেছেন বা তাদেরকে স্বীকার করে নিয়েছেন ?

শেষে ঐ মুসলমান লিখেছে, যে ধর্ম নিয়ে আমি গর্ব করি, সেই ধর্ম নাকি আমাকে পূজার অধিকার দেয় নি ! পূজার অধিকার দিয়েছে কি দেয় নি, তার তথ্য প্রমান শাস্ত্র থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে একটু পরে উল্লেখ করছি, কিন্তু তার আগে বলছি শোন, কেনো হিন্দু ধর্ম নিয়ে আমার এত গর্ব :

হিন্দুধর্ম, ভিন্ন ধর্ম বিশ্বাসী হওয়ার কারণে কাউকে হত্যা করতে বলে না, যেটা ইসলাম বলে । ভিন্ন ধর্মে বিশ্বাসী হওয়ার কারণে কোনো মেয়েকে গনিমতে মাল মনে করে ধর্ষণ করতে বলে না, যেটা ইসলাম বলে। অমুসলিম কারো ধন সম্পদ লুট করতে বলে না, যেটা মুসলমানদের প্রতি ইসলামের নির্দেশ। আর এসব কারণেই আমি সৎ, আমার চরিত্র ও মনমানসিকতা নিয়ে আমি গর্ব করতে পারি। কারণ, আমার ধর্মবিশ্বাস আমাকে এগুলো শিখিয়েছে। তোর কি এসব নিয়ে গর্ব করার কোনো ক্ষমতা ও অধিকার আছে ?

এখন দ্যাখ, মনুসংহিতা, যাতে হিন্দুদের জীবন-যাপন প্রণালী বিস্তারিতভাবে লেখা আছে, সেই মনুসংহিতা হিন্দুদের পূজা করার অধিকার সম্পর্কে কী বলেছে ?

মনুসংহিতায় ২৬৮৪ টি শ্লোক আছে। এর দশম অধ্যায়ের ৬৫ নং শ্লোকে বলা হয়েছে, শুদ্ররা, যারা হিন্দু সমাজের সবচেয়ে নীচু জাতি বলে বিবেচিত, তারা- গুণ,কর্ম ও স্বভাব অনুসারে- ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্য হতে পারে, আবার নিজেদের উন্নত করার চেষ্টা না করে, শুদ্রও থেকে যেতে পারে। আবার একইভাবে, ব্রাহ্মণও - গুণ, কর্ম ও স্বভাব অনুসারে ক্ষত্রিয়, বৈশ্য বা শুদ্র হতে পারে। এখানে কিন্তু স্বীকার করা হলো যে, যোগ্যতা থাকলে যে কোনো শুদ্রও বেদ পাঠ করতে পারে, বেদের জ্ঞান অর্জন করে ব্রাহ্মণ হতে পারে এবং পূজা করতে পারে।

এই একই কথার সমর্থন আছে, গীতার জ্ঞানযোগ নামক চতুর্থ অধ্যায়ের ১৩ নং শ্লোকে, সেখানে শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন,

"
চাতুর্বর্ণং ময়া সৃষ্টং গুণকর্মবিভাগশঃ।"

এর অর্থ হচ্ছে, পরমেশ্বর ভগবান হিসেবে, শ্রীকৃষ্ণ বলছেন, আমিই গুণ ও কর্মের ভাগ অনুসারে চারটি বর্ণ অর্র্থাৎ চার শ্রেণীর মানুষ সৃষ্টি করেছি। এই কথা এটাই প্রমাণ করে যে, জন্মসূত্রে আমাদের যে বংশের পরিচয়, সেটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ব্রাহ্মণের ঘরে জন্ম নিয়েও আমার যদি ব্রাহ্মণের মতো জ্ঞান ও গুণ না থাকে, আমি যেমন ব্রাহ্মণ হবো না, তেমনি শুদ্রের ঘরে জন্ম নিয়েও গুণ ও কর্ম অনুসারে আমি ব্রাহ্মণ হতে পারি। গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আরেক জায়গায় অর্জুনকে বলেছেন, তুমি ব্রাহ্মণ হয়ে ওঠো। কিন্তু অর্জুন তো ক্ষত্রিয়। এর মানেও হলো, যে কূলেই জন্ম হোক না কেনো, ব্রাহ্মণ হওয়া যায়। আর ব্রাহ্মণ যদি হওয়া যায় বা ব্রাহ্মণ্যত্ব যদি অর্জন করা যায়, তাহলে সেই ব্যক্তি পূজা করতে পারবে না কেনো ?


এখন ইতিহাস থেকে কিছু উদাহরণ দেওয়া যাক। শ্রীরাম চন্দ্র জন্মসূত্রে ক্ষত্রিয়, শ্রীকৃষ্ণের জন্ম ক্ষত্রিয় বংশে হলেও লালিত পালিত হয়েছেন ঘোষ বংশে অর্থাৎ শুদ্রের ঘরে, বাল্যকালে তিনি গরুও চড়িয়েছেন। স্বামী বিবেকানন্দর আসল নাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত, জন্মসূত্রে তিনি কায়স্থ, এটা সম্ভবত বৈশ্যের মধ্যে পড়ে, ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী প্রণবানন্দের জন্ম নমঃশুদ্রেরর ঘরে। কিন্তু এরা কি এদের কর্মগুণে ব্রাহ্মণ হয়ে উঠে নি ? রাম ও কৃষ্ণ তো স্বয়ং ভগবান, তাই ওদের কথা না হয় বাদ ই দিলাম, বিবেকানন্দ ও প্রণবানন্দের চেয়ে, আপনি আমি কি বড় হিন্দু, না বড় ব্রাহ্মণ ?

মহালয়ার জন্য চণ্ডীপাঠ করে বিখ্যাত হওয়া কোলকাতার বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রও জন্মসূত্রে ব্র্রাহ্মণ নন, তিনি কি বেদ, চণ্ডী পাঠ করেন না ? তার চেয়ে ভালো বেদ চণ্ডী পাঠ কেউ কি কোনো ব্রাহ্মণ করতে পারে ? সুতরাং ইনিওজন্মসূত্রে অব্রাহ্মণ হলেও গুণ ও কর্ম অনুসারে ব্রাহ্মণ।

স্বামী বিবেকানন্দ স্বয়ং ১৮৯৭ সালে, শ্রী রামকৃষ্ণের জন্মতিথিতে, কোলকাতায়, নীলাম্বর মুখার্জির বাগান বাড়িতে বেশ কয়েকজন নীচজাতির লোককে উপবীত দান করে তাদেরকে ব্রাহ্মনত্বে উন্নীত করেছিলেন।

এসব ঘটনা প্রমান করে যে, জন্ম যে ঘরেই হোক, ব্রহ্ম জ্ঞান অর্জন করে ব্রাহ্মণ হওয়া যায় এবং যদি ব্রাহ্মণ হওয়া যায়, তাহলে পূজা করতে অসুবিধা কোথায় ?

তাহলে এখানে প্রশ্ন হচ্ছে, হিন্দুরা পূজা করার জন্য ব্রাহ্মণকে ডাকে কেনো ? এর প্রথম কারণ হলো, নিজের যোগ্যতার অভাব এবং দ্বিতীয় কারণ অজ্ঞতা। নিজেদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য হিন্দু সমাজে এই অজ্ঞতা কিন্তু সৃষ্টি করেছে আবার ব্রাহ্মণরাই। হিন্দু ধর্মের শুরু থেকেই হিন্দু শাস্ত্র এবং তার ব্যাখ্যার দায়িত্ব ছিলো ব্রাহ্মণদের উপর। তখন ব্রাহ্মণরা যদি বলতো, সকল হিন্দুরই বেদ পাঠ ও পূজা করার অধিকার আছে, তাহলে সমাজে ব্রাহ্মণদের যে প্রভাব প্রতিপত্তি এবং সম্মান, তা ক্ষুণ্ন হতো, কে চায় অন্ধের চোখে আলো ফুটিয়ে নিজের পথ অন্ধকার করতে ? তাই ব্রাহ্মণরা প্ল্যান করে এই অপপ্রচার চালিয়েছে যে, ব্রাহ্মণ ভিন্ন অন্য কারো দেব পূজার বা বেদ পাঠের অধিকার নেই। আর এই অপপ্রচারজনিত অজ্ঞতার ফলেই হাজার হাজার বছর ধরে হিন্দুরা তা বিশ্বাস করে এসেছে এবং এখনও ৯৮% হিন্দু তাই বিশ্বাস করে।

যেসব হিন্দু এই তথ্য জানে যে, সকল হিন্দুরই দেব পূজার অধিকার আছে, দেখা যায়, তারাও পূজার সময় ব্রাহ্মণদেরকে ডেকে আনেন। কিন্তু কেনো ?

এখানেই প্রশ্ন আসে যোগ্যতার। আপনি জন্মসূত্রে রাজমিস্ত্রী নন এবং সেই কাজ কখনো শিখেনও নি। তাহলে ইটের বাড়ি বানানোর সময় আপনি রাজমিস্ত্রীকে ডাকবেন, না নিজেই বাড়ি বানাবেন ?

সুতরাং হিন্দু সমাজের যে প্রচলিত বিশ্বাস, ব্রাহ্মণ ছাড়া অন্য কোনে বর্ণের হিন্দু বেদ বা কোনো ধর্মগ্রন্থ পাঠ করতে পারে না বা কোনো দেব-দেবীর পূজা করতে পারে না, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। যে কোনো হিন্দুর যেমন যে কোনো ধর্মগ্রন্থ অধ্যয়নের অধিকার আছে, তেমনি বিধিসম্মতভাবে পূজা পাঠ শিখে পূজা করারও অধিকার আছে। আমি আশা করছি, এই বিষয়টি ঐ মুসলমানকে বোঝাতে না পারলেও হিন্দুদেরকে বোঝাতে পেরেছি এবং আমি সেই সাথে এই প্রত্যাশাও করবো যে, যারা এই বিষয়টি জানলেন, তারা অন্য হিন্দুদেরকে বিষয়টি জানাবেন এবং হিন্দু সমাজ থেকে এই কুসংস্কার দূর করতে সক্রিয় ভূমিকা রাখবেন।

জয় হিন্দ।

জয় শ্রী রাম । জয় শ্রী কৃষ্ণ।









মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

পয়েন্ট টু পয়েন্ট : মুসলমানদের মিথ্যাচারের দাঁত ভাঙ্গা জবাব

পয়েন্ট টু পয়েন্ট : মুসলমানদের মিথ্যাচারের দাঁত ভাঙ্গা জবাব ফটো হিসেবে এই প্রবন্ধের সাথে যেটা যুক্ত করেছি , তার জবাব দেওয়া ই আমার এই পোস্টের উদ্দেশ্য। তাই কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক: ফটোপোস্টের শুরুতেই লিখা হয়েছে , “ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কোন প্রতিমা নেই , কোন প্রতিমূর্তি নেই , কোন প্রতিকৃতি নেই , কোন রূপক নেই , কোন ফটোগ্রাফ নেই , তাঁর কোন ভাস্কর্য নেই। ” এর রেফারেন্স হিসেবে লিখা হয়েছে , “ শ্বেতাসত্র উপনিষদ , অধ্যায় ৪ , পরিচ্ছেদ ১৯ এবং যযুর্বেদ অধ্যায় ৩২ , অনুচ্ছেদ ১৯। ” এবার দেখা যাক , সত্যিই সেখানে কী লিখা আছে এবং তার প্রকৃত অনুবাদটা কী ? রেফারেন্স হিসেবে প্রথম বইয়ের নাম লিখা হয়েছে , “ শ্বেতাসত্র উপনিষদ ”, কিন্তু এর নাম প্রকৃতপক্ষে “ শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ ”, লিখেছে তো কোনো এক মুসলমান , তার কাছ থেকে আপনি আর কত শুদ্ধ বানান আশা করতে পারেন ? রেফারেন্সের বাকি অংশে লিখা হয়েছে- “ অধ্যায় ৪ , পরিচ্ছেদ ১৯ ”, অধ্যায় ৪ ঠিক থাকলেও এই উপনিষদে অনুচ্ছেদ বলে কিছু হয় না , এটি হবে আসলে শ্লোক নং ১৯। শুধু এই রেফারেন্সেই নয় , প্রতিটি রেফারেন্সেই দেখবেন কিছু না কিছ

হিন্দুদের এত দেবতা, আসলে কোনটা বড় ?

হিন্দুদের এত দেবতা , আসলে কোনটা বড় ? এবং ইসলাম নাকি সবচেয়ে প্রাচীন ধর্ম ! উপরের এই দুটো প্রসঙ্গসহ মুসলমানদের করা আরো কিছু প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে জানতে চেয়ে ছিলো Pritam Das নামের আমার এক ফেসবুক বন্ধু। শুরুতেই দেখে নিন সেই প্রসঙ্গগুলো- মুসলমানরা বলে যে , একটা হাতির মুখ মানুষের শরীরে কি করে বসানো যায় ? কী যুক্তি আছে এটার পেছনে ? আর সেইটাকে তোমরা হিন্দুরা আবার পূজাও করো! আবার সেই গনেশের একটা কলা গাছ বউও আছে। তারপর হুনুমান কী করে উড়তে পারে ? কী করে একাই একটা লংকা জ্বালিয়ে দিতে পারে ? এছাড়াও বলে যে ইসলাম নাকি পৃথিবীর প্রাচীন ধর্ম , হিন্দু ধর্ম অনেক পরে এসেছে। পৃথিবী কবে শেষ হবে তা নাকি ওদের কোরানে লেখা আছে। আর মাঝে মধ্যে প্রায় জিজ্ঞেস করে হিন্দুদের এত দেবতা , আসলে কোনটা বড় ? কোনো না কোনো তো একটা বড় দেবতা হয়েই যায়। সবাই তো এক দেবতা পূজা করে না। কেউ কেউ তো আলাদা পূজা করে , তাহলে হিন্দুদের মধ্যে দেবতা নিয়ে একতার অভাব। ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি... এবার দেখুন আমার জবাব: মুসলমানরা হিন্দুদেরকে ধর্ম বিষয়ে নানা প্রশ্ন করে বিব্রত করে , ঠিকঠাক সেই প্রশ্নগুলোর জবাব দিতে না

বেদ এ ‘‘পিতা তার মেয়ের সাথে অশ্লীলকর্মে লিপ্ত’’- =>এছাড়া মা- ছেলে দূষ্কর্ম, এমন বিশ্রি বর্ণনা যেই গ্রন্থে তা কি করে সৃষ্টিকর্তার বাণী হতে পারে ?”

“ রিগবেদ ---- অধ্যায় - ৩ , খন্ড - ৩১ , শ্লোক : ১ - ২ ‘‘ পিতা তার মেয়ের সাথে অশ্লীলকর্মে লিপ্ত ’’- => এছাড়া মা - ছেলে দূষ্কর্ম , এমন বিশ্রি বর্ণনা যেই গ্রন্থে তা কি করে সৃষ্টিকর্তার বাণী হতে পারে ?” ঠিক এই প্রশ্নটিই করেছে Md Alhaz Hosain নামের এক মুসলমান আমার এক পোস্টের কমেন্ট বক্সে। বেদ এ্রর এই বাণীতে আসলেই কী বলা হয়েছে , সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা পাবেন আমার এই পোস্টে : ফেসবুকে মুসলমানদের কমেন্ট মানেই গালাগালি , খিস্তি। এ থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার যে , মুসলমানরা যুক্তি বোঝে না। কারণ , যারা যুক্তি বোঝে তারা যুক্তি দিয়ে কথা বলে , প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করতে তাদের গালি - গালাজের প্রয়োজন হয় না। এজন্য তথ্য রেফারেন্স দিয়ে লেখার পরও যারা সেসবে নজর না দিয়ে গালাগালি করে তাদের কমন্টেকে আমি রাস্তার পাগলা কুত্তার ঘেউ ঘেউ বলেই মনে করি , তাই সেগুলোকে কোনো গুরুত্বই দিই না। কিন্তু আজকে যে কমেন্টটির উত্তর দিচ্ছি , সে বেশ ভদ্রভাবেই কথাগুলো তুলে ধরেছে ; তাই তার লেখার জবাব দিচ্ছি , যদিও পাগলা